• শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:১৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম
ভাইবোনছড়ায় নদীতে শামুক কূড়াতে গিয়ে ২ কিশোরীর মৃত্যু ফিলিস্তিনে ইসরাইলের আগ্রাসনের প্রতিবাদে রাইখালীতে বিক্ষোভ মিছিল পাহাড়ে বৈসুর সুর আর বাদ্যের তালে তালে মত্ত ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী ক্যান্সারে আক্রান্ত শ্রী শিল্পী রানি’র চিকিৎসার জন্য নগদ উপহার প্রদান করেন গুইমারা উপজেলা জামায়াতে ইসলাম মা‌টিরাঙ্গায় আওয়ামীলী‌গ নেতা আব্দুল কাদের গ্রেফতার ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা ও বর্বর হামলার প্রতিবাদে গুইমারা উপজেলা ছাত্রদলের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল ফিলিস্তিনিদের উপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে দীঘিনালা সর্বস্তরের মুসলিম তৌহিদী জনতা  ইসরাইয়েলের বর্বর গণহত্যার প্রতিবাদে উত্তাল মাটিরাঙ্গা ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা ও বর্বর হামলার প্রতিবাদে মানিকছড়িতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল লংগদু সেনা জোনের উদ্যোগে গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে মতবিনিময় সভা একটি সড়কই পাহাড়ের অর্থনীতিতে আনতে পারে যুগান্তকারী পরিবর্তন মহালছড়িতে বিঝু কাপ ফুটবল টূর্নামেন্ট -২০২৫ এর শুভ উদ্বোধন করেছেন ওয়াদুদ ভূইয়া

ঐতিহাসিক বদর: ইসলামের ইতিহাসে প্রথম সশস্ত্র যুদ্ধ

দৈনিক পার্বত্যকন্ঠঃ / ১১৮ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫

দৈনিক পার্বত্যকন্ঠঃ

১৭ই রমজান। ইসলামের ইতিহাসে ঐতিহাসিক স্মরণীয় দিন। এ দিন ইসলাম ও মুসলমানদের প্রথম যুদ্ধ ঐতিহাসিক বদর প্রান্তে সংঘটিত হয়। ঘুমিয়ে পড়া জীর্ণশীর্ণ মুসলমানকে জাগিয়ে দেওয়ার জন্য বদরের চেতনার চেয়ে কার্যকর আর কিছুই হতে পারে না।

বিশ্ব মুসলমানের দিকে তাকালে দেখা যায়, ধনে-জনে, জ্ঞান-গরিমায় পিছয়ে নেই তারা। নবী (সা.)র জামানায় না ছিল ধন, না ছিল জনবল, ছিল না কোনো ডক্টরেট-মাস্টার্স করা উচ্চশিক্ষিত বাহার। আজ সে ইসলাম বিশ্বের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়েছে অঢেল সম্পদ নিয়ে।

বোধহয় এখনকার কথা ভেবেই নবী (সাঃ) খুব আফসোস করে বলেছেন, একদিন আমার উম্মত অনেক সম্পদের মালিক হবে। আফসোস! সেদিন তারা ইমানী সম্পদে জীর্ণশীর্ণ জাতিতে পরিণত হবে। দ্বিতীয় হিজরির রমজান মাসের ১৭ তারিখ। বদরের প্রান্তে কাফেরবাহিনীর এক হাজার সশস্ত্র সৈন্যবাহিনীর মুখোমুখি হয় মাত্র তিনশত তেরো জন মর্দে-মুমিনের ছোট্ট কাফেলা।

জাগতিক দৃষ্টিতে দেখলে যে কেউই যুদ্ধের আগে মুমিনবাহিনীর নিশ্চিত পরাজয়ের কথা বলে দিতে পারবে; কিন্তু এ বাহিনী তো জাগতিক দৃষ্টির বাইরেও আরেকটি দৃষ্টি অর্জন করেছিল। তা হলো ইমানি দৃষ্টি। জাগতিক অস্ত্র ছাড়ও ইমানী অস্ত্র তাদের অন্তরে খাপে মোড়ানো ছিল, তারা আল্লাহর ওপর ভরসা করে, খেজুর গাছের শুকনো ঢাল হাতেই ঝাঁপিয়ে পড়ে ধারালো তরবারিধারীদের ওপর।

বুখারী শরিফের কিতাবুল মাগাজিতে এসেছে, যেসব সাহাবি শুকনো খেজুরের ঢাল নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, একসময় তারা দেখে খেজুরের ঢাল আর খেজুরের ঢাল নেই। ধারালো তরবারি হয়ে গেছে। সুবহানাল্লাহ। জাগতিক অস্ত্রের বিপরীতে ইমানী অস্ত্র এমনই হয়।

একবার নবী (সা.) সৈন্যবাহিনীকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য আবেগময়ী ভাষণ দিচ্ছেন। একপর্যায়ে বলছেন, ওই জান্নাতের দিকে ছুটে আসো, যা আসমান ও জমিনের চেয়েও বড়। ন্যায়েরপক্ষে লড়াই করে শহিদ হলে এমন দশটি পৃথিবীর সমান একটি জান্নাত তোমাকে দেওয়া হবে। পাশেই একজন সাহাবি খেজুর খাচ্ছিলেন। যখন জান্নাতের কথা শুনলেন, তখন বললেন, বাহ! কী চমৎকার জান্নাত বানিয়ে রেখেছেন আল্লাহ তায়া’লা। আমি যদি হাতে থাকা খেজুরগুলো খেতে থাকি, তাহলে তো জান্নাতে যেতে খুব দেরি হয়ে যাবে। এ বলে হাতের সব খেজুর ছুড়ে ফেলে সে চলে যান ময়দানে।

জগতের মানুষ ভরসা করে জাগতিক উপকরণের ওপর। মুমিন ভরসা করে আল্লাহর ওপর। রাসুল (সা.) যুদ্ধ শুরুর আগে আকাশের দিকে দু’হাত বাড়িয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বারবার বলছিলেন, হে আল্লাহ, এত বিশাল সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করার শক্তি এ ক্ষুদে মুমিন বাহিনীর নেই। আজ যদি এ মুমিনবাহিনী হেরে যায়, তাহলে তোমাকে আল্লাহ বলে ডাকার আর কেউই থাকবে না। এভাবে দোয়া করে রাসুল (সা.) ঝাঁপিয়ে পড়লেন যুদ্ধের ময়দানে। আল্লাহর সাহায্য নাজিল হলো। বিশ্বাসীরা জয়ী হলো।

এই যে অস্ত্রের বলে নয়, দোয়ার ফলে বিজয় লাভ-এটাই বদরের সবচেয়ে বড় শিক্ষা। আফসোস! আজ মুসলমানের সব আছে, শুধু ইমানী শক্তিতে তারা হয়ে পড়েছে জীর্ণশীর্ণ। পৃথিবীর এখানে-ওখানে অন্যায়-অসত্য মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে, মানবতার মুখে চুনকালি মেখে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের স্টিমরোলার চালানো হচ্ছে, আফসোস! মুসলমানদের সাহায্যে মুসলমান এগিয়ে আসছে না।

মুসলমানদের এমন শক্তি অর্জন করার কথা ছিল, বিশ্বের কোথাও মুসলমানের দিকে অন্যায়ভাবে কেউ চোখ তুলে তাকানো মাত্রই পুরোবিশ্বে প্রতিবাদ-প্রতিরোধের ঝড় ওঠবে। কেন আমার ভাইয়ের দিকে চোখ তুলে তাকানো হলো। অথচ পাখির মতো মুসলমানদের হত্যা করা হচ্ছে, প্রতিরোধ দুরের কথা, মৌখিক নিন্দাও জানায় না মুসলিম বিশ্বের রাজা-বাদশাহরা।

আজ এক শ্রেণীর মুসলমান দোয়াতেই সীমাবদ্ধতা রাখেন, এমন মূর্খের মতো কোনো মুসলমান চিন্তা করতে পারে, তা ভাবতেও লজ্জা লাগে। তারা কি দেখে না নবী (সা.) দোয়া করে যেমন চোখ ভিজিয়েছেন, তেমনি যুদ্ধ করেও শরীর রাঙিয়েছেন। শুধু দোয়া করলেই যদি সব হতো, তাহলে বদরের ময়দানে ৭০ জন সাহাবী শহিদ হওয়ার প্রয়োজন ছিল না। হে আল্লাহ! বদরের ঈমান আবার মুসলমানদের মনে ঢেলে দিন। আবার অসত্যের বিরুদ্ধে মুসমানদের বিজয় দিন। আমিন।

কাজী শহিদুল্লাহ ওয়াহেদ
লেখক,শিক্ষক ও সমাজকর্মী


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ