• বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
দীর্ঘ দেড় যুগ পর কাল মানিকছড়িতে বড়সড় আয়োজনে বিএনপি’র সম্প্রীতি সমাবেশ লংগদুতে কৃষি ব্যাংকের ভুয়া ঋণের ফাঁদে আটারকছড়া ইউনিয়নের শতাধিক পরিবার ১২ লক্ষ্য টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদে জিরুনা ত্রিপুরাকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়ার প্রতিবাদ ও সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত কাপ্তাই ব্যাটালিয়ন (৪১ বিজিবি) এর প্রশংসনীয় উদ্যোগ: দূর্গম সীমান্তবর্তী পুন্নমনিছড়া পাড়ায় স্কুল ঘর নির্মাণ রোয়াংছড়ির সহ বিভিন্ন পয়েন্টে ভ্রাম্যমান টহল কার্যক্রম পরিচালনায় -ক্যাম্প কমান্ডার মেজর ইয়াসিন মোহনা টেলিভিশনের ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করলেন ২০৩ পদাতিক ব্রিগেড ও রিজিয়ন কমান্ডার শরীফ মো. আমান হাসান আলীকদমের দুর্গম সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকালে ৮১ জন রোহিঙ্গা নাগরিক আটক মনাটেক যাদুগানালা মৎস চাষ সমবায় সমিতির আমন্ত্রণে পার্বত্য উপদেষ্টার আগমন মহালছড়িতে লামায় ডিগ্রি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ গোয়ালন্দে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও র‍্যালি অনুষ্ঠিত

লামায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের পুকুরচুরি প্রকল্প

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, নিজস্ব সংবাদদাতা, লামা / ২০৭ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ১ নভেম্বর, ২০২২

একদিকে নির্মাণ করছে অন্যদিকে ভেঙ্গে যাচ্ছে কোটি টাকার এইচবিবি সড়ক। করা হয়নি বক্স কাটিং, সেন্ট ফিলিংয়ের নামে দিচ্ছে পাহাড়ের মাটি, সলিংয়ে ব্যবহার হচ্ছে ব্রিফফিল্ডের পাটাংয়ের ইট (নিম্নমানের ইট), মাটির উপরে করা হচ্ছে রাস্তার পাশের টু-ওয়াল, একদিকে কাজ শেষ হতেই অন্যদিকে ভেঙ্গে যাচ্ছে ও নির্মাণ কাজ শেষ না হতেই সামান্য বৃষ্টিতে কিছু কিছু স্থানে ধসে গেছে সড়ক। সরেজমিনে গেলে এমনই চিত্র দেখা গেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অধিনে নির্মাণাধীন বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের হিমছড়ি গ্রামের এইচ.বি.বি রাস্তার উন্নয়ন কাজে। স্থানীয়রা আক্ষেপ করে বলেন, এই যেন নামমাত্র কাজ দেখিয়ে কোটি টাকা ভাগাভাগির প্রক্রিয়া চলছে। এমন উন্নয়ন হওয়ার চেয়ে না হওয়াই ভালো।

উন্নয়নের নামে হরিলুট প্রকল্পের বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোস্তফা জাবেদ কায়সার বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের রাস্তার কাজের অনিয়মের বিষয়টি স্থানীয়রা জানিয়েছেন এবং ছবি-ভিডিও পেয়েছি। সংশ্লিষ্টদের সাথে এই বিষয়ে কথা বলে কাজের মান বৃদ্ধিতে উদ্যোগ নেয়া হবে।

জানা যায়, পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি’র বিশেষ নির্দেশনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অধিনে ও অর্থায়নে ২০২১-২২ অর্থসালে আওতায় প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে ২০/২৫ দিন আগে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। লামার ইয়াংছা-মানিকপুর-জিদ্দাবাজার সড়ক হতে হিমছড়ি গ্রাম অভিমুখি ১ কিলোমিটার এইচবিবি দ্বারা রাস্তা উন্নয়নের কথা রয়েছে। লামা উপজেলার ওসমান গণি বাদশা ও প্রদীপ কান্তি দাশ সিন্ডিকেট কাজটি করছে। কাজের স্টিমিট, বরাদ্দ ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে জানতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলীকে অসংখ্যবার ফোন দিলেও তিনি ফোন না ধরায় পূর্ণাঙ্গ কাজের তথ্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ ইসমাইল বলেন, আমি এলাকাবাসীর পক্ষে পার্বত্যমন্ত্রীর সুপারিশ নিয়ে প্রকল্পটির জন্য আবেদন করি। আবেদনটি গ্রহণ করে উন্নয়ন বোর্ড কাজ শুরু করে। কিন্তু কাজের মান ভালো না। রাস্তার পাশের গাইড ওয়াল মাটির দুই ফুট নিচে যাওয়ার কথা থাকলেও মাটির উপরে করা হচ্ছে টু-ওয়াল। জোরে পা দিয়ে লাথি দিলেও ভেঙ্গে যাবে এমন অবস্থা।

হিমছড়ি এলাকার আবু জাকের, মোঃ বাহাদুর, আমির হোসেন, সৈয়দ আলম বলেন, যারা কাজ করছে তারা প্রভাবশালী লোক। কাজের অনিয়মের বিষয়ে বললে আমাদের হয়রাণী করবে। বালু না দিয়ে পাহাড়ের মাটি দিচ্ছে। ইট তো না এই যেন লাল মাটি। ধরার আগেই ভেঙ্গে যাচ্ছে। একদিকে রাস্তা করছে অন্যদিকে ভেঙ্গে যাচ্ছে। তারা মন্ত্রীর লোক, অনেক ক্ষমতা তাদের। আর রাস্তা উন্নয়ন কাজে উন্নয়ন বোর্ডের ইঞ্জিনিয়ার আসে না বললেই চলে। তারা যেমন ইচ্ছে তেমন কাজ করছে।

বালু না দিয়ে পাহাড়ের মাটি দিচ্ছে কেন এমন প্রশ্ন করলে রাস্তার শ্রমিক আলী আশরাফ, জয়নাল আবেদীন, শাহজাহান ও নাজেম উদ্দিন বলেন, ঠিকাদার যেমন করতে বলছে আমরা তেমন করছি। আমাদের বলেছে পাহাড়ের মাটি দিতে।

নাম প্রকাশ না করা সত্ত্বে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের কাঁঠালছড়া, বনপুর, কুমারী বাজার, চাককাটা এলাকার অনেকে বলেন, ওসমান গণি বাদশা ও প্রদীপ কান্তি দাশ সিন্ডিকেট আমাদের এলাকায় আরো ৬/৭টি রাস্তার কাজ করেছে। দুই মাস না যেতে রাস্তা ভেঙ্গে একাকার। তাদের নিজেদের ব্রিকফিল্ড আছে। ব্রিকফিল্ডের যত নিম্নমানের ইট আছে তা রাস্তার কাজে ব্যবহার করে। কাজের ঠিকাদার ওসমান গণি বাদশা এবিষয়ে প্রতিবেদক কে বলেন, নিউজ করা দরকার নেই। আমরা কথা বলবো !

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবানের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও প্রকল্পের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ত্রিদীপ কুমার ত্রিপুরা বলেন, এখনো কাজের স্টিমিট হয়নি। পার্বত্যমন্ত্রীর বিশেষ সুপারিশে কাজটি শুরু করা হয়েছে। কাজের তথ্য নির্বাহী প্রকৌশলী থেকে নেন, আমি জানিনা। অসংখ্যবার ফোন দিলে তিনি কল রিসিভ না করায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন মোহাম্মদ ইয়াছির আরাফাত এর বক্তব্য দেয়া যায়নি।
এম/এস


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ