করোনার দাপট শেষ হয়ে গেলেও কোথাও কোথাও এখনও সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। এমনকি ভাইরাসটির নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে। এমনই একটি ভ্যারিয়েন্ট কোভিড এরিস যা সম্প্রতি যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে।
করোনার মহামারি পর্বের সমাপ্তি ঘটেছে বেশ কিছুদিন আগেই। কিন্তু সারা পৃথিবীতেই কোভিডের মৌসুমি বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে বলে জানাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। শুধু জুলাই মাসেই ১০ লক্ষাধিক সংক্রমণ ও ৩ হাজার ১০০-র বেশি মৃত্যু নথিভুক্ত হয়েছে বিশ্বজুড়ে।
হু বলেছে, বর্তমানে করোনা নবম ঢেউ চলছে। বিশ্বের ২৩৪টির মধ্যে ১০৭টি দেশেই (৪৬%) কোভিড ধরা পড়ছে নতুন করে। এর মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশও রয়েছে। এর মধ্যে একটি ভ্যারিয়েন্টের ওপর সতর্ক নজর রাখছে হু। যার কারণ কয়েকটি দেশে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এমনকি এসব রোগীদের কারও কারও হাসপাতালেও নেয়া লাগছে।
নতুন এই ভ্যারিয়েন্টটির নাম ইজি.৫.১। যাকে ‘এরিস’ বলেও ডাকা হচ্ছে। এটি করোনা ভাইরাসের দ্রুত সংক্রামক প্রজাতি ওমিক্রনের উপ-প্রজাতি। চলতি বছরের জুলাইতে যুক্তরাজ্যে প্রথম এর হদিস মেলে।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই ভ্যারিয়্যান্ট এরই মধ্যে ইউরোপের কয়েকটি দেশে ছড়িয়েছে। এছাড়া উত্তর আমেরিকা, এশিয়া ও জাপানে এরিস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে অনুমান করছেন চিকিৎসকরা।
ব্রিটিশ স্বাস্থ্য সংস্থার (ইউকেএইচএসএ) তথ্য মতে, যুক্তরাজ্যে এখনও করোনার বেশ কয়েকটি ভ্যারিয়েন্ট ছড়াচ্ছে। এর মধ্যে সংক্রমণের দিকে দিয়ে গত মাসের শেষ দিকে দ্বিতীয় অবস্থানে চলে আসে এরিস।
বর্তমানে ব্রিটেনে কোভিড আক্রান্ত প্রতি ৭ জনের মধ্যে ১ জন এরিস-এ সংক্রমিত বলে জানিয়েছে ইউকেএইচএসএ। আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যে বর্তমানে এরিস আক্রান্তের হার ১৪.৬ শতাংশ। সংক্রমণ ঠেকাতে ফের ব়্যাপিড টেস্ট শুরু করেছে যুক্তরাজ্য।
এরিসের উপস্থিতি ভারতেও পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। ‘ইন্ডিয়ান সার্সকোভ-২ জিনোমিক্স কনসোর্টিয়াম’র (ইনসাকগ) অ্যাডভাইজ়রি বোর্ডের কো-চেয়ার কল্যাণীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ বায়োমেডিক্যাল জিনোমিক্সের (এনআইবিএমজি) সাবেক কর্মকর্তা সৌমিত্র দাস বলেন, কয়েকটা রাজ্যে বিক্ষিপ্তভাবে এরিসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ওমিক্রনের মতোই এর চরিত্র। তবে পরিস্থিতি একেবারেই ‘অ্যালার্মিং’ নয়।’
করোনার এই নতুন প্রজাতির বিশেষ কোনো বৈশিষ্ট্য এখনও ধরা পড়েনি। তবে শিশু ও বয়স্কদের বিশেষ সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। আগের মতোই করোনা-সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। জ্বর, শ্বাসকষ্ট শুরু হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখারও আবেদন জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সপ্তাহ দুয়েক আগেই ইজি.৫.১-এর বিষয়ে সতর্কবার্তা দেয়। হু’র প্রধান তেদ্রোস গেব্রেয়াসুস বলেন, ভ্যাকসিন নিলেই নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে না। বরং দেশের সকল মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ইউএসএ টুডে।