আব্দুল মান্নান স্টাফ রিপোর্টার (খাগড়াছড়ি)
জনবল সংকট,ওষুধের অপ্রতুলতাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলা প্রাণী দপ্তর! সাম্প্রতিক সময়ের তীব্র তাপপ্রবাহে উপজেলার ছোট-বড় ১৫০ ডেইরি ও ছাগল ফার্ম এবং ২৫০ পোল্ট্রি খামারে চলছে হাঁসফাঁস অবস্থা! চলতি মাসে হিটস্ট্রোকে ১৫ টি গাভী ও প্রায় ৪০ হাজার মোরগী মৃত্যু! উপজেলায় পোল্ট্রি ও ডেইরি’র সম্ভাবণা শিল্প থাকা স্বত্ত্বেও একমাত্র প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ২জন মাঠ কর্মকর্তা ও একজন অফিস সহায়ক ছাড়া জনবলের ৮টি পদই শুন্য থাকায় চিকিৎসা সেবা হুমকির মুখে পড়ছে!
গত রোববার সকাল সাড়ে ১১ টায় প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ে গিয়ে যায় শুনশান নীরবতা বিরাজ করছে! সকাল থেকে ওই সময় পর্যন্ত মাত্র ৪জন সেবা গ্রহীতা ভ্যাকসিন নিতে আসলেও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ! চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল ওষুধের কারণে নামমাত্র ওষুধ দিয়ে হলেও সকলকে তুষ্ট করার চেষ্টায় বিতরণে কিছুটা কৃচ্ছসাধন করা হচ্ছে বলে দাবী করেন প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা! গচ্ছাবিলের মো. সোহেল মিয়া জানান, ঈদের একদিন আগে জন্ম নেওয়া আমার ছোট মোরগের বাচ্চার শরীরে প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা দিতে না পারায় প্রায় ৪০০ শতাধিক বাচ্চা অপুষ্টি( কেট) হয়ে গেছে!
উপজেলার পোল্ট্রি খামার ব্যবসায়ী ও বোরহান পোল্ট্রির স্বত্বাধিকারী মো.বোরহান উদ্দিন বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহের পাশাপাশি লোডশেডিং এখানে নিত্যচিত্র! ফলে বড় পোল্ট্রি খামারে বিদ্যুতের বিকল্প জেনারেটরে পরিবেশ শীতল করার চেষ্টা হলেও ছোট পোল্ট্রিতে বিদ্যুতের বিকল্প কিছু নেই! ফলে ১৫/১৬ ঘণ্টার লোডশেডিংয়ে প্রতিদিন গড়ে ১৫০০-২০০০মোরগ মারা যাচ্ছে!
উপজেলার সবচেয়ে বড় ইকবাল ডেইরির স্বত্তাধিকারী ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় ডেইরী এসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, মানিকছড়িতে প্রাণী সম্পদ অফিস জনবল ও ওষুধের সংকট প্রকট হওয়ায় তাঁদের কোন সেবাই আমরা পাই না! এছাড়া তীব্র তাপপ্রবাহ ও লোডশেডিংয়ে ডেইরি ফার্মে প্রজননে সমস্যা হচ্ছে! উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোস্তফা কামাল বলেন, উপজেলায় ১১পদের বিপরীতে এখানে কর্মরত ৪জন! প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ২জন মাঠ কর্মকর্তা ও একজন অফিস সহায়ক ছাড়া জনবলের ৮ পদ শুন্য! ভেটেরিনারি সার্জন, উপসহকারী প্রাণী সম্পদ, উপসহকারী সম্প্রসারণ ও উপসহকারী কৃত্রিম প্রজনন, অফিস সহকারী, ড্রেসার, কম্পাউন্ডার না থাকায় বিশেষ করে প্রজনন কার্যক্রম বন্ধ! এতে করে উপজেলার ১৫০ শতাধিক ছাগল ও ডেইরি ফার্মের প্রজননে শহর থেকে চিকিৎসক আনতে গিয়ে অধিক লোকসান গুনতে হচ্ছে খামার মালিকদের! তীব্র তাপপ্রবাহ ও লোডশেডিংয়ের ফলে প্রতিদিন ২৫০ পোল্ট্রি’তে গড়ে ১০০০-১৫০০ মোরগ মারা যাচ্ছে । তিনি আরও জানান,চলতি মাসের অসহনীয় দাবদাহে উপজেলায় অন্তত ১৫টি প্রিজিয়াম গাভী হিটস্ট্রোকে মারা গেছে!