রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের বিভিন্ন পয়েন্টে পদ্মা নদীর তীরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি ভাঙন শুরু হয়েছে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের ২০০ মিটার উজানে অবস্থিত নতুনপাড়া গ্রামে। অসময়ে নদীভাঙন দেখা দেওয়ায় সেখানে গ্রামবাসীদের মনে ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এদিকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নদীবন্দর আধুনিকায়ন প্রকল্পের আওতায় দৌলতদিয়া প্রান্তে নদীর তীর রক্ষায় ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করার কথা। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর প্রকল্পটির নকশা এরই মধ্যে চূড়ান্ত করে তা অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। কিন্তু প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ এখনো শেষ হয়নি। বিআইডাব্লিউটিএ জানিয়েছে, নদীবন্দর আধুনিকায়ন প্রকল্পের আওতায় বাঁধটি দ্রুত নির্মাণ করা গেলে গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া ফেরিঘাটসহ গোটা গোয়ালন্দ উপজেলা এলাকা নদীভাঙনের হাত থেকে স্থায়ীভাবে রক্ষা পাবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডাব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন ধরে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের বিভিন্ন পয়েন্টে নদীর পারে ভাঙন শুরু হয়েছে। সেখানে বালুভরা বস্তা দিয়ে ভাঙন রোধের চেষ্টা চালাচ্ছেন বিআইডাব্লিউটিএর কর্মীরা। গতকাল সরেজমিনে গিয়ে ঘুরে দেখা যায়, দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের ২০০ মিটার উজানে অবস্থিত নতুনপাড়া গ্রাম এলাকায় নদীর তীরে ভাঙন চলছে। সেখানে ভাঙন পরিস্থিতি দেখতে এসেছে গ্রামবাসীদের অনেকেই।
এ সময় কৃষক দেলো মণ্ডলের স্ত্রী হাসনা বেগম বলেন, ‘আমার ঘরের পাশে ভাঙন শুরু হইছে। গাঙে পানির বেগ বাড়লেই পলক পইরা ভাঙন আরো বাড়ব। তহোন আর রক্ষা পামু না। কেউ যদি নদীটা একটু বাঁইধা দেয়, তাহলে আমরা বাঁচতে পারব।’
এদিকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডাব্লিউটিএ) আরিচা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নদীবন্দর আধুনিকায়ন প্রকল্পের আওতায় বন্দরের উভয় পাশে নদীর তীর রক্ষায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৩৫১ কোটি টাকা। এ বিষয়ে রাজবাড়ী ও মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসন কাজ করছে।
বিআইডাব্লিউটিএর উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শাহ্ আলম সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘নদীর তীর রক্ষায় দৌলতদিয়া প্রান্তে ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হলে ভাঙনের হাত থেকে স্থায়ীভাবে রক্ষা পাবে গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া ফেরিঘাট, লঞ্চঘাটসহ আশপাশের ভিন্ন গ্রাম।’ প্রকল্প বাস্তবায়নে ভূমি অধিগ্রহণ শেষ হলেই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে বলে তিনি জানান।
পার্বত্যকন্ঠ নিউজ/এমএস