মিন্টু কান্তি নাথ রাজস্থলীঃ
ষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে সারা বাংলাদেশে ন্যায় আজ(৯ অক্টোবর) বুধবার রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার চারটি পুজা মন্ডপে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে। আগামী শনিবার (১৩অক্টোবর) বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে চার দিনব্যাপি এ উৎসব।
দুর্গা শব্দের অর্থ হলো ব্যূহ বা আবদ্ধ স্থান। যা কিছু দুঃখ কষ্ট মানুষকে আবদ্ধ করে, যেমন বাধাবিঘ্ন, ভয়, দুঃখ, শোক, জ্বালা, যন্ত্রনা এসব থেকে তিনি ভক্তকে রক্ষা করেন। শাস্ত্রকাররা দুর্গার নামে অন্য একটি অর্থ করেছেন। দুঃখের দ্বারা যাকে লাভ করা যায় তিনিই দুর্গা। দেবী দুঃখ দিয়ে মানুষের সহ্যক্ষমতা পরীক্ষা করেন। তখন মানুষ অস্থির না হয়ে তাকে ডাকলেই তিনি তার কষ্ট দূর করেন।
হিন্দু পূরাণ মতে, দুর্গাপূজার সঠিক সময় হলো বসন্তকাল কিন্তু বিপাকে পড়ে রামচন্দ্র, রাজা সুরথ এবং বৈশ্য সমাধি বসন্তকাল পর্যন্ত অপেক্ষা না করে শরতেই দেবিকে অসময়ে জাগ্রত করে পূজা করেন। সেই থেকে অকাল বোধন হওয়া সত্ত্বেও শরত কালে দুর্গাপূজা প্রচলিত হয়ে যায়।
বাঙ্গালহালিয়া কুতুরিয়া পাড়ার শিব মন্দিরের পুরোহিত কাজল চক্রবর্তী জানান, এই বছর কৈলাস হতে দেবী দুর্গা মর্ত্যে আসছেন দোলায় করে। শাস্ত্রে আছে দেবীর দোলায় আগমন হলে মহামারি,ক্ষরা এবং মৃত্যুর সম্ভাবনা থেকে যায়। আর দশমীতে দেবী ঘোটকে কৈলাসে ফিরে যাবেন। শাস্ত্র মতে দেবীর ঘোটকে গমনের মধ্য দিয়ে সামাজিক, রাজনৈতিক অস্থিরতা হতে পারে।
এদিকে, পূজাকে আনন্দমুখর করে তুলতে রাজস্থলী উপজেলার ৪টি মন্দিরে বর্ণাঢ্য প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। সারাদেশে এখন বইছে উৎসবের আমেজ। ঢাক-ঢোল কাঁসা এবং শঙ্খের আওয়াজে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন মন্ডপ।
রাজস্থলী উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি মিঠুল চন্দ্র দে বলেন, এই বছর রাজস্থলীতে ৪ টি পূজামণ্ডপে অনুষ্টিত হবে শারদীয়া দুর্গোৎসব। এছাড়াও প্রতি বছরের ন্যায় বিজয়া দশমীর দিন কর্ণফুলী নদীর মোহনায় নৌ-র্যালীর মাধ্যমে প্রতিমা বিসর্জন হবে।
রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়া শিব মন্দির কমিটির সভাপতি শ্যামল দাশ ( মাষ্টার)বলেন, ইতিমধ্যে রাজস্থলী উপজেলার ৪টি পূজামণ্ডপ স্থাপনের কাজ প্রায় শেষের দিকে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
বাঙ্গালহালিয়া বাজার কেন্দ্রীয় শ্রী শ্রী দক্ষিনেশ্বর কালি মন্দিরের পুজা কমিটির সভাপতি বাপ্পা দও জানান, তাদের পুজা মণ্ডপে সাজানো গোছানোর কাজ সম্পন্ন। এখন মাত্র অপেক্ষা ষষ্ঠী পূজার
রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজীব কান্তি রুদ্র বলেন, পূজায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রতিটি মন্দিরেই থানা পুলিশের পাশাপাশি আনসার, গ্রাম পুলিশের স্বেচ্ছাসেবক দল ও মোবাইল টিম মাঠে থাকবে। এছাড়া প্রতিটি মন্দির কমিটির স্বেচ্ছাসেবকরা সমন্বিতভাবে পূজা মন্ডপে আনসার ও পুলিশকে সহায়তা করবেন। দেবী বিসর্জন দেয়া পর্যন্ত সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকবে উপজেলা প্রশাসনের। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যাতে তাঁদের অন্যতম সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা আনন্দের মধ্যে দিয়ে সুন্দর ভাবে উদযাপন করতে পারে সেদিকে পুলিশের পক্ষ হতে সার্বক্ষনিক মনিটরিং এর ব্যবস্থা করা হবে।