দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে চলাচলকারি লঞ্চগুলো ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই করে নিয়মিত চলাচল করছে। যাত্রীনিরাপত্তায় প্রতিটি লঞ্চে জীবন রক্ষাকারী বিভিন্ন সরঞ্জাম থাকার কথা থাকলেও অনেক লঞ্চে তা নেই। প্রশিক্ষিত মাষ্টারের (চালক) বদলে অনেক লঞ্চ চালাচ্ছেন অনভিজ্ঞ হেলপার। এতে যে কোন সময় সেখানে ভয়াবহ নৌদুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে অনেকটা উদাসীন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। যাত্রীনিরাপত্তার কথা না ভেবে শুধুমাত্র মুনাফা লাভের জন্য ওই নৌপথে ত্রুটিপূর্ণ লঞ্চে মারাত্মক ঝুঁকির মুখে প্রতিদিন হাজারো যাত্রী পারাপার করছে সংশ্লিষ্ট লঞ্চমালিকরা। দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট অফিস ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সড়ক যোগাযোগে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ। প্রতিদিন সেখানে হাজার হাজার যাত্রী লঞ্চপারাপার হয়। ওই নৌরুটের বহরে ছোট-বড় ৩৩টি লঞ্চ রয়েছে। এর মধ্যে ২৫টি এমভি ও ৮টি এমএল। ছোট-বড় ওই লঞ্চগুলোর মধ্যে বর্তমান দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে চলছে ২২টি। অপর ১১টি লঞ্চ চলাচল করছে মানিকগঞ্জের আরিচা ও পাবনার কাজীরহাট নৌপথে। ওই দুই নৌপথে সকল লঞ্চচলাচল পরিচালনা করছে আরিচা লঞ্চ মালিক সমিতি। এদিকে ঘাটসংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলাচলকারি ওই লঞ্চগুলোর অধিকাংশই ৩৫ থেকে ৪২ বছরের পুরনো। প্রায় অকেজো হয়েপড়া ওই সব লঞ্চের উপরে চকচকে বাহারি রঙের প্রলেপ থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ ইঞ্জিনসহ ভিতরের অনেক কিছইু জোড়াতালি দেওয়া। সেখানে প্রশিক্ষিত কোন মাষ্টার (চালক) না নিয়ে অনেক লঞ্চমালিক তাদের লঞ্চগুলো চালাচ্ছেন ‘হেলপার’ দিয়ে। পাশাপাশি প্রতিটি লঞ্চে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র, ফায়ার বাকেট, বালুভরা বাক্স, পাম্প মেশিন, প্রয়োজনীয় সংখ্যক লাইফ বয়া, ফাস্টএইডসহ জীবন রক্ষাকারী বিভিন্ন সরঞ্জাম থাকার কথা থাকলেও অধিকাংশ লঞ্চে তা নেই। লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি যাত্রীসেবা নিশ্চিত করার দায়িত্ব বিআইডাব্লিউটিএ’র। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার সুযোগে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে লঞ্চগুলো মারাত্মক ঝুঁকির মুখে নিয়মিত চলাচল করছে। এতে যে কোন সময় নৌদুর্ঘটনা ঘটার আাশঙ্কা রয়েছে। সেখানে যাত্রীনিরাপত্তার কথা চিন্তা না করে শুধুমাত্র অতিরিক্ত মুনাফা লাভের জন্য অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে ওনৗপথে লঞ্চপারাপার করছে সংশ্লিষ্ট লঞ্চমালিকরা। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে আরিচা লঞ্চ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম খানের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও এসময় তাঁর ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটে কর্মরত বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডাব্লিউটিএ) ট্রাফিক পরিদর্শক মো. আফতাব হোসেন বলেন, ‘এই নৌরুটে চলাচলকারি লঞ্চগুলো অনেক পুরনো। তবে ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়া নৌপথে লঞ্চ চলাচলের কোন সুযোগ নেই।’ অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একেকটি লঞ্চে যাত্রী ধারণক্ষমতা একেক রকম। অতিরিক্ত যাত্রী বহনরোধে আমাদের সার্বক্ষণিক নজরদারি রয়েছে।