ঈদ পরবর্তী ছুটি এবং ঈদের তৃতীয় দিনেও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে পাহাড় কন্যা নাইক্ষ্যংছড়ি উপবন পর্যটন কেন্দ্র। অন্যান্য বছরের ছেয়ে এই বৎসর ঈদে সবচেয়ে বেশি পর্যটকদের ঢল নেমেছে পাহাড়ি কন্যা খ্যাত দৃষ্টি নন্দন এ পর্যটন কেন্দ্রে। বিশেষ করে ঈদের দিন, ঈদের পরের দিন ও আজ তৃতীয় দিনেও পর্যটকদের ভিড়ে ঠাঁই নাই। কেউ পাহাড়ের দৃষ্টি নন্দন স্পটে কেউ ঝুলন্ত ব্রিজে আবার কেউ ঘুরছে লেকের শীতল পানিতে কায়াকিং বোটে ভ্রমণ করে নিজেদেরকে প্রকৃতির সাথে বিলীন করে দিচ্ছে। আবার এমন দৃশ্য নিজেদের বহনকৃত স্মার্ট ফোনে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করছেন অনেকেই।
এদিকে, পর্যটকদের নিরাপত্তায় সতর্ক রয়েছে উপজেলা প্রশাসন। পর্যটন কেন্দ্র প্রবেশ মুখে ব্যবসায়ী সুলতান আহমদ কালু জানান, উপজেলা প্রশাসনের আন্তরিকতায় দর্শনীয় স্থানগুলো আকর্ষণীয় হওয়ায় এই ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের চাপ বেড়েছে তিন গুণ।
সোমবার (২৪ এপ্রিল) বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়। বিভিন্ন পরিবার পরিজন, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আশা পর্যটকরা ব্যস্ত সময় পার করছে। ঢাকা থেকে আসা নাইম হোসেন, শারমিন দম্পতি বলেন, ঈদের ছুটিতে আমরা পরিবারের ১৫ জন কক্সবাজার থেকে ট্যুরিজম এর মাধ্যমে এখানে এসে মনোমুগ্ধকর দৃশ্য ও প্রশাসনের নিরাপত্তা আমাদের মুগ্ধ করেছেন। বিশেষ করে লেকে ওয়াচ টাওয়ারটি যে কারোই দৃষ্টি কাড়ে। কুমিল্লা থেকে আগত পর্যটক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমরা সকাল ৮টায় কক্সবাজার কলাতলী থেকে মাত্র ৫০ মিনিটে এখানে আসি। এই প্রথম পাহাড়ি এলাকা দেখে প্রথমে ভয় পেলেও এখানকার পরিবেশ দেখে মনে হয়েছে দেশকে জানতে হলে এই পাহাড়ের দেশে আসতে হবে।
মিরপুর থেকে ঈদের ছুটিতে পরিবার পরিজন নিয়ে এসেছেন মোহাম্মদ ইবরাহীম নামের এক ব্যবসায়ী জানান, আমরা প্রতি বৎসর ৩ দিনের জন্য কক্সবাজার আসি কিন্তু এখানে এসে এখানকার মানুষের মনোমুগ্ধকর আচরণে আমরা এখানে আরো একদিন থাকবো। তবে পর্যটন লেকের উপরে গাড়ি পার্কিং এর বড় কোন ব্যবস্থা না থাকায় হিমসিম খেতে হয়, তিনি পর্যটকদের সুবিধার্থে গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্তা করার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান। লেক স্পটে দায়িত্বে নিয়োজিত মোঃ শাহিন জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমেন শর্মা স্যারের আন্তরিকতা ও নতুন কিছু কায়াকিং বোটে এ লেকে আকর্ষণ বেড়েছে। তাই ঈদের দিন থেকে পর্যটকের চাপ বেশি, যা সামলাতে নিয়োজিত সকলেই প্রস্তুত। লেকের ব্যবসায়ী হান্নান বলেন আমাদের এখানের পরিবেশ ভালো হওয়ায় পুরু বৎসর পর্যটক থাকে, তবে ঈদের মৌসুমে ৫/৭ দিন ভীড় থাকে, আমরাও ন্যায্য মূল্যে পর্যটকদের সেবা দি।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমেন শর্মা জানান, দেশে মহামারী পরিস্থিতি কাটিয়ে এই বৎসর মানুষ আনন্দে ঈদ উদযাপন করছে। আর আমাদের পর্যটন স্পটগুলো বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত থেকে নিকটে হওয়ায় পর্যটক বেড়েছে। তিনি আরও জানান গত তিন দিন প্রায় ১৫ হাজারের অধিক পর্যটকের সমাগম হয়েছে। তাই পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য লেকে আনসারসহ সাদা পোশাকে প্রশাসনিক লোক রয়েছে, এবং আমি প্রতি সকাল বিকাল গিয়ে দেখছি যেন বাহির থেকে ঘুরতে এসে কোন পর্যটক হয়রানির শিকার না হয়।
পার্বত্যকন্ঠ নিউজ/এমএস