মাসুদ রানা, স্টাফ রিপোর্টার
ঘড়ির কাঁটা ২৪ ঘন্টা পার হয়ে গেল, অথচ এখনো সন্ধান মেলেনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক)হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া নবজাতক আব্দুল্লাহর। সন্তান হারানোর দিশেহারা শোকে চোখের পানিও যেন শুকিয়ে গেছে হিরণ-শাহিনা দম্পতির।
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে হাসপাতালটির ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, অতিরিক্ত ১ নম্বর বিছানায় শুয়ে আছেন চুরি হওয়া বাকরুদ্ধ নবজাতকের মা শাহিনা বেগম। তার চারপাশেই স্বজন এবং অন্যান্য রোগীরা ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে।
নবজাতক হারানো পিতা-মাতাকে শান্তনা দিতে হাসপাতালে ছুটে আসেন স্বজনরাও। নবজাতক হারানো মা শাহিনার চোখের এক কোণে দিয়ে বেরিয়ে পড়ছে অশ্রু। এ সময় কথা বলতে গেলে মা শাহিনা বলেন,আমার আব্দুল্লাহ কই, তাকে একটি বার আমার কাছে এনে দেন,আমার বাচ্চা আমি ফেরত চাই। আর কিছুই চাই না। আমার বাচ্চা আমার কোলে আইনা দেন।’তার এই অশ্রুসজল কান্নার চিৎকারে স্তব্ধ হয়ে যায় শিশু বিভাগের করিডর। এদিকে পুলিশ বলছে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি নবজাতক শিশুটিকে উদ্ধারে।
শিশু নবজাতকের বাবা রাজমিস্ত্রি হিরণ মিয়া বলেন, ‘বাচ্চা নিয়ে আমার খুব স্বপ্ন ছিল। আমার সেই স্বপ্ন ভাইঙ্গা চুরমার হইয়া গেল রে ভাই। আমি রাজমিস্ত্রির কাজ করি, আপনাগো বাড়ি ঘরের কত ডিজাইন কত নকশা আমি বানাই, অহন তো আমার জীবনের নকশাই হারাইয়া গেল, এই বলে কারো বারবার কান্নায় মূর্ছে যাচ্ছিল সে।
তিনি আরও বলেন ,কোনো রোগীর লোক অথবা হাসপাতালেরই কেউ এই চুরির সঙ্গে জড়িত। হাসপাতালে এত আনসার সদস্য, সিসি ক্যামেরা, তারপরও কীভাবে বাচ্চা চুরি হইল।’
এদিকে শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বাচ্চা চুরির ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) দিবাগত রাতে শিশুটির বাবা হিরণ বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলা নম্বর-২ (০১-০৯-২০২৩)। বাচ্চাটি উদ্ধারে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
গত ২৬ আগস্ট রাজধানীর মিরপুর রূপনগরের বাসা থেকে শাহিনাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে সেখানে ছেলেসন্তানের জন্ম দেন তিনি। ৩১ আগস্ট দুপুরে হাসপাতালের ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে ঘুমন্ত শাহিনার পাশ থেকে চুরি হয় তার তিন দিন বয়সী সন্তান আব্দুল্লাহ।