মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ব্যুরো প্রধান, বান্দরবানঃ
খালের উৎপত্তিস্থল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জনবসতির মাঝখানে রাবার প্রসেসিং ফ্যাক্টরি স্থাপনে পরিবেশের চরম বিপর্যয়ের আশংকা থেকে বাঁধা দিয়ে আসছে স্থানীয় লোকজন। সবুজ বনাঞ্চল, জীববৈচিত্র্য ও পানির উৎস রক্ষায় ফ্যাক্টরি স্থাপন না করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছিল তারা। এদিকে পরিবেশ বিপর্যয়ের দিক তুলে ধরে গণমাধ্যমে প্রচুর লেখালেখিও হয়েছে। অবশেষে ঘটনার সত্যতা পর্যালোচনা করতে লামা উপজেলা প্রশাসন ও বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ একটি টিম শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মঈন উদ্দিন লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ফ্যাক্টরি নির্মাণে পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে করা আবেদনটি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তর ছাড়পত্র দিলে ফ্যাক্টরি নির্মাণে কোন বাঁধা নেই।’
পরিদর্শনকালে আরো উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুপায়ন দেব, বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ রেজাউল করিম, সরই পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আতিকুল ইসলাম, সাংবাদিক ও স্থানীয় লোকজন। প্রস্তাবিত ফ্যাক্টরির জায়গায় প্রশাসন উপস্থিত হলে স্থানীয় অনেক লোকজন সেখানে আসে। এসময় লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ ম্যানাজার আরিফ, তাদের ভাড়াটিয়া লোকজন স্থানীয় লোকজনের সাথে উদ্বুদ্ধপূরণ আচরণ করতে দেখা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা রেংপাও মুরুং বলেন, লামায় সরই ইউনিয়নে আন্ধারী খালে উৎপত্তিস্থলে বিশাল রাবার ফ্যাক্টরি নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এতে স্থানীয় কয়েক হাজার পাহাড়ী বাঙ্গালি জনসাধারনের কৃষি মৎস্য চাষ ও দৈনন্দিন প্রয়োজন পুরণের একমাত্র পানির প্রাকৃতিক উৎস আন্ধারী খাল এর পানি দূষনের আশঙ্কা রয়েছে।
ওই এলাকার বাসিন্দা মোঃ ফিরোজ, আনোয়ার হোসেন সহ অনেকে বলেন, খালটি সুপীয় পানির একমাত্র উৎস। লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের ১৬শত একর জমি থাকতেও তারা চারপাশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে এমন জায়গায় কেন ফ্যাক্টরি বানাতে হবে? তারা চায় আমরা সবাই চাষাবাদ করতে না পেরে এলাকা ছেড়ে চলে যাই? তারা পাহাড় কেটে ফ্যাাক্টরি করলেও পরিবেশ অধিদপ্তর চুপ করে আছে।
সরজমিনে গেলে স্থানীয় লোকজন জানায়, এই ফ্যাক্টরি নির্মান করা হচ্ছে জনবসতি, আবাসিক ও স্কুল ক্যাম্পাস এর খুব কাছেই। অনতিবিলম্বে ফ্যাক্টরি অন্যত্র স্থাপনের জোর দাবি জানান সরই এর জনগণ।
বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ রেজাউল করিম বলেন, পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কাজে ছাড়পত্র দেয়া হবেনা। পাহাড় কেটে ফ্যাক্টরি নির্মাণে কোন পদক্ষেপ নেয়া হবে কিনা এমন প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান।