মোঃ জুবাইরুল ইসলাম, চকরিয়া প্রতিনিধিঃ
কক্সবাজার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক এলাকা সংলগ্ন লামার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে চলছে সেলু মেশিন বসিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন ও চকরিয়ার ডুলাহাজারায় ঘেরা-বেড়া দিয়ে চলছে বনভূমির অবৈধ দখল। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এমনই চিত্র। কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা পাগলিরবীল এলাকায় ঘেরাবেড়া দিয়ে বনভূমি দখল করা হচ্ছে। বনাঞ্চল ও পরিবেশের ক্ষয়ক্ষতির দিক বিবেচনা করে উচ্চ আদালতের নির্দেশে এসব এলাকায় ইজারা বন্ধ রয়েছে বিগত বছর দু’য়েক আগে থেকে। বনবিভাগ ও প্রশাসনের একাধিক অভিযানে পাগলিরবীল পয়েন্টের পূর্বে উত্তোলন করা বালু সমূহের একটি অংশ প্রতিস্থাপন করেছে। অবশিষ্ট বালু সম্প্রতি গোপনে পাচার করে যাচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালী একাধিক সিন্ডিকেট। সর্বশেষ গত ৩১ আগস্ট প্রশাসন ও বনবিভাগের অভিযানে ডাম্পার চলাচলের পথে প্রতিবন্ধকতা দেয়া হয়। কিন্তু জড়িতরা কোন কিছুকেই তোয়াক্কা না করে পাগলিরবীল পয়েন্টে চালাচ্ছে বনভূমি দখল। সরকারি এসব বনভূমির ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রতিবেদন করতে গেলে গণমাধ্যম কর্মীদের হুমকিধামকি দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের ডুলাহাজারা বনবিট আওতাধীন এই বনভূমিতে ঘেরাবেড়া দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে অবৈধ স্থাপনা। অদূরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক এলাকা সংলগ্ন ফকিরা খোলায় চলছে সেলু মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। কিছুদিন আগ পর্যন্ত দিবা-রাত্রি এই কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসলেও সম্প্রতি নিয়ম পাল্টে নিয়েছে জড়িতরা। বর্তমানে সেখানে সকাল থেকে শুরু হয় ডাম্পার যোগে বালু পাচার এবং সন্ধ্যার পর থেকে সারারাত ধরে চলে বালু উত্তোলনের সেলু মেশিন। বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক সংলগ্ন ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বগাইছড়ি এলাকাতেও একই অভিযোগ রয়েছে। পাগলিরবীলের বনভূমি দখল ও বালু উত্তোলনের প্রতিযোগিতা নিয়ে ইতোমধ্যে দু’পক্ষের মাঝে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি চলছে। যেকোনো সময় রক্তক্ষয়ী ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে বলেও এলাকাবাসী সুত্রে জানায়।
অভিযুক্ত ঘেরাবেড়া দিয়ে বনভূমি দখল ও সেলু মেশিনে বালু উত্তোলনে নেতৃত্ব দাতা ডুলাহাজারা ইউনিয়নের বালুরচর এলাকার বাহার উল্লাহর পুত্র সাইফুল ইসলাম পুতু অস্বীকার করে জানান, যে সাংবাদিক তথ্য দিয়েছে তার থেকে জিজ্ঞেস করেন।আমি কোনো বালু তুলছিনা।
ফকিরাখোলা এলাকার বনভূমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে ফাসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হোছাইন চৌধুরী জানান, আপাতত বন্ধ। এখানে বালু উত্তোলন গত এক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে।
এ ব্যাপারে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ইনচার্জ মাজাহারুল ইসলাম জানান, এ প্রকৃতি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে আরও কয়েকবছর আগে।আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে এবং প্রায় ৮৩/৮৫ টি মেশিন জব্দ করা হয়েছিলো।এরপর গত এক বছর ধরে এখানে বালু উত্তোলন বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মেহরাজ উদ্দিন জানান,এটা আমার আওতাধীন না হওয়ায় বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ানকে মুঠোফোনে পাওয়া না যাওয়ায় কথা বলা যায়নি।