• রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম
গুইমারায় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত যুবদল নেতা রবিউলের শয্যাপাশে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ বান্দরবানে বর্ণাঢ্য আয়োজনে মারমা নববর্ষ মাহাঃ সাংগ্রাই পোয়েঃ উদযাপন রাঙ্গুনিয়ায় ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে সুর এবং ছন্দের তালে মাতোয়ারা দর্শক      রামগড়ে গাঁজাসহ এক মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার কাপ্তাইয়ে ভোক্তা অধিকারের অভিযানে ৫০০০ টাকা জরিমানা  বৈসাবি উপলক্ষে মহালছড়িতে উৎসবে মতোয়ারা সকল সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠী ভাইবোনছড়ায় নদীতে শামুক কূড়াতে গিয়ে ২ কিশোরীর মৃত্যু ফিলিস্তিনে ইসরাইলের আগ্রাসনের প্রতিবাদে রাইখালীতে বিক্ষোভ মিছিল পাহাড়ে বৈসুর সুর আর বাদ্যের তালে তালে মত্ত ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী ক্যান্সারে আক্রান্ত শ্রী শিল্পী রানি’র চিকিৎসার জন্য নগদ উপহার প্রদান করেন গুইমারা উপজেলা জামায়াতে ইসলাম মা‌টিরাঙ্গায় আওয়ামীলী‌গ নেতা আব্দুল কাদের গ্রেফতার ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা ও বর্বর হামলার প্রতিবাদে গুইমারা উপজেলা ছাত্রদলের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল

লামার আন্ধারি খালের উৎসে রাবার ফ্যাক্টরি নির্মাণ হলে পরিবেশের যে ক্ষতি হবে

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ব্যুরো প্রধান, বান্দরবানঃ / ২৩৫ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : সোমবার, ২৪ মার্চ, ২০২৫

ব্যুরো প্রধান, বান্দরবানঃ লামার সরই ইউনিয়নের গোধূলি এলাকা আন্ধারি খালের উৎপত্তিস্থলে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এর প্রস্তাবিত রাবার প্রসেসিং ফ্যাক্টরি নির্মাণ হলে কি কি বন ও প্রকৃতির যে ক্ষতি হবে।

তিন দশক ধরে গড়ে তোলা জীববৈচিত্র্য এখন হুমকির মুখে :
বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে প্রায় ৩ দশক ধরে কাজ করছে। বিবর্ণ পাহাড়ি এই এলাকাটিকে তিলে তিলে গড়ে তোলা হয়েছে, যা এখন বাংলাদেশের অন্যতম একটি স্বাস্থ্যকর ও প্রকৃতিবান্ধব এলাকা হিসেবে সুপরিচিত।

এখানে রয়েছে প্রায় হাজার প্রজাতির উদ্ভিদ, ৩০০ প্রজাতির পাখি ও ২০০ প্রজাতির প্রজাপতির নিরাপদ অভয়ারণ্য। কিন্তু শুরুর চিত্রটি এমন ছিল না। সে-সময় পুরো জায়গাটা ছিল আগাছায় পূর্ণ, আর পোড়া পাহাড়। শতবর্ষী সব গাছ কেটে ফেলা হয়েছিল। বর্ষার শেষে আগাছা নির্মূলের জন্যে পাহাড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হতো। মশা আর ম্যালেরিয়া ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। তাই শুরুর দিকে গাছ লাগানো ও চারাগুলোকে বাঁচানোই ছিল অনেক বড় এক চ্যালেঞ্জ। কিন্তু হাল ছেড়ে দেয়নি কোয়ান্টামের কর্মীরা। বর্ষাকালে সারাদেশ থেকে গাছের চারা সংগ্রহ করা হলো। ক্রমাগত বনায়ন ও যত্নায়নের ফলে রূক্ষ, ঊষর এই অঞ্চলটি ধীরে ধীরে পরিণত হয়ে উঠতে লাগল শীতল আর সবুজ দিগন্তে।

বাঁধাগ্রস্ত হবে দেশের সবচেয়ে বড় বাঁশের সংগ্রহশালাটি :
পাশেই অবস্থিত দেশের সবচেয়ে বড় বাঁশ গবেষণাগার ব্যাম্বোরিয়ান। এখানে নানা জাতের দেশি-বিদেশি বাঁশ সংরক্ষণ করা হচ্ছে। গবেষণার জন্যে ২০০৬ সালে লামার এই স্থানে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। পানি ও পরিবেশ দূষণ হলে স্বাভাবিকভাবে বাঁশের উৎপাদন কমে যাবে এবং বাঁধার মুখে পড়বে ২৫০ প্রজাতির বাঁশ, বাঁশের বীজ সংরক্ষণ, চারা উৎপাদন, বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতিগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রশিক্ষণকেন্দ্র হিসেবে দেখা পরিচিত এই সংগ্রহশালা।

কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের ৩ হাজার শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্যঝুঁকি ও লেখাপড়ার পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে :
যেখানে রাবার ফ্যাক্টরি নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে সেটার নিকটবর্তী কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের সুবৃহৎ ৩টি আবাসিক ক্যাম্পাস। যেখানে প্রায় ৩ হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। রাবার ফ্যাক্টরির কাজ শুরু হলে শব্দদূষণ বাড়বে এবং তার চেয়েও বড় সমস্যা দেখা দিবে রাবার প্রসেসিং-এর দুর্গন্ধ, যা চারপাশের পরিবেশকে অস্বস্তিকর করে তুলবে।

সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫ শতাধিক মেয়ে শিক্ষার্থীদের ক্যম্পাসটি, কারণ এটি নির্মাণাধীন ফ্যাক্টরির ১৬০ মিটারের মধ্যে অবস্থিত। রাবারের দুর্গন্ধ ও মেশিনের উচ্চ শব্দের সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হবে এই মেয়ে শিশু-কিশোরীরা। তাদের লেখাপড়া, খেলাধুলা ও দৈনন্দিন জীবনযাপনে পরিবেশগত একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

বিঘ্ন ঘটবে শতাধিক জিমন্যাস্টের নিয়মিত অনুশীলন :
রাবার ফ্যাক্টরির ১৮০ মিটার দূরে অবস্থিত দেশের সবচেয়ে বড় ও আন্তর্জাতিক মানের জিমনেসিয়াম। যেখানে প্রতিদিন শতাধিক জিমন্যাস্ট অনুশীলন করে। উল্লেখ্য কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের জিমন্যাস্টিকস দলই বর্তমানে জাতীয় জিমন্যাস্টিকস দলকে প্রতিনিধিত্ব করছে। যারা বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পদক জয় করে আনছে। ২০২১ সালে সিঙ্গাপুর ওপেন জিমন্যাস্টিকসে বাংলাদেশের অর্জনকৃত ২৫টি পদকের ২১টি ই অর্জন করে এ স্কুলের জিমন্যাস্টরা। আর এই অর্জনের আঁতুড়ঘর হচ্ছে এই জিমনেসিয়াম।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ