রাঙামাটির ছয় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যেমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এবং হয়রানীর প্রতিবাদে জোটবদ্ধ আন্দোলনে নেমেছে রাঙামাটির সাংবাদিক সমাজ, বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ সাধারণ জনগণ। মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন এবং প্রতিবাদী কন্ঠে আওয়াজ তোলার মধ্যে দিয়ে প্রতিবাদের সূচনা করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ইমতিয়াজ কামাল ইমন নামের এক বখাটে যুবক রাঙামাটির মেধাবী সাংবাদিক প্রয়াত মোস্তফা কামালের ভূ-সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে কয়েক বছর ধরে তার পরিবারের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তার স্ত্রী, কন্যা এবং তার স্বজনকে নানা ভাবে হেনস্থা করে চলেছে। বখাটে ইমনের এহেন কর্মকান্ডে মোস্তফা কামালের স্ত্রী জীবনের নিরাপত্তার জন্য নিজ বাড়ি ছেড়ে দিয়ে এখন অন্যের বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছে। বখাটে ইমন এসব করেও ক্ষান্ত থাকেনি।
প্রয়াত মোস্তফা কামালের স্ত্রী বর্তমান বাংলাদেশ টেলিভিশনের রাঙামাটি প্রতিনিধি ও রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সদস্য জাহেদা বেগমের পেশাগত কাজে বাধা সৃষ্টি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেইক আইডির মাধ্যমে তার চরিত্র হনন করার লক্ষ্যে নানারকম প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে।
ইমন তার ফুফাতো বোন আয়েশা আক্তার সোনিয়া ও সোনিয়ার স্বামী ১১৯ নং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুুর রহমান ছিদ্দিকী ওরফে সাইফের ইন্দনে নোংরা খেলায় মেতে উঠেছে। এমনকি অসহায় সাংবাদিক জাহেদা বেগমের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়ানোর কারণে বখাটে ইমন রাঙামাটির ছয় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হয়রানীমূলক মামলা দায়ের করে আইন আদালতকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এসব মামলা দিয়ে মেধাবী সাংবাদিকদের হয়রানী এবং কন্ঠরোধের অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেন বক্তারা।
বক্তারা আরও বলেন, ইমনের ফুফাতো বোনের স্বামী ১১৯ নং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুুর রহমান ছিদ্দিকী ওরফে সাইফ ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাঙামাটির থানা-পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা, জনপ্রতিনিধি এমনকি আইন কর্মকর্তাদের কাছে একের পর এক নিজের পদের পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে ভিত্তিহীন মামলার মাধ্যমে সাংবাদিকদের গ্রেফতারে অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আইন কর্মকর্তা, পুলিশ এবং জনপ্রতিনিধি এবং পুলিশ কর্তাদের মোবাইলের কল রেকর্ড চেক করলে যার সত্যতা মিলবে। এই আইন কর্মকর্তা ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য নিজের পদবী ব্যবহারের মাধ্যমে ইমনকে দিয়ে নানা রকম প্রোপাগান্ডা চালিয়ে সাংবাদিক সমাজের মান-মর্যাদা ক্ষুন্ন করছেন। কিন্তু সাংবাদিক সমাজ এসব অপকর্ম আর সহ্য করবে না। আর চুপ থাকবে না। সকলের সহযোগিতায় এসব ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ খুলে দেওয়া হবে খুব শিগগরই।
পাশাপাশি রাঙামাটির ছয় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং তাদের জীবনের নিরাপত্তার দাবিতে রাঙামাটির সর্বস্থরের জনগণ একাট্টা থাকবেন এবং এসব ভিত্তিহীন মামলা প্রত্যাহার না করলে আরও কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে বলে যোগ করেন বক্তারা ।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় বক্তৃতা করেন- পার্বত্যাঞ্চলের চারণ সাংবাদিক, রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক গিরিদর্র্পণ পত্রিকার সম্পাদক একেএম মকসুদ আহম্মেদ।
রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল এর সভাপতিত্বে এবং ক্লাবের সদস্য সাংবাদিক মঈন উদ্দীন বাপ্পীর সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ শিক্ষক পরিষদের সভাপতি মঈন উদ্দিন ভুঁইয়া, রাঙামাটি সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যান নাসরিন ইসলাম, রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আল হক, ক্লাবের সিনিয়র সদস্য ও জেলার প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মাহবুব আহমেদ, রাঙামাটি সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মিজানুর রহমান, সাবেক শ্রমিক লীগ নেতা কাজী জালোয়া, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা প্রতিনিধি ও রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সদস্য মনসুর আহমেদ, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি ও রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সদস্য মো. দীপ্ত হান্নান, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক হাবিব আজম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মোমিন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জয় বাংলা ইয়ুথ খ্যাতিপ্রাপ্ত ‘জীবন’ এর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক সাজিদ বিন জাহিদ মিকিসহ রাঙামাটির বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ। এসময় রাঙামাটির পৌরসভার প্যানেল মেয়র হেলাল উদ্দীনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও পেশাজীবি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের এই আন্দোলনে অংশ নেন।