• শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:৩০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
খাগড়াছড়িতে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল বেলকুচি উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে নিজকে গড়ে তুলে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে ভুমিকা রাথতে হবে -বাবুল দাস কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানে লজ্জাবতী বানর অবমুক্ত কাপ্তাই বিএসপিআই শিক্ষার্থীদের ওপর ফের হামলা, ৪ জন আহত এম কে বাঘাবাড়ী ঘি কোম্পানির উৎপাদনকারী মো: কামাল উদ্দিনের ১ বছরের কারাদণ্ড কোটা সংস্কারের দাবিতে  কাপ্তাই বিএসপিআই এ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল দিনেদুপুরে কৃষকের বাড়িতে হামলা লুটপাট রাঙামাটি সদর জোনের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ প্রদান আলীকদম সেনা জোন কর্তৃক মানবিক সহায়তা প্রদান পানছড়ি মাদ্রাসায় অব্যবস্থাপনা ও অবৈধ নিয়োগ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন খাগড়াছড়িতে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষ্যে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

লামায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের পুকুরচুরি প্রকল্প

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, নিজস্ব সংবাদদাতা, লামা / ১৮৩ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ১ নভেম্বর, ২০২২

একদিকে নির্মাণ করছে অন্যদিকে ভেঙ্গে যাচ্ছে কোটি টাকার এইচবিবি সড়ক। করা হয়নি বক্স কাটিং, সেন্ট ফিলিংয়ের নামে দিচ্ছে পাহাড়ের মাটি, সলিংয়ে ব্যবহার হচ্ছে ব্রিফফিল্ডের পাটাংয়ের ইট (নিম্নমানের ইট), মাটির উপরে করা হচ্ছে রাস্তার পাশের টু-ওয়াল, একদিকে কাজ শেষ হতেই অন্যদিকে ভেঙ্গে যাচ্ছে ও নির্মাণ কাজ শেষ না হতেই সামান্য বৃষ্টিতে কিছু কিছু স্থানে ধসে গেছে সড়ক। সরেজমিনে গেলে এমনই চিত্র দেখা গেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অধিনে নির্মাণাধীন বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের হিমছড়ি গ্রামের এইচ.বি.বি রাস্তার উন্নয়ন কাজে। স্থানীয়রা আক্ষেপ করে বলেন, এই যেন নামমাত্র কাজ দেখিয়ে কোটি টাকা ভাগাভাগির প্রক্রিয়া চলছে। এমন উন্নয়ন হওয়ার চেয়ে না হওয়াই ভালো।

উন্নয়নের নামে হরিলুট প্রকল্পের বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোস্তফা জাবেদ কায়সার বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের রাস্তার কাজের অনিয়মের বিষয়টি স্থানীয়রা জানিয়েছেন এবং ছবি-ভিডিও পেয়েছি। সংশ্লিষ্টদের সাথে এই বিষয়ে কথা বলে কাজের মান বৃদ্ধিতে উদ্যোগ নেয়া হবে।

জানা যায়, পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি’র বিশেষ নির্দেশনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অধিনে ও অর্থায়নে ২০২১-২২ অর্থসালে আওতায় প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে ২০/২৫ দিন আগে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। লামার ইয়াংছা-মানিকপুর-জিদ্দাবাজার সড়ক হতে হিমছড়ি গ্রাম অভিমুখি ১ কিলোমিটার এইচবিবি দ্বারা রাস্তা উন্নয়নের কথা রয়েছে। লামা উপজেলার ওসমান গণি বাদশা ও প্রদীপ কান্তি দাশ সিন্ডিকেট কাজটি করছে। কাজের স্টিমিট, বরাদ্দ ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে জানতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলীকে অসংখ্যবার ফোন দিলেও তিনি ফোন না ধরায় পূর্ণাঙ্গ কাজের তথ্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ ইসমাইল বলেন, আমি এলাকাবাসীর পক্ষে পার্বত্যমন্ত্রীর সুপারিশ নিয়ে প্রকল্পটির জন্য আবেদন করি। আবেদনটি গ্রহণ করে উন্নয়ন বোর্ড কাজ শুরু করে। কিন্তু কাজের মান ভালো না। রাস্তার পাশের গাইড ওয়াল মাটির দুই ফুট নিচে যাওয়ার কথা থাকলেও মাটির উপরে করা হচ্ছে টু-ওয়াল। জোরে পা দিয়ে লাথি দিলেও ভেঙ্গে যাবে এমন অবস্থা।

হিমছড়ি এলাকার আবু জাকের, মোঃ বাহাদুর, আমির হোসেন, সৈয়দ আলম বলেন, যারা কাজ করছে তারা প্রভাবশালী লোক। কাজের অনিয়মের বিষয়ে বললে আমাদের হয়রাণী করবে। বালু না দিয়ে পাহাড়ের মাটি দিচ্ছে। ইট তো না এই যেন লাল মাটি। ধরার আগেই ভেঙ্গে যাচ্ছে। একদিকে রাস্তা করছে অন্যদিকে ভেঙ্গে যাচ্ছে। তারা মন্ত্রীর লোক, অনেক ক্ষমতা তাদের। আর রাস্তা উন্নয়ন কাজে উন্নয়ন বোর্ডের ইঞ্জিনিয়ার আসে না বললেই চলে। তারা যেমন ইচ্ছে তেমন কাজ করছে।

বালু না দিয়ে পাহাড়ের মাটি দিচ্ছে কেন এমন প্রশ্ন করলে রাস্তার শ্রমিক আলী আশরাফ, জয়নাল আবেদীন, শাহজাহান ও নাজেম উদ্দিন বলেন, ঠিকাদার যেমন করতে বলছে আমরা তেমন করছি। আমাদের বলেছে পাহাড়ের মাটি দিতে।

নাম প্রকাশ না করা সত্ত্বে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের কাঁঠালছড়া, বনপুর, কুমারী বাজার, চাককাটা এলাকার অনেকে বলেন, ওসমান গণি বাদশা ও প্রদীপ কান্তি দাশ সিন্ডিকেট আমাদের এলাকায় আরো ৬/৭টি রাস্তার কাজ করেছে। দুই মাস না যেতে রাস্তা ভেঙ্গে একাকার। তাদের নিজেদের ব্রিকফিল্ড আছে। ব্রিকফিল্ডের যত নিম্নমানের ইট আছে তা রাস্তার কাজে ব্যবহার করে। কাজের ঠিকাদার ওসমান গণি বাদশা এবিষয়ে প্রতিবেদক কে বলেন, নিউজ করা দরকার নেই। আমরা কথা বলবো !

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবানের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও প্রকল্পের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ত্রিদীপ কুমার ত্রিপুরা বলেন, এখনো কাজের স্টিমিট হয়নি। পার্বত্যমন্ত্রীর বিশেষ সুপারিশে কাজটি শুরু করা হয়েছে। কাজের তথ্য নির্বাহী প্রকৌশলী থেকে নেন, আমি জানিনা। অসংখ্যবার ফোন দিলে তিনি কল রিসিভ না করায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন মোহাম্মদ ইয়াছির আরাফাত এর বক্তব্য দেয়া যায়নি।
এম/এস


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ