শফিক ইসলাম,মহালছড়ি প্রতিনিধিঃ
চৈত্র সংক্রান্তি ও নতুন বছরের আগমনে পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর সর্ববৃহৎ ঐতিহ্যবাহী সামাজিক উৎসব বিঝু, সাংগ্রাই, বৈসু(বৈসাবি) ২০২৫ ইং উৎযাপন শুরু হয়েছে মহালছড়ি উপজেলায়।
শনিবার (১২ এপ্রিল) সকাল হতে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পাশাপাশি মহালছড়ি চেঙ্গী নদীতে ফুল বির্সজন দিয়ে ফুল বিঝু বা ফুল বাসানোর মধ্যে দিয়ে তিন দিন ব্যাপি উৎসব শুরু করা হয়।
চাকমা জনগোষ্ঠীর নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার উৎসবের নাম বিঝু | উৎসবের প্রথম দিন বিঝু উৎসব পালন করা হয় | দুই দিন আগে থেকে শুরু হয় নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার উৎসব | এটি এক দিকে যেমন পুরাতন বছরের শেষ চৈত্র মাসকে বিদায়ের ঘনঘটা, তেমনি নতুন বছরের প্রথম বৈশাখ মাসকে বরণের প্রস্তুুতি। প্রথম দিনে ফুল বিঝু, দ্বিতীয় দিনে মুর বিঝু এবং তৃতীয় দিনটি নতুন বছর বা গোজ্যে পুজ্যে দিন |
পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যান্য পাহাড়িদের মধ্যে এই উৎসব বিভিন্ন নামে পরিচিত | ত্রিপুরাদের বৈসু, মারমাদের সাংগ্রাই, চাকমাদের বিঝু, খুমি ও ম্রোদের চাংক্রাই, খিয়াং, লুসাইদের সাংগ্রাই ও তঞ্চঙ্গ্যাদের বিষু। এই নামে যেমন রয়েছে ভিন্নতা, তেমনি রয়েছে উৎযাপনের ক্ষেত্রেও ভিন্নতা | ঠিক কবে থেকে পাহাড়িদের মধ্যে এই উৎসবের প্রচলন শুরু হয়েছিল, তার নির্দিষ্ট কোন ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট জানা সম্ভব না হলেও, যুগ যুগ ধরে এই উৎসবটি হয়ে উঠেছে পাহাড়িদের সংষ্কৃতি আর ঐতিহ্যের ধারক-বাহক | এই উৎসবকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে পারষ্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ | পূর্বের কলহ ভুলে নতুন করে সবাই আনন্দে মেতে উঠেন।
বিঝুর অন্যতম মূল আকর্ষণ হল “পাচন”। পাচন হল বিভিন্ন সবজি বা তরকারি দিয়ে রান্না করে। পাজন ছাড়া বিঝু, সে যেন কল্পনার অতীত। পাজন কমপক্ষে ৩৬ পদের তরকারি সবজি থাকতে হবে।
এই উৎসবে পাহাড়ে বসবাসরত সকল জাতিগোষ্ঠী একে অন্যর বাড়ি গিয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিবে। নানা রকম মুখনোচক খাবার দিয়ে অতিথিদের আপ্যায়ন করা হবে। নাচে গানে মাতিয়ে রাখবে যুবক যুবতিরা,শিশু কিশোরেরা।