• বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:৫৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
আওয়ামীলীগের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে মহালছড়ি ও মাইসছড়ি বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল মহালছড়িতে সামাজিক সংস্কার আন্দোলনের ব্যানারে শীতার্তদের কম্বল বিতরণ রংপুরে ২য় বারের মতো আয়োজিত হয়ে গেলো ” কিরন পেজেন্টস এন,ইউ,এস,ডি,এফ দক্ষতা উন্নয়ন সম্মেলন ২০২৫ বান্দরবানে নানান আয়োজন চলছে জ্ঞান ও বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা ফের স্থলমাইন বিস্ফোরণে নাইক্ষংছড়িতে এক কিশোরের পা উড়ে গেল শেষ হলো বান্দরবান-র  জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট মহালছড়িতে সরস্বতী পূজামণ্ডপ পরিদর্শন ও আর্থিক উপহার প্রদান উপজেলা বিএনপির লামায় নবাগত ইউএনওর সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় নানা আয়োজনে রাজস্থলীতে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত খাগড়াছড়িতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় মতবিনিময় অনুষ্ঠিত খেলাধুলা একটি জাতির উন্নতির অন্যতম মাধ্যম- বলেন -লে. কর্নেল এ এস এম মাহমুদুল হাসান আওয়ামী সরকারের রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডে জুলাই গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবিতে খাগড়াছড়িতে মশাল মিছিল

সোনার বাংলা গড়ার শপথ নিয়েছে বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক: / ৪৭৭ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : শুক্রবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২১

স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনের দিনে সোনার গড়ার শপথ নিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এ শপথ পাঠ করান। দেশের প্রতিটি বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা শহরে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ভার্চুয়ালি এ শপথ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে রাষ্ট্রীয়ভাবে দুই দিনব্যাপী ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ শিরোনামে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে শপথ পাঠ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর শপথে বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। বিশ্বের বুকে বাঙালি জাতি প্রতিষ্ঠা করেছে তার স্বতন্ত্র জাতিসত্তা। আজ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং মুজিববর্ষের বিজয় দিবসে দৃপ্ত কণ্ঠে শপথ করছি যে শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না, দেশকে ভালোবাসব, দেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণে সর্বশক্তি নিয়োগ করব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আদর্শে উন্নত-সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার সোনার বাংলা গড়ে তুলব। মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের সহায় হোন।’

বিকেল ৪টা ৩৮ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় শপথ মঞ্চে ওঠেন। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। এ সময় শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা। দুই বোন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা হাতে শপথ পাঠ করেন। এ সময় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের নেতা, সরকারি পদস্থ কর্মকর্তা, দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা উপস্থিত ছিলেন। শপথের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ দেশে গণতন্ত্র, ভোটের ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় যাঁরা শহীদ হয়েছেন, নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, তাঁদের স্মরণ করেন।

শপথ শুরুর আগে দেশবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আসুন, আমরা বাংলাদেশের বিজয়ের এই সুবর্ণ জয়ন্তী এবং মুজিববর্ষে শপথ গ্রহণ করি যে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলব, বিশ্বসভায় উন্নত সমৃদ্ধ বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা মাথা উঁচু করে চলব।’

শপথের আগে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে ১৯৭১ সালে এ দেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরুর প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় দীর্ঘ ২৪ বছরের স্বাধীনতাসংগ্রামের ফসল। বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার আদায়ের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমগ্র পাকিস্তানে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। বাঙালি জাতি পাকিস্তানের শাসনভার গ্রহণ করবে—এটা পাকিস্তানের সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান মেনে নিতে পারেনি। তাই বাঙালিদের ওপর শুরু করে নিপীড়ন-নির্যাতন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণে বাংলাদেশের মানুষকে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার আহবান জানান। যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে প্রস্তুত থাকতে বলেন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে প্রতি জেলা, মহকুমা, থানা, গ্রামে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তুলতে নির্দেশ দেন। অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। তাঁর ভাষণে তিনি বলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জনগণ তাঁর (বঙ্গবন্ধুর) নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য স্থানে আক্রমণ করে গণহত্যা শুরু করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সে রাতেই স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘ইহাই হয়তো আমার শেষ বার্তা। আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের জনগণকে আহবান জানাইতেছি যে, যে যেখানে আছ, যাহার যাহা কিছু আছে, তাই নিয়ে রুখে দাঁড়াও। সর্বশক্তি দিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করো। পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর শেষ শত্রুটিকে বাংলার মাটি হতে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও।’

শেখ হাসিনা বলেন, ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে তাঁর (বঙ্গবন্ধুর) এই স্বাধীনতার ঘোষণা ঢাকার পিলখানায় তৎকালীন ইপিআর হেডকোয়ার্টার্স থেকে ওয়্যারলেসের মাধ্যমে সমগ্র দেশে পাঠানো হয়। আগে থেকেই ইপিআরের সুবেদার মেজর শওকত আলী তাঁর তিনজন সহকর্মীসহ সেখানে অপেক্ষায় ছিলেন। এই বার্তা বাংলাদেশের সব পুলিশ স্টেশন অর্থাৎ থানায় প্রেরণ করা হয়। থানায় কর্মরত অফিসাররা এই বার্তা সংগ্রাম পরিষদের নেতাদের হাতে ভোররাতে পৌঁছে দেন। একই সঙ্গে টেলিগ্রাম ও টেলিপ্রিন্টারেও এ বার্তা সমগ্র দেশে পৌঁছে দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পায়ে হেঁটে, মুখে চোঙ্গা ফুঁকিয়ে বা রিকশায় করে মাইক দিয়ে জেলা থেকে থানা পর্যন্ত এই বার্তা প্রচার করেন। প্রচারপত্র তৈরি করে বিলি করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২৬শে মার্চ দুপুরে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান স্বাধীনতার ঘোষণা প্রথম পাঠ করেন। এরপর একে একে অন্য নেতারা এই ঘোষণা পাঠ করতে থাকেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বাধীনতার ঘোষণা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রেডিও, টেলিভিশন ও পত্রিকায়ও প্রচারিত হয়। বাঙালিরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নির্দেশ মোতাবেক যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ। আমাদের পাশে দাঁড়ায় প্রতিবেশী ভারত, রাশিয়াসহ অন্যান্য বন্ধুপ্রতিম দেশ এবং সেসব দেশের জনগণ। মিত্র বাহিনীর সহযোগিতায় হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীকে আমরা পরাজিত করি। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় আমাদের বিজয়।’

শপথ অনুষ্ঠানের আগে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের, সুরের ধারার ও দেশের বরেণ্য শিল্পীরা ‘সাড়ে সাত কোটি মানুষের আরেকটি নাম মুজিবর’ শীর্ষক গান পরিবেশন করেন।

বিজয় দিবসে শপথ গ্রহণ করতে দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহর, জেলা ও উপজেলা শহরের স্টেডিয়াম এবং শপথের জন্য নির্ধারিত স্থানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত হয়। বড় আকারের স্ক্রিনে শপথ অনুষ্ঠান সরাসরি দেখানো হয়। জাতীয় পতাকা হাতে সবাই শপথ পাঠ করে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ