ছোটন বিশ্বাস, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি।। বাজছে শেষ সময়ের ঢাক। অশুভ শক্তিকে দূরে রাখতে শঙ্খ আর উলুধ্বনি পঞ্চ প্রদীপে ত্রিনয়নীর শেষ আরাধনায় মত্ত ভক্তরা।
লাল পাল, সাদা শাড়িতে কপাল ছুড়ায় রক্তিম সিদুরের আভা। একে অপরকে সিঁদুরের রঙে রাঙিয়ে নারী জাগ্রত হয় তার স্নেহময়ী মাতৃ ও শক্তি রূপে।
দেবীর চরণে সিঁদুর ছুঁয়ে সেই সিদুরের টুকটুকে লালে নারী জাগ্রত করে নিজ আত্ম রক্ষার শক্তি। সিঁদুরেই যেন তার সক্ষমতার অস্ত্র। দশমীতে সেই অস্ত্রের সজ্জিতা নারী।
দর্পণ বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে এক বছরের জন্য পার্বতী ছেড়ে যাবেন মর্তলোক। তাই মন্ডগুলো মুখরিত ভক্তদের ভালোবাসা ও প্রার্থনায়।
খাগড়াছড়ি জেলা সদরে পূজা মন্ডপের প্রতিমা গুলো রবিবার বিকেলে খাগড়াছড়ি চেঙ্গি নদীতে বিসর্জন দেওয়ার জন্য গাড়িতে করে এইসব পূজা মন্ডপের দুর্গা দেবীর প্রতিমা গুলো পৌর শহরের গঞ্জপাড়া এলাকার ব্রিজের কাছে ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী বিসর্জন দেওয়া হয়। এর আগে প্রত্যেকটি পূজা মন্ডপের প্রতিমা নিয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করা হয়।
ঢাকঢোল পিটিয়ে ব্যাপক জাঁকজমকপূর্ণভাবে প্রতিমার বিসর্জন কার্যক্রম চলে। এ সময় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ছিল। শ্রী শ্রী লক্ষ্মীনারায়ন মন্দির, জগন্নাথ মন্দির, শান্তি নগর গীতাশ্রম মন্দির, ঠাকুরছড়া গঞ্জ পাড়া মন্দিরে প্রতিমা গুলো একসাথে চেঙ্গি নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।
এ বছর তিথি অনুযায়ী মহা নবমী ও দশমী একত্রে হওয়া গতকাল ফুল বেলপাতা দিয়ে প্রদান করা হয়েছিল এবারের দুর্গাপূজার শেষ অঞ্জলি।
এবার দেবী মর্তে এসেছিলেন ধোলাই করে আর কৈইলাসে ফিরে যাচ্ছেন ঘোড়াই করে।
ধর্মপ্রাণ ভক্তরা জানান, মা দুর্গা সকল প্রকার অশুভ শক্তিকে বিনাশ করে আগামীতে সুখের বার্তা নিয়ে আসার প্রত্যাশা ভক্তদের।
খাগড়াছড়ি কেন্দ্রীয় লক্ষ্মী নারায়ণ মন্দিরে সাধারণ সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ধর্মীয় রীতিতে এবছর আমাদের পূজোর আনন্দ উৎসব বিসর্জন এর মধ্যে দিয়ে শেষ হয়েছে। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিসর্জন পর্যন্ত সহযোগিতা পেয়েছি। সেই জন্য তিনি প্রসাশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেন। এবং আসছে বছর দেবী দুর্গা আবারও মর্তে ফিরবেন শান্তির কোনো বার্তা নিয়ে। সেই কামনায় মর্ত হতে কৈলাসে বিদায় জানাতে আমরা সবাই চেঙ্গী নদীর পাড়ে সমাবেত হয়েছি বলে জানান তিনি।