ভারতের উগ্রহিন্দুত্ববাদী আর বাংলাদেশের উগ্র হিংস্র উপজাতি গোষ্ঠীগুলোর মিল রয়েছে। ভারতে যেমন মুসলমানদের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে উগ্রহিন্দুত্ববাদীরা পিটিয়ে শহীদ করে, তেমনি উপজাতি সন্ত্রাসিরাও পাহাড়ে মুসলমানদের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে শহীদ করছে বলে মন্তব্য করে ইনসাফ কায়েমকারী ছাত্র-জনতার নেতৃবৃন্দরা বলেন, পাহাড়ে উপজাতিদের এরূপ সন্ত্রাসীপনার বিরুদ্ধে সেনা অভিযান পরিচালনা না করলে পাহাড়ে বড় ধরনের বাঙালী মুসলিম গণহত্যার আশঙ্কা আছে। তারা ইসলাইলীদের মত পৃথক দখলদারি রাষ্ট্র কায়েম করতে চায়।
বুধবার (২ অক্টোবর) রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র মালিবাগ মোড়ের ফালইয়াফরাহু চত্বরে ইনসাফ কায়েমকারী ছাত্র-জনতা পাহাড়ে বাঙালী মুসলিম গণহত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এই আহ্বান জানান।
মুহম্মদ রাসেল হোসেনের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ইনসাফ কায়েমকারী ছাত্র-জনতার আহ্বায়ক মুহম্মদ আরিফ আল খাবির, ইনসাফ কায়েমকারী ছাত্র-জনতার সমন্বয়ক মুহম্মদ ফরহাদ আলম।
ইনসাফ কায়েমকারী ছাত্র-জনতার আহ্বায়ক আরিফ আল খাবির বলেন, সম্প্রতি ভারতের ত্রিপুরার বিজেপির সহযোগী দল তিপ্রা মোথা সংখ্যালঘু হিন্দু ও উপজাতিদের নিয়ে বাংলাদেশ ভেঙ্গে নতুন রাষ্ট্র তৈরীর হুমকি দিয়েছে, যা খুবই বিপদজনক বিষয়। গতকাল ১লা অক্টোবর, ২০২৪ তারিখে পাহাড়ে আবুল হাসনাত মাসুদ রানা নামক এক বাঙালী শিক্ষককে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে শহীদ করা হয়েছে। এর আগে ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে মামুন নামে আরেক বাঙালী মুসলিমকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে শহীদ করা হয়। পাহাড়ে গত কয়েক দশকে উপজাতিরা ৪০ হাজার বাঙালী মুসলিমকে শহীদ করে এবং এখনও তাদের হত্যাকাণ্ড অব্যাহত আছে। এত এত বাঙালী শহীদ করার পরও উপজাতিরা নিজেদের নিরীহ দাবী করে সব সময় মায়াকান্না করে, ঠিক যেন ইসরাইলি দখলদারদের আপন ভাই। কারণ ইসরাইলিরাও প্রতিয়িনত ফিলিস্তিনি মুসলমানদের শহীদ করে নিজেদের নিরীহ দাবী করে মায়াকান্না করতে থাকে।
তিনি বলেন, ইহুদীরা ইউরোপ থেকে নির্যাতিত হয়ে জান বাচাতে আরবভূমিতে আশ্রয় নিয়েছিলো। কিন্তু আরবে আশ্রয় পেয়ে তারা বেঈমানি করে। নিজেদের আদিবাসী দাবী করে জাতিসংঘের সহায়তায় ইসরাইল রাষ্ট্র কায়েমে সচেষ্ট হয়। অপরদিকে প্রকৃত আদিবাসী ফিলিস্তিনীদের উদ্বাস্তু বানিয়ে ফেলে। বর্তমানে পাহাড়ে উপজাতিদের আচরণ ইসরাইলীদের মতই। তাদের পূর্বপুরুষ এক সময় ভারত-মায়ানামার-ত্রিপুরায় বিভিন্ন অপরাধী ও সন্ত্রাসী দলের সদস্য ছিলো। নিজেদের পরিচয় গোপন করে এক সময় সময় বাঙলার পাহাড়ে আত্মগোপন করে। কিন্তু বাঙলার পাহাড়ে আশ্রয় পেয়ে তারা নিজেদের আদিবাসী দাবী করা শুরু করে এবং বাঙলার প্রকৃত আদিবাসী বাঙালীদের সেটেলার বলে উচ্ছেদ করতে চায়। শুধু তাই না, ইসরাইলীদের মত জাতিসংঘের সহায়তায় তারা তিন পার্বত্য জেলাকে পৃথক করে পৃথক রাষ্ট্র ‘জুম্মল্যান্ড’ কায়েমের স্বপ্ন দেখছে। এজন্য পাহাড় থেকে সেনা অপসারণসহ স্বায়ত্ত্বশাসনের দাবীও তুলছে, যা খুবই আশঙ্কার বিষয়।
ইনসাফ কায়েমকারী ছাত্র-জনতার সমন্বয়ক ফরহাদ আলম বলেন, গত ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দূর্গা পূজা উপলক্ষে ইনসাফ কায়েমে আমরা সরকারের কাছে ১৬ দফা দাবী উত্থাপন করি। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমরা রাষ্ট্রের কাছে যে কোন দাবী উত্থাপন করতেই পারি, এটা আমাদের বাক স্বাধীনতা, এটা আমাদের অধিকার। কিন্তু এই ১৬ দফা উত্থাপনের পর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নামক এক সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী দলের মাথা খারপ হয়ে যায়। তারা আমাদের বাক স্বাধীনতাহরণ করে আমাদের গ্রেফতারে দাবী তুলেছে।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কার্যক্রম আমরা ভুলি নাই। কোটা নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা যখন প্রতিবাদ স্বরূপ শ্লোগান দিয়েছিলো “তুমি কে, আমি কে, রাজাকার, রাজাকার, কে বলেছে, কে বলেছে, স্বৈরাচার, স্বৈরাচার।” তখন এই হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এক বিবৃতিতে শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্রদ্রোহী দাবী করে বিচার চায়। শুধু তাই না, শিক্ষার্থীরা যেন ভবিষ্যতে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত কোনো প্রতিষ্ঠানে; এমনকি সেনাবাহিনীতেও চাকরি করতে না পারে আওয়ামী সরকারকে সে পথ দেখিয়েছিলো।
তিনি আরও বলেন, ঐদিন শিক্ষার্থীদের শ্লোগানের বিরোধীতা করে যদি হাসিনা সরকারের পতন হয়, হাসিনাকে ভারত পালিয়ে যেতে হয়, তবে আজকে কেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন বিচার হবে না, কেন তাদের ভারত পাঠিয়ে দেয়া হবে না, আমরা তা জানতে চাই।
সমাবেশে ইনসাফ কায়েমকারী ছাত্র-জনতার নেতৃবৃন্দ ফ্যাসিবাদের দোসর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সকল কর্মীকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তি দিতে সরকারকে আহবান জানান। সমাবেশে ইনসাফ কায়েমকারী ছাত্র-জনতার কয়েকশ নেতৃকর্মী উপস্থিত ছিলেন।