পৈতৃক ভিটা থেকে উচ্ছেদ করতে রাঙ্গামাটি শহরে হামলায় প্রতিবন্ধীসহ আহত হয়েছে তিনজন। আহত তিনজনই আপন সহোদর। হামলাকারীরা আহতদের ভাই ও ভ্রাতুষ্পুত্র। এ ঘটনায় একজন রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। বাকি দুজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। পৈতৃক বসত ভিটা থেকে উচ্ছেদ করার লক্ষ্যে এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগে জানা যায়।
রাঙ্গামাটি শহরের বেকারী লাইন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
হামলার বিচার চেয়ে রাঙ্গামাটি জেলাপ্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন প্রতিবন্ধী বুদু মিয়া(৬৫)। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, হামলাকারী শামসুল আলম ওরফে টাইগার শামসু, তার স্ত্রী রওশন আরা, ছেলে সাদ্দাম ও সাজ্জাদ কোরবানী ঈদের দিন (বুধবার) সকালে পৈতৃক ভিটা থেকে উচ্ছেদ করার উদ্দেশ্য প্রতিবন্ধী বুদু মিয়া ও তার অপর দুই ভাইকে ধারালো দা চুরি ও কাঠ দিয়ে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। পরে এলাকাবাসীর হস্তক্ষেপে তাদের উদ্ধার করে রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। হামলায় বুদু মিয়ার ছোট ভাই শফি মারাত্মক আহত হয় এবং তার শরীরে বেশ কয়েকটি স্থানে মারাত্মক জখম হয়। এলাকাবাসী জানায়, প্রতিবন্ধী বুদু মিয়া, তার ছোট ভাই শফি ও আবুল কালাম আজাদ তিন জনই অবিবাহিত। পৈতৃক ভিটায় তারা নিজেদের মত করে বসবাস করে। তাদেরকে উচ্ছেদ করে একাই জায়গা ভোগ দখল করার জন্য টাইগার শামসু ও তার ছেলেরা বারবার হামলা করে তিন ভাইয়ের উপর। একাধিকবার শালিসে বৈঠকেও মীমাংসা করা হয়। কিন্তু বারবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটায় টাইগার শামসু ও তার ছেলেরা। শামসুর ছেলে সাজ্জাদ পেশাদার চোর এবং তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগও রয়েছে। ঘটনার কয়েকদিন আগে সে শফির পনের হাজার টাকা ও তার মায়ের স্বর্ণালংকার চুরি করেছে বলে অভিযোগ করেন আহত শফি।
প্রতিবন্ধী বুদু মিয়ার ভাতিজা মোঃ আলমগীর বলেন, আমার দাদার সম্পত্তির জের ধরে শামসুল আলম, তার ছেলে সাজ্জাদ হোসেন ও তার স্ত্রী রওশন আরা বারবার এই প্রতিবন্ধীকেসহ আমাদেরকে বিভিন্ন সময়ে অত্যাচার নির্যাতন করে আসছে। পূর্বের ন্যায় ঈদের দিনও ওদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছিনা আমরা। জায়গা জমি জোর করে ভোগ দখল করার জন্য বারবার তারা এরকম হামলা চালায়। এব্যাপারে ন্যায় বিচার চেয়ে আমার প্রতিবন্ধী চাচা বুধু মিয়া জেলা প্রশাসক বরাবরে রবিবার (২৫জুলাই ২০২১) লিখিত অভিযোগ করেছেন। শামসুল আলম ও তার ছেলেদের অন্যায় অত্যাচারের ব্যাপারে এলাকার লোকজন অবগত আছেন। এছাড়াও শামসুল আলমের ছেলেরা এলাকায় চুরিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত রয়েছে।
এ ব্যাপারে কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কবির হোসেন জানান, দুই পক্ষই অভিযোগ করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
জেলা প্রশাসন মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, রির্জাভ বাজারে একজন প্রতিবন্ধীকে মারধর করেছে বলে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে তা খতিয়ে দেখা হবে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে নিরপেক্ষ তদন্ত করা হবে। আশা করি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ন্যায় বিচার পাবেন।
অভিযুক্ত মোঃ শামসুল আলমের মুঠোফোনে (০১৬১৭৯৩৫০০০) বারবার ফোন করা হলে সে ফোন রিসিভ করছেনা।