রঙ-বেরঙের ফেস্টুন, ঐতিহ্যবাহী পোশাক আর নাচ-গানের মাধুর্যে মাতোয়ারা বান্দরবান। মারমা জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় উৎসব ‘মাহাঃ সাংগ্রাই পোয়েঃ’ উদযাপন শুরু হয়েছে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে।
১৩ ই এপ্রিল রোববার সকালে বান্দরবান শহরের রাজার মাঠ থেকে বের হয় সাংগ্রাইং বর্ণাঢ্য র্যালি। আয়োজনে ছিল মাহাঃ সাংগ্রাই পোয়েঃ উৎসব উদযাপন পরিষদ। শোভাযাত্রায় অংশ নেন জেলার বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর হাজারও মানুষ, যারা নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে, মাতৃভাষায় নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে অংশ নেন এই আনন্দ মিছিলে।
শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শেষ হয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটে (কেএসআই)। সেখানে আয়োজিত হয় বয়স্ক পূজা অনুষ্ঠান।
জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি রাজার মাঠে বেলুন উড়িয়ে এই শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, বান্দরবানসহ পার্বত্য তিন জেলার ১১টি জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য বাংলাদেশের সামগ্রিক সংস্কৃতিকে আরও সমৃদ্ধ করেছে। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে জাতিগত ঐক্য ও সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ঢাকায় আয়োজিত আনন্দ শোভাযাত্রায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীদের উপস্থিতি এবার বিশেষ গুরুত্ব পাবে। বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক ঐক্যের জন্য আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।
উৎসব উদযাপন পরিষদ জানিয়েছে, সামাজিক ও ধর্মীয় নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে এবারও আট দিনব্যাপী উদযাপন করা হবে মারমা নববর্ষ মাহাঃ সাংগ্রাই পোয়েঃ।
আগামীকাল থেকে রাজার মাঠে শুরু হবে চার দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী লোকজ মেলা। তবে এই উৎসবের প্রধান আকর্ষণ হলো পানি উৎসব বা জলকেলি। এতে একে অপরকে পানি ছিটিয়ে পুরাতন বছরের গ্লানি ধুয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়ার রীতি রয়েছে।

আয়োজকরা আরও জানান, নতুন বছরকে ঘিরে তারা নানান কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। উৎসবে যোগ দিতে পেরে আনন্দিত সব সম্প্রদায়ের মানুষ। আগামী সাত দিন পার্বত্য জেলা বান্দরবান উৎসবের নগরীতে পরিণত হবে বলেও তারা জানান।