ইমার্জিং এশিয়া কাপের ফাইনালে নাম লেখাতে শেষ ১৫৬ বলে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের প্রয়োজন ছিল ৯৬ রান। হাতে ছিল ৭টি উইকেট। খালি চোখেই দেখা যাচ্ছিলো ম্যাচটি বাংলাদেশের হাতের মুঠোতেই ।
কিন্তু দলটি যে বাংলাদেশ। নিশ্চিত জয়ের ম্যাচ হাতছাড়া করাটাই যেন তাদের নেশা। আর এমন নজির দেখা গেছে অসংখ্যবার। ভারতের বিপক্ষে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালেও ব্যত্যয় হলো না তার।
ম্যাচটিতে বাংলাদেশকে হারতে হয়েছে ৫১ রানে। আর তাতেই অতীতের মতো আরও একবার টুর্নামেন্টের ফাইনালের কাছাকাছি গিয়েও সেটি অধরা হয়ে রইলো লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের জন্য।
ভারতের দেওয়া ২১২ রানের সহজ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১৬০ রান তুলেই থেমে যায় সৌম্য-জয়দের ইনিংসের চাকা। আর তাতেই ৫১ রানের জয় পেয়ে ফাইনাল নিশ্চিত হয় আকাশী নীলদের।
শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে তারা লড়বে পাকিস্তানের বিপক্ষে। প্রথম সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলের বিপক্ষে পাকিস্তান ‘এ’ দল জয় পেয়েছে ৬০ রানে। সেই সুবাদে আরও একটি মহারণের দেখার সুযোগ মিলছে ক্রিকেটপ্রেমীদের।
ভারতের করা ২১১ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দুর্দান্ত করে টিম টাইগার্স। পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে ৬০ রান তোলার পাশাপাশি উদ্বোধনী জুটিতে মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও তানজিদ হাসান তামিম মিলে তোলেন ৭০ রান।
ইনিংসের ১৩ তম ওভারে নাঈম ৩৮ রানে বিদায় নিলেও ব্যক্তিগত অর্ধশতক ঠিকই তুলে নেন তানজিদ হাসান। ৫১ রানে তানজিদের বিদায়ের পর অল্পতেই বিদায় নেন জাকির হাসানও। এরপর সাইফ হাসান ও জয় দুজনে মিলে শুরু করেন ইনিংস মেরামতের কাজ। তাদের জুটিতে ভর করেই জইয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে বাংলাদেশ। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে পিছু নিয়েছে বাংলাদেশের সেটি কেই বা জানতো? ২২ রান করে সাইফের বিদায়ের পর এক প্রকারে ধস নামে টাইগার শিবিরে।
উইকেটের একপ্রান্ত জয় আগলে ধরে লড়াই চালিয়ে গেলেও অপরপ্রান্ত থেকে মেলেনি সাপোর্ট। সৌম্য সরকার ও আকবর আলি এক অঙ্কের ঘরে আটকে থেকে মাঠ ছাড়লেও মাহেদী হাসানের ১২ রান কাজে দেয়নি খুব একটা। শেষ পর্যন্ত জয়ও হাল ছাড়েন ২০ রান করে। শেষ পর্যন্ত ১৬০ রান তুলে থামে বাংলাদেশের ইনিংসের চাকা।
এর আগে, কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরু থেকেই বেশ চাপে থাকে ভারত। টাইগার বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে রান বের করতে হিমশিম খাচ্ছিলো ভারতের ব্যাটাররা। ইনিংসের অষ্টম ওভারে দলীয় ২৯ রানে ভারত শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন তানজিম হাসান সাকিব।
এরপর অভিষেক শর্মা ও নিকিন জোসের ৪৬ রানের জুটি লড়াইয়ে ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছিলো বাংলাদেশকে। কিন্তু দলীয় ৭৫ রানে নিকিন মাঠ ছাড়লে শুরু হয় ভারত শিবিরে আসা যাওয়ার মিছিল।
উইকেটের এইকপ্রান্ত ইয়াশ ধুল কামড়ে ধরে রাখলেও অপর প্রান্ত থেকে তেমন একটা সাড়া মিলছিল না। শেষ পর্যন্ত তাকেও ছাড়তে হয় হাল।
ধুলের ৬৬, অভিষেকের ৩৪, সাই সুদর্শনের ২১ ও মানাভ সুথারের ২১ রানে ভর করে সবগুলো উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সামনে ২১১ রানের পুঁজি দাঁড় করাতে সক্ষম হয় ভারত।
বাংলাদেশের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন মাহেদী হাসান, তানজীম হাসান সাকিব ও রাকিবুল হাসান। একটি করে উইকেট যায় রিপন মন্ডল, সাইফ হাসান ও সৌম্য সরকারের ঝুলিতে।