• বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:২৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ছাত্রদলের পক্ষ হতে সহায়তা প্রদান কাপ্তাই তারুণ্যের মেলার দ্বিতীয় দিনে পুষ্টি বিষয়ক কর্মশালা ও মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রাজস্থলী শিলছড়িতে আগুনে পুড়ে তিন বসতঘর ছাই রামগড় থানা পুলিশের অভিযানে  আওয়ামীলীগের ২ নেতাকর্মী গ্রেফতার গুইমারায় যুবলীগ নেতা আটক রাঙ্গামাটিতে দিনব্যাপী নানান কর্মসূচির মধ্যদিয়ে তথ্যমেলা-২০২৫ সম্পন্ন ৩ দিনব্যাপী কাপ্তাইয়ে তারুণ্যের মেলা উদ্বোধন সারাদেশে ন্যায় বাঘাইছড়িতে বিএনপির সদস্য নবায়ন শুরু আগুনে পুড়ে ছাই মাটিরাঙ্গা ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা ও এতিমখানা উন্মুক্ত হলো দেবতাখুম  স্বপ্ননের পর্যটনকেন্দ্র দীঘিনালায় ছাত্র লীগের নেতা গ্রেপ্তার পদ্মায় ধরা পড়লো ২০ কেজির বাঘাইড় মাছ

কাপ্তাই রাহাত স্টোরে ৩৫ প্রকার চা এবং হরেক রকম পান পাওয়া যায় 

ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধি: / ২৪৯ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০২৪

 

ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই (রাঙামাটি): ১৩ জুলাই, শনিবার, বিকেল সাড়ে ৪ টা। পড়ন্ত বিকেলে রাহাত স্টোরে গিয়ে দেখা যায়,  দোকানের বাহিরে খোলা মাঠে বসে জনা কয়েক মধ্য বয়সী লোক চা পান করছেন। চা পান করতে করতে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে পরস্পরের সাথে ভাব বিনিময় করছেন। তাদের একজন মো: সেকান্দর আলী। তিনি চট্টগ্রামের রাউজান হতে কাপ্তাইয়ে বন্ধুদের নিয়ে বেড়াতে এসেছেন। কাপ্তাই লেকে ভ্রমন শেষে তাঁরা সকলেই এই রাহাত স্টোরে চা পান করতে এসেছেন। এই সময় এই প্রতিবেদককে সেকান্দর আলী বলেন, আমরা পত্র, পত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগ  মাধ্যমে এই রাহাত স্টোরের কথা জানতে পারি। এখানে নাকি, ৩৫ প্রকারের বিভিন্ন স্বাদের চা পাওয়া যায়। আজকে আমরা ৩০ টাকা দামের মালাই চা এবং ক্যালসিয়াম চা পান করেছি। স্বাদে অতুলনীয়, বার বার খেতে মন চাইছে। এসময় পাশে বসে থাকা মো: ইকবাল,  রমজান শেখ,  মো: আলম সহ তাঁদের বন্ধুরা বলেন,  আমরা বাংলাদেশের অনেক জায়গায় ঘুরেছি, অনেক বিখ্যাত দোকানের চা পান করেছি, কিন্তু এই দোকানের চা এর স্বাদ আমাদেরকে মুগ্ধ করেছে।

বলছিলাম, রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার  ৪ নং কাপ্তাই ইউনিয়ন সংলগ্ন পূর্ব পাশে রাহাত স্টোরের কথা।  যেখানে ৩৫ প্রকারের চা, হরেক রকম পান, সাদা রুটি এবং ঝাল মুড়ি পাওয়া যায়। ডিজাইন করা  মাটির কাপে ১০ টাকা হতে ১০০ টাকা দামের চা, বিভিন্ন দামের হরেক রকম পান এবং ঝাল মুড়ি খেতে প্রতিদিন উপচে পড়া ভীড় লেগে থাকে এই দোকানে। অথচ এটা কোন নামীদামি টাইলস মোজাইক করা কোন রেস্টুরেন্ট না, সামান্য বাঁশের বেড়া এবং উপরে টিন দিয়ে তৈরী ছোট্র পরিসরে গড়ে উঠা  একটা সাধারণ রেস্টুরেন্ট। যেটা ইতিমধ্যে অনেকের কাছে বেশ সুপরিচিত হয়ে উঠেছে।

এসময় কথা হয় দোকান এর মালিক প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম হৃদয় এর সাথে। তিনি বলেন, আমি  কাপ্তাই সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট (বিএসপিআই) থেকে কম্পিউটারে ডিপ্লোমা পাস করেও পৈতৃক পেশাকে শ্রদ্ধা করে এই ব্যবসা করে যাচ্ছি। প্রায় তিন যুগ ধরে পৈতৃকভাবে এই ব্যবসা করে আসছে আমার পরিবার। এখন আমি এই ব্যবসার হাল ধরেছি।

হৃদয় জানান, তাঁর বাবা মো. জহিরুল ইসলাম ৩৩ বছর আগে এই ব্যবসা শুরু করেন। তাঁর দোকানে ১০ টাকা হতে ১০০ টাকার বিভিন্ন আইটেমের ৩৫ প্রকার চা পাওয়া যায়। এছাড়া বিভিন্ন পদের বাহারি পান, সাদা রুটি  এবং ঝালমুড়ি খেতে প্রতিদিন শত শত খদ্দের ভীড় করে।

প্রতিদিন গড়ে  ২শ কাপ চা এবং ১০০  থেকে ১৫০ খিলি পান বিক্রি হয়। এ ছাড়া নানা প্রকার বিস্কুট, নাশতাসহ বিরিয়ানিও পাওয়া যায় এই দোকানে। মাসে খরচ বাবদ বাদ দিয়ে ৪০  হাজার টাকার ওপর লাভ হয় এই দোকান থেকে।

হৃদয় জানান, তাঁর দোকানে  ১০ টাকার দুধ চা, ও পাউডার চা,  ২০ টাকা দামের দুধ চা মিক্সডমালটোবা, হরলিক্স, রং চা,  মসলা চা, তেঁতুল বা টক, কালিজিরা ও ধনিয়া, কাঁচা মরিচ বা ঝাল, মালটা চা এবং টি ব্যাগ চা,  ৩০ টাকা দামের মালাই চা ও ক্যালসিয়াম চা, ১০০ টাকা দামের ডাবল মালাই ক্যালসিয়াম চা সহ বিভিন্ন মসলার সংমিশ্রণে রং চা, পুদিনা, আমলকী ও সব মসলা মিশ্রিত রং চাও  দোকানে বিক্রি করি। এছাড়া ৩০ টাকা দামের  নরমাল মুড়ি মাখা, ৫৫ টাকা দামের ডিম মুড়ি মাখা, ৮০ টাকা দামের চিকেন মুড়ি মাখা এবং ১ শত টাকা দামে হৃদয়  ভাইয়ের স্পেশাল মুড়ি মাখা পাওয়া যায়। এছাড়া ২০ টাকা দামের শাহী মসলা পান, ৩০ টাকা দামের রঙ্গিলা জেলি পান, ৬০ টাকা দামের বৌ বিয়ে পান এবং  ৮০ টাকা দামের দিলখো পান পাওয়া যায়।

কথা হয়, কাপ্তাইয়ের বাসিন্দা উপজেলা ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি এম নুর উদ্দিন সুমন এর সাথে। তিনি বলেন, আমার বাসা হতে মাত্র ২ কি: মি: দূরে এই দোকানটি অবস্থিত। প্রতিদিন একবার এসে রাহাত স্টোরে চা এবং হৃদয় ভাইয়ের  মুড়ি মাখা খেয়ে যায়।

কাপ্তাই জেটিঘাট শ্রমিক আব্দুর কাদের বলেন, আমি দীর্ঘ দিন ধরে এই জেটিঘাটে শ্রমিক এর কাজ করি। অবসর সময় পেলে এখানে চা এর পাশাপাশি ২০ টাকা দামের শাহী মসলা পান খেয়ে থাকি। অন্য রকম স্বাদ লাগে এই দোকানের চা এবং পানের।

চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতালের পরিচালক ডা: প্রবীর খিয়াং বলেন,  কর্ম ব্যস্ততার মাঝেও আমি সময় পেলে রাহাত স্টোরে গিয়ে চা পান করে আসি। বিভিন্ন স্বাদের চা পান করে আমি তৃপ্তি লাভ করেছি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ