মহেশখালীতে ধান ফসলের রোগ বালাই দমনে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে “অতন্দ্র জরিপ” পদ্ধতি। রোগ ও পোকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষায় এই “অতন্দ্র জরিপ” পদ্ধতি প্রয়োগ করা হচ্ছে।
“অতন্দ্র জরিপ” বলতে, ফসলের নির্বাচিত ক্ষেতে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর পর্যবেক্ষন করে বালাইয়ের আক্রমন ও ক্ষতি সম্পর্কিত তথ্যাদি নিয়মিতভাবে সংগ্রহ করা এবং সেসব তথ্যাদির ওপর ভিত্তি করে বালাই দমন সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত নেওয়া।
অতন্দ্র জরিপের ফলে মাঠে কি ধরনের সমস্যা রয়েছে- তা নির্ধারণ পূর্বক কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। অতন্দ্র জরিপ পদ্ধতিতে ফসলের রোগবালাই ও পোকা মাকড়, পানির অবস্থা, আবহওয়া ইত্যাদি বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয়।
মহেশখালী উপজেলায় বিভিন্ন কৃষি ব্লকে এ “অতন্দ্র জরিপ” পরিচালনা করা হচ্ছে।
সপ্তাহে ১ দিন করে সপ্তাহ ব্যাপী বিভিন্ন ব্লকে “অতন্দ্র জরিপ” পরিচালনা করা হয়।
জরিপকৃত অতন্দ্র জরিপের প্লটের আয়তন হতে হয়, ৫০ শতক। মাঠের আয়তন ২০ হেক্টর। নির্ধারিত প্লটের ৪, ৭, ১০, ১৪, ১৯ নাম্বর গুছিতে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়।
এই পদ্ধতিতে প্রতি ৫০ শতক জমিতে কোনাকুনি ভাবে ধান বা অন্য ফসলের ২০টি করে গোছা নির্বাচন করা হয়। প্রতি গোছায় ক্ষতিকর ও উপকারী পোকা এবং পাতার সংখ্যা গণনা করে তা লিপিবদ্ধ করে রাখা হয়।
অতন্দ্র জরিপের মাধ্যমে রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার আগেই সতর্ক হতে পারছেন চাষীরা। সেই সাথে পোকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষা করাও সম্ভব হচ্ছে। ফলে দিন দিন এই পদ্ধতি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এক্ষেত্রে কৃষকরাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। ফলে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে কৃষকরা।
মহেশখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ নাসিরুল আলম বলেন, অতন্দ্র জরিপ নিয়ে আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছি। রোগ-বালাই থেকে ফসল রক্ষায় অতন্দ্র জরিপ খুবই কার্যকর পদ্ধতি। এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমে আসবে। ফসলে রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার আগেই অতন্দ্র জরিপের মাধ্যমে সতর্ক হতে পারবেন চাষীরা। সেই সাথে পোকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষা করাও সম্ভব হবে। তাই অতন্দ্র জরিপ পদ্ধতি কৃষকের নিকট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
উল্লেখ্য, ২৭ শে সেপ্টেম্বর (বুধবার) বড় মহেশখালী ইউনিয়নের জাগিরা ঘোনা ব্লকে এ অতন্দ্র জরিপ পরিচালনা করা হয়। এতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষি ডিপ্লোমা ইন্টার্নশিপ শিক্ষার্থীরা সহ কৃষকেরা উপস্থিত ছিলেন।