খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে মাটিরাঙ্গা ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা ও এতিমখানার ভবন। আকস্মিক অগ্নিকান্ডে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে এতিমখানার আবাসিক শিক্ষার্থীদের আসবাবপত্রসহ বই খাতাপত্র।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারী) বিকালের দিকে মাটিরাঙ্গা ইসলামিয়া এতিমখানায় অগ্নিকান্ডের এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, আসরের নামাজের সময়ে এতিমখানার আবাসিক শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসার পাশেই চেয়ারম্যানপাড়া জামে মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিল। এসময় হঠাৎ করে এতিমখানার আবাসিক ভবনে আগুনের সুত্রপাত হয়। কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুহুর্তের মধ্যেই আগুনের লেলিহান শিখা এতিমখানা ছাড়িয়ে মাটিরাঙ্গা ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার পুরনো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুরো ভবন আগুনের ধোঁয়ায় অন্ধকার হয়ে যায়। এ সময় শিক্ষার্থীদের বই, পোশাক, খাবারসহ মাদ্রাসার ২০০ ফুট দৈর্ঘের ইউ আকৃতির ভবনের ৫টি শ্রেনিকক্ষসহ সকল আসবাবপত্র ভস্মীভূত হয়ে যায়।
আগুন লাগার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট এলাকাবাসীর সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। ততক্ষনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় এতিমখানার আবাসিক ছাত্রদের বই-খাতা, বেডিং, ট্রাংক ও আসবাবপত্র।
বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়েছে বলে জানিয়েছে মাটিরাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস ইউনিটের স্টেশন ইনচার্জ মো. হারুন। তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আগুন নেভাতে সক্ষম হই। এতে প্রায় ১৫/২০ লাখ টাকার ক্ষতি হতে পারে বলে তিনি জানান।
আগুন লাগার খবর পাওয়ার পরপরই ঘটনাস্থলে ছুটে যান মাটিরাঙ্গা জোন অধিনায়ক লে. কর্নেল কৌশিক জাহান-পিএসসি, মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনজুর আলম, মাটিরাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি মো. শাহজালাল কাজল, মাটিরাঙ্গা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ইব্রাহিম পাটোয়ারী, মাটিরাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান ও মাটিরাঙ্গা পৌর জামায়াতের আমীর মো. আব্দুল জলিল অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থ মাদ্রাসা ও এতিমখানা পরিদর্শন করেন। এসময় তারা এতিম খানার আবাসিক শিক্ষার্থীদের প্রতি সমবেদনা জানান। এ সময়ে, মাটিরাঙ্গা ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কাজী মো. সলিম উল্ল্যাহ ছাড়াও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এতিমখানার তত্বাবধায়ক মো. আবুল কাশেম বলেন, তিনি তখন আসরের নামাজ পড়ছিলেন, মসজিদ থেকে বের হয়েই দেখেন সব পুড়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপুর্ণ কাগজপত্র ও আসবাবপত্রসহ কোনকিছুই রক্ষা করতে পারেননি।
মাটিরাঙ্গা ইসলামিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কাজী মো. সলিম উল্ল্যাহ বলেন,
আমি অফিসেই ছিলাম আছরের নামাজ পড়ে বাজারে গিয়েই শুনতে পাই এতিমখানা ও মাদ্রাসার পুরনো ভবনে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। আমি এসেই দেখি সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনজুর আলম বলেন, ইতিমধ্যে এতিমখানার আবাসিক ছাত্রদের অন্যত্র থাকা খাওয়ার ব্যবস্থাসহ অগ্নিকান্ডে এতিমদের পুড়ে যাওয়া জামা কাপড় কিনে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শীঘ্রই পুড়ে যাওয়া ভবনটি নির্মাণ করা হবে বলেও জানান তিনি।