তদন্তে সত্যতা মিলেছে গোমতি বি. কে. উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতির
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার গোমতি বি. কে. উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল হুদার বিরুদ্ধে নিজ ক্ষমতা বলে নিয়োগ বানিজ্য, সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ সহ বিভিন্ন দূর্নীতির অভিযোগ উঠার পর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রধান করে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। এছাড়াও হিসাব নিরিক্ষনে বসে বিদ্যালয়ের অডিট কমিটি।
গত ১৭/০৫/২০২০ সালের অভ্যন্তরীন অডিট কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী গোমতী বি. কে. উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল হুদা বিদ্যালয় ফান্ডের তিন লক্ষ ছত্রিশ হাজার ছয়শত এক টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ উঠে। সে অডিট কমিটির রিপোর্টে শিক্ষক নুরুল হুদার নিজস্ব সাক্ষর রয়েছে এবং ১৭/০৫/২০২০ তারিখে তার স্বাক্ষরিত আবেদনে এই টাকা পরিশোধের সময় চেয়েছেন। কিন্তু ০১/১০/২০২১ তারিখের অভ্যন্তরীন অডিট কমিটির রিপোর্টেও আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরত প্রদান করেছেন কিনা তার কোনো সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে গোমতী বি. কে. উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সাধারণ সভায়, ২০২০ সালের জানুয়ারী হতে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত বিদ্যালয়ের আয় ব্যায়ের হিসাব নিরিক্ষনের জন্য ১২/০৯/২০২১ তারিখে পুনরায় আরো একটি অভ্যন্তরীন অডিট কমিটি গঠন করা হয়। নবগঠিত অভ্যন্তরীর অডিট কমিটির রিপোর্টে প্রধান শিক্ষক নুরুল হুদা গত ২০২০ সালে ঋন গ্রহণ দেখিয়েছেন ৩৮২৭১৭( তিন লক্ষ বিরাশি হাজার সাতশত সতের টাকা) এবং ২০১৯ সালে ঋন গ্রহন দেখিয়েছেন ৩,৫০,০০০( তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা যা ২০২০ সালে পূর্বের বকেয়া ঋন প্রাপ্তি হিসেবে দেখিয়েছেন। উক্ত ঋন গ্রহণ ও প্রদানে কমিটির কোনো অনুমোদন পাওয়া যায়নি বলে তা অডিট কমিটির রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। অনুমোদন বিহীন ঋন গ্রহণ ও প্রদান বিদ্যালয় পরিচালনার বিধির বহির্ভূত বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।
সর্বশেষ হিসাব নিরিক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী নতুন যে অনিয়ম সমূহ বের হয়ে আসে তা হল- ঋন গ্রহন ও ঋন পরিশোধের জন্য কমিটি কর্তৃক রেজুলেশন অনুমোদন নাই। বিদ্যালয়ের সকল আয় ও ব্যায়ের হিসাব ব্যাংক হিসাবের সাথে মিল নাই। প্রতি মাসের আয় প্রতি মাসে নগদান বইয়ে উঠানো হয় নাই। সরবরাহকৃত অনেক রশিদ বই রেজিস্ট্রারে উল্লেখ নাই। যা হিসাব নিরিক্ষন কাজে ব্যাহত হয়। কম্পিউটার অপারেটর ও অফিস সহকারী থাকা স্বত্বেও অনলাইন খরচ অযৌক্তিক। বিদ্যালয় তহবিলে টাকা থাকা স্বত্বেও ঋন গ্রহণ করা অযৌক্তিক।
উল্লেখ্য, গোমতি বি. কে. উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান নুরুল হুদা কর্তৃক চেক জালিয়াতির একটি অভিযোগের তদন্ত মাটিরাঙ্গা উপজেলা মাধ্যমেমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট চলমান রয়েছে।
অপরদিকে প্রধান নুরুল হুদার চেক জালিয়াতির বিয়ষটি ধামাচাপা দিতে সে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে ভিত্তিহীন মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শান্তিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল জানান, সম্প্রতি গোমতি বি কে উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল হুদা কর্তৃক বিদ্যালয়ের টাকা আত্মসাৎ এর সংবাদ বিভিন্ন গণমধ্যমে প্রচার হওয়ার পর, প্রধান শিক্ষক নুরুল হুদা বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানান। এতে শান্তিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল সহ বেশ কজন শিক্ষককে জড়িয়ে মিথ্যা,বানোয়াট এবং বেসামাল মন্তব্য করেন। নিজের অপকর্ম ডাকতে গিয়ে অন্য শিক্ষকদের নামে মিথ্যা ও মনগড়া মন্তব্যের নিন্দা জানান তিনি।
এছাড়াও অভিযোগ উঠেছে শিক্ষক নুরুল হুদার দূর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর সাংবাদিকদের মামলা জড়ানো সহ নানা ভাবে হুমকী দিয়ে আসছেন ক্ষমতাধর শিক্ষক নুরুল হুদা ও তার শালা মোঃ এরশাদ। সতেচন মহলের প্রশ্ন দুর্নীতিবাজ এ প্রধান শিক্ষকের খুটির জোর কোথায়?