মাটির কাপে বৈচিত্র্যময় স্বাদের
মজাদার চা -সাথে রকমারি নাস্তার বাহার এবং বিভিন্ন জাতের পানের অপূর্ব সমারোহ।
এমন দৃশ্য দেখতে সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টায় যায় ৪।
টিনের ছাউনিযুক্ত বাশেঁর বেড়া দিয়ে তৈরী কাপ্তাই সড়কের পাশে অতি সাধারন এই দোকানটা হয়তো অনেকের দৃষ্টিগোচর নাও হতে পারে। কাপ্তাইয়ের এই এলাকায় যারা ব্যবসা বানিজ্যের কারনে নিয়মিত আসেন তাঁরা অনেকেই রাহাত স্টোরে এই বৈচিত্র্যময় স্বাদের চা পান করেন। আবার অনেক পর্যটক “রাহাত স্টোর” এর একুশ রকম চায়ের স্বাদ নিয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেছেন।
দোকানের মালিকের সাথে চা এর চুমুকের ফাঁকে ফাঁকে দীর্ঘ আলাপ হয়। ছেলেটার নাম মোঃ মনিরুল ইসলাম হ্রদয়। কাপ্তাই সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ( বিএসপিআই) হতে কম্পিউটার ডিপ্লোমা পাশ করেও নিজের পৈত্রিক পেশাকে শ্রদ্ধা করে এই ব্যবসা করে যাচ্ছেন। প্রায় তিন যুগ ধরে তাঁরা পৈত্রিকভাবে এই ব্যবসা করে আসছেন।
তিনি জানান, তাঁর বাবা মোঃ জহিরুল ইসলাম আজ থেকে ৩২ বছর আগে এই ব্যবসা শুরু করেন। প্রতিদিন বিভিন্ন দামের ১৫০ কাপ চা এবং ৬০ থেকে ৭০ কিলি পান বিক্রি হয়। এইছাড়া নানা প্রকার বিস্কিট, নাস্তা এবং বিরিয়ানিও পাওয়া যায় এই দোকানে। মাসে খরচ বাবদ বাদ দিয়ে ১৫ হাজার টাকার উপর লাভ হয় এই দোকান হতে ।
হ্রদয় জানালো, তাঁর দোকানে ২১ রকমের চা আছে। যার দাম ৫ টাকা হতে ৫০ টাকা পর্যন্ত। তৎমধ্যে ৫ টাকা দামের নরমাল চা, ১০ টাকার দুধ চা যেমনঃ পাউডার মিক্স, মালডোবা মিক্স, হরলিক্স মিক্স, কাঠা মিক্স ও গরুর দুধের চা, আবার ১০ টাকা দামের রং চা, যেমন, মসলা চা, তেঁতুল / টক চা, কালিজিরা + ধনিয়া মিক্স চা, কাঁচা মরিচ/ ঝাল চা, মালতা চা এবং টি ব্যাগ চা। তিনি জানান, ২০ টাকা দামের মালাই চা, ক্যালসিয়াম চা, ৫০ টাকা দামের ডাবল মালাই + ক্যালসিয়াম চা, চাল, টক ও মসল্লার সংমিশ্রণে রং চা, পুদিনা, আমলকি ও সকল মসলা মিশ্রিত রং চাও আমার দোকানে বিক্রি করি।
এইছাড়া তাঁর দোকানে রকমারি পান সাজানো হয়েছে। তৎমধ্যে নরমাল পান ১০ টাকা, রঙিলা / জেলিপান ৩০ টাকা, কাঁচাগোল্লা পান ৪০ টাকা, ফায়ার বোম্বে আগুনপান ৭০ টাকা, দিলখো পান ৮০ টাকা, মধু পান ৫০ টাকা, বৌ- বিয়ে পান ৬০ টাকা এবং সকল পদের মোসাল পান ১০০ টাকা করে বিক্রি করি।
এই রাহাত স্টোরে চা খেতে আসা ফটিকছড়ি হতে আগত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের মাসুদ জানান, তাঁর দোকানের বিভিন্নধরনের স্বাদের চা বিক্রি হয়। আমি কয়েকপদের চা পান করেছি। বলতে গেলে স্বাদে ভরপুর।
কাপ্তাই ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন বাস স্টেশন এর মোঃ জাহাঙ্গীর, বয়স ৬৭ বছর, পেশায় একজন খুচরা বিক্রেতা। তিনি জানান, আমি প্রতিদিন এই দোকানে বিভিন্ন স্বাদের চা এবং পান খাই। কি অসাধারণ স্বাদের চা এবং পান, না খেলে কেউ বুজতে পারবেন না।
কাপ্তাই ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আবদুল লতিফ জানান, আমার ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন এই দোকানের চা এবং পানের বেশ কদর রয়েছে। প্রতিদিন অনেকেই আসে এই দোকানে।