অসীম রায় (অশ্বিনী) বান্দরবান:
পাহাড়ে জুমে চাষ করা মরিচটি বিভিন্ন নামে পরিচিত। কেউ বলেন ধানি মরিচ, জুমের মরিচ, জুম্ম মরিচ, ধান্য মরিচ, চিকন মরিচ নামেই চেনে। মরিচটি ছোট হলেও ঝাল কিন্তু প্রচুর। অতি বৃষ্টির কারণে মরিচের ফলন এবার কম হয়েছে। তাই অন্যান্য বছরের তুলনায় জুমে উৎপাদিত কাঁচা মরিচের দাম অনেক বেশি। গত বছর বান্দরবান স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি ৩৬০ থেকে ৪৮০ টাকা হয়েছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর বান্দরবান ১০ হেক্টর পরিমাণ জুম পাহাড়ে ধান্য মরিচের চাষ হয়েছিল। শুকনা মরিচ উৎপাদন হয়েছে ১০ টন ২০০ কেজি। চলতি বছর ১২ হেক্টর পরিমাণ জুম পাহাড়ে মরিচের চাষ হয়েছে। তবে অতি বৃষ্টির কারণে এ বছর ফলন কম।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে মাত্র পাঁচজন পাহাড়ি জুমে উৎপাদিত কাঁচা ধান্য মরিচ নিয়ে এসেছেন। জুমে উৎপাদিত ২৫০ গ্রাম মরিচ বিক্রি করছেন ৯০ টাকা। প্রতি কেজি ৩৬০ টাকা। দশ নম্বর এলাকা থেকে জুমে উৎপাদিত মরিচ বিক্রির জন্য আসা শরমিতা চাকমা (৪৮) বললেন, ‘বেশি বৃষ্টি হওয়ায় জুমের মরিচের ফুল ঝরে যাচ্ছে।
তাই গাছে মরিচ কম ধরছে। চিন্মুক (১২ মাইল) এলাকার আসাং ম্রো জানান, তাঁর ২০০ গাছ রয়েছে। গত দুই মাস আগে কেজি বিক্রি করেছেন প্রতি কেজি ৪৮০ টাকা দরে। আর এ সাড়ে তিন কেজি বিক্রি করেছেন প্রতি কেজি ৩৬০ টাকা দরে। ২ মাস আগে এই দাম ছিল এখন কমে গেছে।
রোয়াংছড়ি এলাকার শ্যামলা চাকমা (৩৬) ও দুই টিলা এলাকার পূর্ণশোভা চাকমা (৩৯) জানান, গত বছর তাঁরা প্রতি কেজি মরিচ ২৬০ টাকায় বিক্রি করেছেন।
পাইকারি মরিচ বিক্রেতা বান্দরবান বাজারের আড়তদার -মো: সামছুল ইসলাম বলেন সপ্তাহে ৪ দিন চট্টগ্রাম শহরে ৪০০ কেজি মতো পাঠানো হয়। তিনি জানান ৮০ টাকা দরে মরিচ কিনেছেন।
এখন বিক্রি করছেন প্রতি কেজি১৯০ ×৪০০= ৭৬০০০/ গড়ে ৪×৪০০= ১৬০০ কেজি। যার দাম আছে তিনলক্ষ চার হাজার টাকা। বাজারে মরিচ কিনতে আসা -সুমেন্দু বড়ুয়া বললেন, ‘জুমের মরিচের ঝাল বেশি আর খেতেও সুস্বাদু।’
বান্দরবান ইমানুয়েল হাসপাতালের ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের পরামর্শক ডাঃ জ্যোতিময় মুরুং বলেন, জুমে উৎপাদিত কাঁচা মরিচের খাদ্যগুণ রয়েছে। কাঁচা মরিচে ভিটামিন সি থাকে। এ ছাড়া মরিচে ভিটামিন এ, বি-১, বি-২, ভিটামিন কে রয়েছে। মরিচে বিদ্যমান ক্যাপেসিয়াসিন শরীরে উচ্চ রক্তচাপ কমানো, মাথা, হাঁটু, কোমরব্যথা ও বাত রোগ উপশম করে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায় জুমের মরিচ বৈশাখ মাসে রোপণ করে আষাঢ় থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়।