• শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩০ অপরাহ্ন
শিরোনাম
বেড়াতে আসুন রূপের রাণী বান্দরবানে লামায় কার্প জাতীয় মাছের মিশ্রচাষ বিষয়ক প্রশিক্ষণ ইতিহাদ এর উদ্যোগে লামায় জাতীয় মেধাবৃত্তি পরীক্ষা-২০২৪ অনুষ্ঠিত সরকারি পুকুরে মাছ শিকারের অভিযোগে লক্ষ টাকা জরিমানা করল উপজেলা প্রশাসন আগামীকাল শনিবার কাপ্তাইয়ে অনুষ্ঠিত হবে জোন কমাণ্ডার’স স্কলারশিপ: অংশ নিচ্ছেন ৫১২ জন শিক্ষার্থী খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাব’র অন্তবর্তীকালীন কমিটির সাধারণ সভা ও পার্বত্যাঞ্চলের গুণী সাংবাদিকদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত নদীর পাড়ে তামাক চাষ বন্ধে বিএটিবি’র কৃষক সমাবেশ আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের দাবিতে মানিকছড়িতে ইউপিডিএফের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ বান্দরবানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বই ও শিক্ষা উপকরণ উপহার প্রদান চাঁদার টাকা না দিলে হামলা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে -সন্ত্রাসী রকি গ্রুপ ১ যুগ পর মহালছড়ি গণতান্তিক উপায়ে বাজার ব্যবসায়ী কমিটি গঠন ওলামা বাজার মাদ্রাসার বিরুদ্ধে ফেসবুকে অপপ্রচারের প্রতিবাদে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সংবাদ সম্মেলন

রাঙামাটিতে অভিনব কায়দায় অবৈধভাবে পাচারকালে বিপুল পরিমাণ কাঠ আটক করেছে সেনাবাহিনী

রাঙ্গামাটি প্রতিবেদক / ৫৩৬ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ১৩ মে, ২০২১

রাঙামাটিতে অভিনব কায়দায় ট্রাকের বডির ভিতরে (ট্রাকের বডি বক্স সিস্টেম) অবৈধভাবে পাচারকালে বিপুল পরিমাণ কাঠ আটক করেছে সেনাবাহিনী।

বুধবার (১৩ মে ২০) ভোর রাত ৪.৩০মিনিটে চম্পাতলী বটতল এলাকায় ২০ বীর রাঙ্গামাটি সদর জোনের অধিনায়ক (জোন কমান্ডার)
লে:কর্ণেল রফিকুল ইসলাম-পিএসসি এর নেতৃত্বে ঘাগড়া বাজার আর্মি ক্যাম্পের চেকপোস্টের দায়িত্বরত সেনা সদস্যরা এ বিপুল পরিমাণ কাঠ আটক করে।

সদর সেনা জোনের জানা যায়, রাঙ্গামাটি থেকে চট্টগ্রাম গামী ট্রাক, ঢাকা মেট্রো-ট- ২২৩৮২২ সিগন্যাল দিলে ট্রাক টি না থেমে চলে যায়,সাথে সাথে ক্যাম্পে অবগত করলে অস্ত্র ও জনবল সহ একটি সি টাইপ টহল বাহির হয়। টহল দলটি চেরাই কাঠ বোঝাই ট্রাকটিকে ক্যাম্প থেকে আনুমানিক ১ কিঃ মিঃ পশ্চিম-দক্ষিণ কোনে চম্পাতলী বটতল এলাকায় চলে যাওয়ার সময় পিছু নিয়ে আটক করা হয়। কাঠ আটকের সময় গাড়ির ড্রাইবার পলিয়ে যায়। কাঠের মালিক কিংবা কোন প্রতিনিধি গাড়িতে ছিলো না। আটক কৃত চেরাই কাঠ ট্রাকটি রাঙ্গামাটি জোন সদর প্রশিক্ষণ মাঠে নিয়ে আসা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পরবর্তীতে কাঠভর্তি ট্রাকটি জব্দ করে রাঙামাটিস্থ পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের কাছে হস্তান্তর করেন সদর সেনা জোনের জোন কমান্ডার লে:কর্ণেল রফিকুল ইসলাম-পিএসসি।

ট্রাক থেকে কাঠগুলো নামাতে গিয়ে দেখা গেছে, ট্রাকের বডির নিচের অংশে বিশেষ বাক্স রয়েছে। গাড়ির উপরে খালি থাকলেও গাড়ির বডির ভিতরে ছিলো বিপুল পরিমাণ চিড়াই কাঠ। যা আনুমানিক ৩০০ঘনফুট। বনবিভাগ সূত্রে যার বাজার মূল্য প্রায় ৬ লাখ টাকা।

নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র জানিয়েছে, ট্রাকের বডির ভিতরে বাক্স সিস্টেম বডি নির্মাণ করা হয় কাঠসহ বিভিন্ন অবৈধ মালামাল পরিবহনের জন্য। জব্দকৃত ট্রাকটির কোনো কাগজপত্র এখনো পাওয়া যায়নি। সূত্রমতে জানা যায়, রাঙামাটি শহরের কাঠ ব্যবসায়ী শওকত আকবর, আমির হোসেন, মোঃ মান্নান, কুতুব মিয়াসহ আরো বেশ কয়েকজন এই অবৈধ চিড়াই ও গোল কাঠ পাচারের সাথে জড়িত বলে জানতে পেরেছে গোয়েন্দা তথ্যা অনুসন্ধানী সামরিক সংস্থাগুলো। এসব ব্যবসায়ীদের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিকদলীয় পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যোগাযোগ রয়েছে বলে জানতে পেরেছে সামরিক নিরাপত্তাবাহিনী।

গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, অবৈধ কাঠ ব্যবসার সিন্ডিকেটের সাথে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন কাঠ ব্যবসায়ী ও বন বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তার সহযোগিতায় অবৈধ চিড়াই ও গোল কাঠ রাঙামাটি থেকে অভিনব কায়দায় বিভিন্ন সময় পাচার করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় উক্ত সিন্ডকেটের সদস্যরা গতকাল ভোর রাতে ট্রাকের নিচে ভিতরের বডিতে করে অবৈধ চিড়াই কাঠ পাচারের সময় ঘাগড়া বাজার আর্মি ক্যাম্পের চেকপোস্টের দায়িত্বরত সেনা সদস্যরা এ বিপুল পরিমাণ কাঠ আটক করে। প্রশাসন ও বনবিভাগের ধারণা, আটকৃত কাঠগুলোর মালিক তারাই যাদের কাঠ অতীতেও রাঙামাটিতে সম্প্রতি সময়ে অবৈধভাবে পাচারকালে আটক করা হয়েছিল।

গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আরো জানা যায়, এই অবৈধ কাঠ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটটি দীর্ঘদিন ধরে যাবৎ কাঠ ব্যবসায়ী ও বন বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তার সহযোগিতায় কুতুকছড়ি, ঘিলাছড়ি, মহালছড়ি, এবং রাঙামাটি পৌর এলাকা থেকে অভিনব কায়দায় বিভিন্ন সময় পাচার করে আসছিলো। এসকল অবৈভাবে কাঠ পাচারকারীদের সকল তথ্য প্রশাসনের কাছে রয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের তদন্ত সাপেক্ষে প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানা যায়।

অভিযোগ রয়েছে, রাঙামাটি থেকে প্রতিদিনি বিপুল পরিমাণ কাঠ নানা কায়দায় পাচার হচ্ছে। এর আগেও রাঙামাটির বিভিন্ন চেক পোষ্টে অবৈভাবে তেলের গাড়িতে করে কাঠ পাচারকালে আটক করা হয়েছিলো। এসব কাঠ পাচার কাজে বন বিভাগের কর্মকর্তারাও জড়িত। এর ফলে রাঙামাটির বনাঞ্চল যেমন উজাড় হচ্ছে, তেমনি সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

উল্লেখ্য: বন বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তার সহযোগিতায় রাঙামাটি দিয়ে বৈধ পারমিটের আড়ালে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ কাঠ অবৈধভাবে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এতে করে অসাধু বন কর্মকর্তা ও চোরাই কাঠ পাচারকারী আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে গেলেও সাজেকসহ পার্বত্যাঞ্চলের রিজার্ভ ফরেষ্টগুলো এখন প্রায় অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার পথে। বৈধ কাঠ পরিবহনের অন্তারালে অবৈধ কাঠ পাচারে সব চেয়ে বেশী লাভবান হচ্ছে একটি চিহ্নিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। যারা পাহাড়ে বনজ সম্পদ পাচার থেকে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ চাঁদা আদায় করে তা দিয়ে অস্ত্র কিনে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ