• শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৩২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
ফেসবুক স্ট্যাটাস কলেজ ছাত্রের, কর্ণফুলী নদীতে মিলল মরদেহ খাগড়াছড়িতে সংঘাতের জেরে সহিংসতা ও নাশকতা রোধে ১৪৪ ধারা জারি রুখতে হবে ষড়যন্ত্র- আলমগীর কবির গোয়ালন্দে অটোরিকশা সহ চোর চক্রের প্রধান আটক জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধে বান্দরবানে জলবায়ু ধর্মঘট রাঙ্গামাটিতে উপজাতি সন্ত্রাসী কতৃক মসজিদে হামলার প্রতিবাদে লংগদুতে বিক্ষোভ মিছিল খাগড়াছড়িতে সহিংস ঘটনায় নিহত ৩- আহত ৯ খাগড়াছড়ির দীঘিনালার লারমা স্কয়ার দুই পক্ষের বিরোধে বাজারে আগুন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, বরকল উপজেলায় কমিটি ঘোষণা রামগড়ে বিজিবি ও পুলিশের যৌথ অভিযানে ভারতীয় পণ্যসহ আটক ২ লক্ষ্মীছড়ি কলেজে শিক্ষক পরিষদ গঠন সেনাবাহিনী ও বিদ্যানন্দের উদ্যোগে “এক টাকায় বাজার” 

রাত পোহালে খাগড়াছড়ি সদরসহ তিন উপজেলায় নির্বাচন

ডেস্ক রির্পোট: / ১৩৮ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

ডেস্ক রির্পোট:

৬ষ্ট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপে নানা শঙ্কার মধ্যে ২১ মে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা সহ তিন উপজেলা পরিষদে নির্বাচন। ভোট গ্রহণে এরই মধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে নির্বাচনী সরঞ্জাম। নিরাপত্তা বজায় রাখতে প্রতিটি কেন্দ্রে আনসার ভিডিপি ও পুলিশের পাশাপশি মোতায়েন করা হয়েছে বিজিবি। এছাড়া জেলা সদর ও উপজেলায় টহলে থাকবে র‌্যাব।

এবার খাগড়াছড়ি সদর, পানছড়ি ও দীঘিনালাসহ তিন উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ১০জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১২জন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। তার মধ্যে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৬জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছে ৩জন প্রার্থী।

নির্বাচনে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর বিরুদ্ধে কেন্দ্র দখলসহ সহিংসতার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. দিদারুল আলম (আনারস প্রতীক)। আর জেলার শেষ প্রান্ত ভারত সীমান্তবর্তী পানছড়ি উপজেলায় পাহাড়ের দুই আঞ্চলিক সংগঠনের প্রার্থীর কারণে সংঘাতের আশঙ্কায় শঙ্কিত ভোটাররা।

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম (আনারস), সদর উপজেলা আ.লীগের কোষাধ্যক্ষ ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মো. আকতার হোসেন  (মোটরসাইকেল), ৩নং গোলাবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জ্ঞান রঞ্জন ত্রিপুরা  (কৈ মাছ), জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম (লাঙল), বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুশীল জীবন ত্রিপুরা (টেলিফোন) ও ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক সন্তোষিত চাকমা বকুল (দোয়াত-কলম) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। সদর উপজেলায় ৪১টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ৯২ হাজার ৮৬৪ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪৭ হাজার ৮৯৫ আর নারী ভোটার ৪৪ হাজার ৯৬৯জন।

সদর উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে মো. আসাদ উল্লাহ (বই), ক্যউচিং মারমা (তালা), মো. আবু হানিফ (টিয়াপাখি), মো. এরশাদ হোসেন (চশমা) ও শাহাবুদ্দিন সরকার (টিউবওয়েল)। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে কল্যাণী ত্রিপুরা (কলস), নিউসা মগ (প্রজাপতি) ও নারী উদ্যোগক্তা নিপু ত্রিপুরা (ফুটবল) প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।

এদিকে, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম পৌর এলাকার ৬টি কেন্দ্র দখল ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ভোট বানচালের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর বিরুদ্ধে। তিনি ১৯ মে রবিবার দুপুরে শহরের নারিকেলবাগানস্থ তার প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ অভিযোগ করে। এ বিষয়ে প্রশাসন ও সাংবাদিকদের সহযোগীতা চেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানান। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরে সাংবাদিকদের দিদারুল আলম জানান, জৈনক প্রার্থী নিজেকে স্থানীয় প্রতিমন্ত্রী ও পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সমর্থীত প্রার্থী বলে মিথ্যাচার করে ভোটারদের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। যা আদৌ বিন্দু মাত্রও সত্য নয়।

অন্যদিকে, ভারত সীমান্তবর্তী পানছড়ি উপজেলায় গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৫টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১১টি কেন্দ্রে ভোট ছিলো শূন্য। আর অপর একটি কেন্দ্রে ভোট পরেছে মাত্র ১টি তাও নৌকায়। তবে এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কোন নেতাকর্মী চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়নি। এখানে পাহাড়ের দুই আঞ্চলিক সংগঠন মূল ইউপিডিএফ প্রসীত খীসা ও ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।

পানছড়িতে চেয়ারম্যান পদে মূল ইউপিডিএফ প্রসীত খীসা সমর্থিত চন্দ্রদেব চাকমা (কাপ-পিরিচ) ও ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মিটন চাকমা (আনারস)। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪জন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছে ২জন প্রার্থী। ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়নাথ দেব (তালা), লোকমান হোসেন  (বৈদ্যুতিক বাল্ব), সৈকত চাকমা (টিউবওয়েল) ও কিরণ ত্রিপুরা (চশমা)। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনিতা ত্রিপুরা (ফুটবল) ও সুজাতা চাকমা (কলস) প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। পানছড়ি উপজেলায় মোট ভোটার ৫৬ হাজার ৫ ভোট। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ২৮ হাজার ২৪ ভোট ও নারী ভোটার ২৭ হাজার ৯৮০।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলার শেষ প্রান্ত ও ভারত সীমান্তবর্তী এ এলাকার একাধিক ভোটার জানিয়েছেন, পাহাড়ের সশস্ত্র দুই আঞ্চলিক সংগঠনের প্রার্থী থাকার কারণে উপজেলার সাধারণ ভোটাররা নির্বাচনের দিন সংঘাতের আশঙ্কায় আতঙ্কিত।

দীঘিনালায় চেয়ারম্যান পদে ২জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩জন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২জন। চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান মো. কাশেম (আনারস) ও মূল ইউপিডিএফ প্রসীত খীসা সমর্থিত প্রার্থী ধর্ম জ্যোতি চাকমা (মোটরসাইকেল)। ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোস্তফা কামাল (টিউবওয়েল), সোলাইমান (টিয়াপাখি) ও সুসময় চাকমা (চশমা)। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সীমা দেওয়ান (কলসি) ও বিলকিছ বেগম (প্রজাপতি) প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এখানে মোট ভোটার ৯০ হাজার ১৯৪। তার মধ্যে ৪৬ হাজার ৮১ জন পুরুষ ভোটার আর নারী ভোটার ৪৪ হাজার ১১২ জন। গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দীঘিনালায় তিনটি কেন্দ্র ছিল ভোট শূন্য আর পাঁচটি কেন্দ্রে ভোট পড়েছে মাত্র ১৮ টি। এ উপজেলার দুর্গম নাড়াইছড়িতে ভোটার সরঞ্জাম গেছে হেলিকপ্টারে।
রিটার্নিং অফিসার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জোনায়েদ কবীর সোহাগ জানিয়েছেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসনের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে সকল প্রার্থীর সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছেন। প্রার্থীদের নির্বাচনের আচরণবিধি মেনে প্রচারণা চালানোর অনুরোধ জানিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, আচরণ বিধি লঙ্ঘিত হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু করতে প্রতিটি উপজেলাতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সমন্বয়ে মনিটরিং করা হচ্ছে।
এদিকে ২০ মে সোমবার সকালে এক প্রেস ব্রিফিং এ খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মুক্তা ধর পিপিএম (বার) বলেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ও নিরাপদে ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরতে পারে তার জন্য পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব-বিজিবিসহ চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।

পাহাড়ে জাতীয় রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি সশস্ত্র আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠনগুলো নানা ভাবে আলোচিত ও সমালোচিত। তাই ৬ষ্ট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কাজ করে নানামুখী সমীকরণ।  এ নির্বাচনেও কোন কোন প্রার্থী নির্বাচিত হবেন, তা অপেক্ষা করতে হবে নির্বাচনের শেষ দিন ভোটের ফলাফল ঘোষণা না করা পর্যন্ত।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ