বেতন-ভাতা নাই, টিউশনিও বন্ধ
লংগদুতে বেসরকারি ও কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীদের মানবেতর জীবন যাপন।
বিশ্ব মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশজুরে বন্ধ রয়েছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বন্ধ রয়েছে বেসরকারি উদ্যেগে পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও । রাঙামাটির লংগদু উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রয়োজনে গড়ে উঠেছে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এসকল বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা আর্থিক সংকট নিয়ে কঠিন সময় পার করছেন। প্রায় দেড় বছরের বেশি সময় ধরে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মচারীগণ ।
লংগদু উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, লংগদুতে বেসরকারি প্রাইমারী স্কুল রয়েছে ১৯ টি । এসব স্কুলের দুই শতাধিক শিক্ষক কর্মচারীর রয়েছেন ।
লংগদু বিদ্যানিকেতন স্কুলের প্রধান শিক্ষক, স্বপন চাকমা বলেন, করোনা সংক্রমণ এড়াতে সরকারি নির্দেশনায় গত ১৭ মার্চ ২০২০ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাসিক বেতনটাও নেওয়া যায়নি। এছাড়া বেশির ভাগ স্কুলের বিদ্যুৎ বিলও দেওয়া হয়নি। বিদ্যালয়ের ফান্ডের জমানো টাকাও শেষ। তাই প্রায় দেড় বছর যাবত ১০ জন শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন বন্ধ। লজ্জায় কাউকে বলতেও পারছিন না। ফলে স্কুলগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীরা করোনাকালে মহাকষ্টে আছেন। অন্যদিকে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক সকল কর্মসুচী বাস্তবায়ন করে আসছি। সরকারি বিদ্যালয়গুলো কর্মসুচীর প্রেক্ষিতে বরাদ্দ পেলেও আমরা তা পাইনা।
সর্দার আহমদ আলী মাস্টার স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিক মামুন বলেন, শিক্ষার্থীদের বেতনেই বেতন পান এসব স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীরা। স্কুল বন্ধ থাকার ফলে চরম সঙ্কটে রয়েছেন এসব স্কুল শিক্ষক-কর্মচারীরা। সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে সরকারের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
রাবেতা মডেল রেজিঃ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আনোয়ার হোসাইন বলেন আমাদের বিদ্যালয়টি অত্র উপজেলায় প্রতিষ্ঠার পরে থেকে শিক্ষা-সাংস্কৃতিক, ক্রিড়া সহ সকল ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্বের স্থান ধরে রেখেছে। বিল্যালয়টি শিক্ষার্থীদের বেতন দিয়েই শিক্ষক -কর্মচারীদের বেতন দিতে হয়ে। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে বিদ্যালয় বদ্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের বেতন আদায় করা যাচ্ছেনা। যদিও কমিটি কয়েক মাস ঋণ করে বেতন দিয়েছেন। কিন্ত লম্বা সময় বন্ধ থাকার কারনে তাদের পক্ষে ও বেতন পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছেনা। শিক্ষকরা কোথাও গিয়ে কাজও করতে পারছেনা আর তাদের খোজ খবরও কেউ নিচ্ছেনা। ফলে আমরা এখন চরম অর্থ সংকটে মানবেতর জীবন-যাপন করছি। আমি সরকার এবং স্থানীয় প্রসাশন ও জনপ্রিতিনিধিদের নিকট আবেদন করবো এসব বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোকে টিকিয়ে রাখতে হলে, শিক্ষক-কর্মচারীদের দিকে সু-দৃষ্টি দেওয়ার জন্য।
এ বিষয়ে লংগদু উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইমাম হোসনে এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বেসরকারী প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে আমাদের কোন নির্দেশনা নাই।