• সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ০৫:১৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
রামগড়ে নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে সাংবাদিকদের সৌজন্য সাক্ষাৎ সিএজি কার্যালয়ের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী এবং বিশেষ সেবা কার্যক্রম উপলক্ষ্যে কাপ্তাইয়ে আলোচনা সভা  বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে কাপ্তাইয়ে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত আবারও শতভাগ পাসের রেকর্ড ধরে রেখেছেন কাপ্তাই নৌবাহিনী স্কুল এন্ড কলেজ : জিপিএ (৫) পেল ৩৮ জন আর্ন্তজাতিক নাসিং দিবস উপলক্ষে চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতালে নানা আয়োজন  দৌলতদিয়া পদ্মা পার ভাঙন রোধে জিওব্যাগ ফেলছে বিআইডব্লিউটিএ রাজস্থলী উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে ৬ দিনব্যাপী বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ শুরু  পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সাথে নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধি’র সৌজন্য স্বাক্ষাত কাপ্তাই পাহাড়িকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মিলন মেলায় নবীন প্রবীনদের মেল বন্ধন ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজে ভর্তিচ্ছুকদের জন্য ছাত্র পরিষদের ‘হেল্প ডেস্ক’ ডংনালা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি   কর্তৃক প্রধান শিক্ষক লাঞ্চিত হবার অভিযোগ মহেশখালী’র নবনির্বাচিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান’র সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়

যুবলীগ থেকে পদত্যাগ না করায় অপহরণ করলো জেএসএস

স্টাফ রিপোর্টার / ১১৪ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪

 

বিশেষ প্রতিনিধি,পার্বত্য অঞ্চল:
রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়ায় গত ৭ এপ্রিল থেকে স্থানীয় দু’জন জনপ্রতিনিধি নিখোঁজ রয়েছে; স্থানীয়রা জানায় তাদেরকে (জেএসএস সন্তু) দল কর্তৃক অপহরণ করা হয়েছে।

নিখোঁজ দু’জনের একজন রাজস্থলী উপজেলাধীন বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার ক্যাচিংহ্লা মারমা (৩৪) ও অপরজন ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি ইখ্যাইমং মারমা (৩৬)। নিখোঁজদের মধ্যে ক্যাচিংহ্লা মারমা’র স্ত্রী বাঙ্গালহালিয়াস্থ চন্দ্রঘোনা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এদিকে ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার ক্যাচিংহ্লা মারমার ঘনিষ্ঠ জনরা জানিয়েছে, গত ৭ই এপ্রিল সকালে বাঙ্গালহালিয়া বাজারে এসে দুই মেম্বার এক সাথেই নিখোঁজ হয়। এই ঘটনার পর থেকেই তাদের খোঁজে বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করেও কোনো খবর পায়নি পরিবার। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, অপহৃত দু’জনকেই উপজাতীয়দের আঞ্চলিক সংগঠন জেএসএস সন্তু দলের পক্ষ থেকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়েছিলো।
এই হুমকির কারনেই ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার ইখ্যাইমং মারমা প্রাণভয়ে আগাপাড়া না থেকে বাঙ্গালহালিয়া বাজারে তালুকদার মার্কেটের তিন তলায় স্বপরিবারে বসবাস করতেন। এভাবে তারা ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

নিখোঁজে’র দিন তারা দুইজন একসাথে বাজারে আসেন। তারপর থেকে তারা অদ্যবধি নিখোঁজ রয়েছে। তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ ও তাদের সাথে কোন প্রকারের যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে নিখোঁজের পরিবার ক্যাচিংহ্লা মারমা এর স্ত্রী চন্দ্রঘোনা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন যার নাম্বার-৩৫৫, ১০/০৪/২০২৪ইং। পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, নিখোঁজদের সর্বশেষ অবস্থান বান্দরবানে তারা জানতে পেরেছেন।

এই দু’জন মেম্বার অপহরণের অনুসন্ধান করতে গিয়ে যে তথ্য গুলো জানা যায় তা রীতিমতো গা শিউরে উঠার মত, কারণ পাহাড়ে একটা সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল কিভাবে মানুষের মাঝে ভীতি ছড়িয়ে দিয়ে তাদের নিজেদের অবৈধ শাসন ও নিয়ন্ত্রণ চালু রেখেছে চাঁদাবাজি, খুন, অপহরণ করার মাধ্যমে তা স্পষ্ট হয়েছে হত্যা ও অপহরণের তথ্য বের করতে গিয়ে। পার্বত্য চট্টগ্রামে তাদের কথার বাহিরে বা তাদের স্বার্থের বাহিরে একচুল পরিমাণ যেতে দেয় না স্থানীয় বাসিন্দা কাউকেই। গেলেই তার পরিণতি হয় অপহরণ না হয় হত্যা।

অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, নিখোঁজ হওয়া বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার ইখ্যাইমং মারমার মামা ক্যাহ্লাচিং মারমার সাথে জেএসএস এর বিরোধ ছিল। তিনি জীবিত থাকা অবস্থায় আওয়ামীলীগে যোগ দেন এবং ইউনিয়ন আওয়ামী যুব লীগের সহ সভাপতি পদ লাভ করেন। তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করা এবং উক্ত পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার কারণে তার ওপর সন্ত্রাসী দল সন্তু দল বিভিন্ন ভয় ভীতি প্রদর্শন করে যুবলীগ থেকে বের হয়ে আসার হুমকি প্রদান করে। সে যখন যুবলীগ থেকে পদত্যাগ করবে না বলে জানায় তখন তাকে জেএসএস সন্তু দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে। এ বিষয়টি তার স্ত্রী ও ভাগ্নে মেনে নিতে না পেরে স্ত্রী বাদি ও উক্ত ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার ইখ্যাইমং মারমা সাক্ষী হয়ে চন্দ্রঘোনা থানায় সন্তু দলের সন্ত্রাসীদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলা করার কারনে জেএসএস সন্তু দলের সন্ত্রাসীরা তাকে ও তার পরিবারকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করেন। পরবর্তীতে তাদের চাপ সইতে না পেরে ইখ্যাইমং মারমা দেশ ত্যাগ করে মায়ানমার হয়ে মালয়েশিয়া চলে যায়। আনুমানিক দেড় বছর পর সে দেশে ফেরার পরও তাকে তারা হুমকি দেয়। সে তার নিজ বাড়ি, রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের ন্যাইক্কাছড়া আগাপাড়া জেএসএস অধ্যুষিত এলাকায় না থেকে বাঙ্গালহালিয়া বাজারে তালুকদার মার্কেটে তিনতলায় বসবাস শুরু করে ও সেখানে থেকেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আট নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার নির্বাচিত হন।
ইখ্যাইমং মারমা আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে তিনি গত ২০/০৪/২০২৩ থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন শাখার সিনিয়র সহ সভাপতি পদে অদ্যবদি সময় পর্যন্ত অধিষ্ঠিত রয়েছেন। এবং তিনি গত ৫-৬ বছর তার নিজ বাড়িতে বা ঐ এলাকায় যান না জেএসএস সন্তু দলের ভয়ে।

ইখ্যাইমং মারমাকে অপহরণের খোজ নিতে গিয়ে তাকে অপহরণের যে কারণ গুলো স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে জানা যায় তার মধ্যে অন্যতম হলো তার মামা কে হত্যার বিষয়ে তিনি প্রত্যক্ষদর্শী হিসাবে সাক্ষী হওয়া,
মামিকে দিয়ে মামলা করানো,নিজে আওয়ামী লীগে যোগদান করা ও যুবলীগের সহ-সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত হওয়া, তার শিক্ষাগত যোগ্যতাও একটি অন্যতম কারণ, জেএসএস এর বিভিন্ন সন্ত্রাসী মূলক অপকর্মের তথ্য জানা, আওয়ামী যুবলীগ থেকে পদত্যাগের জন্য জেএসএস সন্তু চাপ দেওয়ার পরও পদত্যাগ না করার কারণে জেএসএস সন্তু তাকে টার্গেট করেছে। এদিকে ক্লাচিংহ্লা মারমা ৭নং ওয়ার্ড মেম্বারের সাথে ইখ্যাইমং মারমা ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার এর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার কারণে তার ওপরও জেএসএস ক্ষুব্ধ হয়। মূলত এসব কারণেই এই দুইজন মেম্বারকে অপহরণ করে জেএসএস সন্তু দল।

অপহরণের পর গত (২১ এপ্রিল) দুপুর বারোটায় ক্লাচিংহ্লা মারমার স্ত্রীকে তিনটি নাম্বার
১।০১৮৮২-৩৮২৬২৬, ২।০১৮৭১-৫৭১৩১০
৩।০১৮৫৯-৫৩৬২৪৫ থেকে কল দিয়ে (জেএসএস সন্তু) দলের পরিচয় দিয়ে তার স্বামীকে ছেড়ে দিবে বলে ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবি করে এবং প্রশাসনের কাছে এ ব্যাপারে কোন কিচ্ছু বললে তার স্বামীকে পাবে না বলে ভীতি প্রদর্শন করে। দর কষাকষির মাধ্যমে ক্যাচিংহ্লা মারমার স্ত্রী ৫ লক্ষ টাকা দিবে বলে সন্তু গ্রুপকে রাজী করান। কিন্তু ভীত হয়ে ক্যাচিংহ্লা মারমার স্ত্রী ও তার পরিবার বিষয়টি গোপন রাখেন। তাদের কথানুযায়ী নিকট আত্মীয়র মধ্যে চার জন (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যা ছয়টায় নগদ ৫ লক্ষ টাকা সহ বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার একটি পাহাড়ের নিচে যায়। পাহাড়ের নিচে যাওয়ার পর সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষারত সন্তু দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ক্যাচিংহ্লা মারমার নিকট আত্মীয় চার জনের মধ্যে টাকা সহ শুধু মাত্র এক জনকে অন্য একটি পাহাড়ের পাশে যেতে বলে। সেখানে মুখোশ পরা এক জন এসে টাকা গুলো নিয়ে যায় এবং তাদেরকে চলে যেতে বলে ও তারা বলে ক্যাচিংহ্লাকে বান্দরবান সদর উপজেলার গলাচিপা এলাকায় ছেড়ে দিয়ে যাবে। অতঃতর তারা চলে আসে। পরবর্তীতে তাদেরকে মোবাইলে কল দিয়ে আর পাওয়া যায় না বলে জানায় ক্যাচিংহ্লা মারমার স্ত্রী।।টাকা দেওয়ার পরও এখন পর্যন্ত উক্ত মুক্তিপণ নেওয়া অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের সাথে কোনো যোগাযোগ করা যায়নি এবং ক্যাচিংহ্লা মারমা ও ইখ্যাইমং মারমারও কোন সন্ধান মেলেনি।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবার গত ২২ এপ্রিল ২০২৪ ইং তারিখে চন্দ্রঘোনা থানায় একটি মামলা রুজু করা হয় যার নং-০৪, তারিখ ২২/০৪/২৪। ইখ্যাইমং মারমার ‘মামাকে’ হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামলা ও বর্তমান অপহরণের ঘটনার যোগসূত্র রয়েছে। তাই মামলার এজহারের বিষয়টি তুলে ধরা হল। মামুইসাং মারমা ৩০ ( ইখ্যাইমং মারমা এর মামি) স্বামী: মৃত ক্যাহ্লাচিং মারমা সাং: বুংবাইদং পাড়া, ০৮ নাম্বার ওয়ার্ড, নাইক্যাছড়া আগাপাড়া, গ্রাম: বাঙ্গালহালিয়া, থানা: চন্দ্রঘোনা, কাপ্তাই, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা গত ২৫ মে ২০১৯ ইং তারিখে বাদি হয়ে ধারা ৪৪৮/৩০২/৩৪ পেনাল কোড, একই উদ্দেশ্যে বসত গৃহে অনধিকার প্রবেশ ও গুলি করিয়া হত্যা করার অপরাধে এক নাম্বার আসামী চাইসুইনুই মারমা (৫০) পিতাঃ মৃত মংখ্যাই মারমার নাম সহ ২০ জন জেএসএস সন্তু দলের সন্ত্রাসীর নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।

এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গত ১৯/০৫/২০১৯ ইং তারিখ রাত আনুমানিক ১০.০০ টার সময় আমার পরিবারের সবাই রাতের খাওয়া দাওয়া শেষ করে ঘুমিয়ে পড়ি। রাত ১০.৩০ এর সময় বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের আওতাধীন আগা পাড়ার, বুংবাইদং এলাকায় আমার বসতবাড়িতে আসিয়া উল্লেখিত বিবাদীদের মধ্যে কয়েকজন বিবাদী আমার নাম ধরে ডাক দিয়ে বলে তোমার স্বামী ক্যাহ্লাচিং মারমাকে ঘরের দরজা খুলে বের করে দাও অন্যথায় তোমার বড় ছেলে সিংমং উ মারমাকে ধরে নিয়ে যাব। আমি দরজা না খুললে বিবাদীগণ বন্ধুকের একটি ফাঁকা ফায়ার করে। এরপরেও আমি দরজা না খুললে উল্লিখিত বিবাদীগণের মধ্যে কয়েকজন বিবাদী আমার বসতবাড়ির চারিদিকে ঘিরে রাখে এবং একজন বিবাদী আমার রান্নাঘরে দরজায় পাহারা দেয়, তিনজন বিবাদী আমার রান্না ঘরের দরজা ভেঙে ঘরে অনধিকার প্রবেশ করে আমার স্বামীকে হত্যা করার জন্য বের করে দিতে বলে। আমি উক্ত বিবাদী গনের নিকট আমার স্বামীর প্রাণ ভিক্ষা চাই। কিন্তু বিবাদীগণ আমার কথা কর্ণপাত না করিয়া আমাকে ধাক্কা দিয়া ফেলিয়া দেয় এবং আমার পিছনে থাকা আমার স্বামী তথা ভিকটিম ক্যাহলাচিং মারমার বুকের উপর গুলি করিয়া বিবাদীগণ ঘর হতে বাহির হইয়া পালিয়ে যায়। যাহাতে আমার স্বামী ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করেন। এই অবস্থা দেখিয়া আমি ও আমার পরিবারের সদস্যগণ ডাক চিৎকার করিলে আশপাশ হইতে লোকজন আগাইয়া আসে। সংবাদ পাইলে থানা পুলিশের সদস্যগণ ঘটনাস্থলে আসিয়া আমার স্বামীর লাশ উদ্ধারপূর্বক সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত শেষে ময়না তদন্তের জন্য লাশ মরগে প্রেরণের ব্যবস্থা করেন। আমার ধারণা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা সহ পূর্ব শত্রুতার জের ধরিয়া উল্লেখিত বিবাদীগণ একই উদ্দেশ্যে আমার বসত করে অনধিকার প্রবেশ করিয়া আমার স্বামী তথা ভিকটিম ক্যহলাচিং মারমাকে আগ্নেয় অস্ত্র দ্বারা গুলি করিয়া হত্যা করে।

উল্লেখিত বিবাদীগণ সকলেই পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক দল (জেএসএস সন্তু) গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। এই সন্তু গ্রুপের সদস্যরাই দীর্ঘদিন যাবত পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্রের মহড়া দিয়ে নিরীহ মানুষকে বাড়ি হতে উঠিয়ে নিয়ে চাঁদাবাজি সহ খুন ও গুম করে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে। বিবাদীদের এহেন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না, সন্ত্রাসী কার্যকলাপের ধারাবাহিকতায় উক্ত বিবাদীগণ অত্র ঘটনা সংঘঠিত করিয়াছে। আমি আমার স্বামীর লাশের ময়না তদন্ত পরবর্তী ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী সৎকারের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে এবং আমার আত্মীয়-স্বজন সহ স্থানীয় লোকজনের জিজ্ঞাসাবাদে বিবাদীদের নাম ঠিকানা সংগ্রহপূর্বক বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করিয়া থানায় আসিয়া এজাহার দায়ের করিতে বিলম্ব হইল। উল্লেখ্য যে, আমি লিখতে না জানায় এযাহারে আমার হাতের টিপসই প্রদান করিলাম। তবে উল্লেখ্য যে, বর্নিত মামুসা মারমা কর্তৃক দায়েরকৃত মামলায় অধ্যবদি কোনো আসামিকে গ্রেফতার হয়নি। উপরের উল্লেখিত ঘটনা গুলোর আলোকে স্পষ্ট পাহাড়ে কি পরিমাণে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে জেএসএস সন্তু দলের সন্ত্রাসীরা। ক্যাহ্লাচিং মারমা যুবলীগের সহ সভাপতি পদে থাকা অবস্থায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন, তার জনপ্রিয়তাকে ভয় পেয়ে ও তিনি আওয়ামীলীগের ব্যানারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করলে বিপুল ভোটে জয়ী হবে এই আশংকায় মূলত জেএসএস সন্তু দলের সন্ত্রাসীরা তার বাসায় ঢুকে অত্যান্ত নৃশংস ভাবে তাকে হত্যা করে। পার্বত্য চট্টগ্রামে জেএসএস সন্তু গ্রুপ অঘোষিত মাফিয়া শাসন জারি করে রেখেছে, কেউ তাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে গেলে ও অন্য দল করলেই তাকে হত্যা, অপহরণ, খুন করা হচ্ছে। ক্যাহ্লাচিং মারমাকে হত্যা করেই জেএসএস ক্ষান্ত হয়নি, হত্যা মামলায় স্বাক্ষী হওয়ায় তার ভাগ্নে ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার ইখ্যাইমং মারমাকেও অপহরণ করা হয়েছে ও ইখ্যাইমং এর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার ক্যাচিংহ্লা মারমাকেও অপহরণ করেছে জেএসএস সন্তু গ্রুপ। এতোদিনে হয়তো তাদের মেরে ফেলছে তারা।
কতটা ভয়ংকর ও প্রতিহিংসা পরায়ণ এই জেএসএস সন্তু দল ভেবে দেখুন, নির্বাচন হলে ভোটে জয়ী হতে পারবেনা সেজন্য অন্যদলের জনপ্রিয় একজন ব্যক্তি কে তার নিজ বসত ঘরে ঢুকে কিভাবে হত্যা করলো? বাংলাদেশের যেকোন স্থানে নির্বাচন হলে উৎসব মুখর পরিবেশ থাকে, আর পার্বত্য চট্টগ্রামে মানুষ আতংকে থাকে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থানীয় সরকার নির্বাচনসহ যে নির্বাচনই হোক না কেন জেএসএস যদি আংশকা করে তার বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জনপ্রিয় ও জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি তাহলে তাকে হত্যা না হয় অপহরণ করে। নির্বাচন আসলেই পাহাড়ে জেএসএস সন্তু দল কর্তৃক হত্যা ও অপহরণের মাত্রা বেড়ে যায়। তাই মানুষ তাদের ভয়ে সব সময় আতংকে থাকে। এছাড়াও জেএসএস সন্তু দলের বাহিরে গিয়ে কেউ জাতীয় রাজনীতি অথবা অন্য যে কোন দল করলে তাদের উপরও নির্যাতন চালানো শুরু করে এবং অপহরণ না হয় হত্যা করে।

এই জেএসএস সন্তু দলের নেতারাই বিভিন্ন সভা সেমিনারে মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলে, মানবাধিকারের কথা বলে। অথচ পার্বত্য চট্টগ্রামে সব চেয়ে বেশি মত প্রকাশে বাধা দিচ্ছে ও মানবাধিকার লংঘন করছে তারাই। পাহাড়ে জেএসএস সন্তু দলের মতের বিপরীতে যেই যাক না কেন হোক সে পাহাড়ি কিংবা বাঙালি কেউ রেহাই পাচ্ছে না এই সন্তু দলের সন্ত্রাসীদের হাত থেকে। তাই পাহাড়ে শান্তি ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে আঞ্চলিক সন্ত্রাসী দল জেএসএস সন্তু ও ইউপিডিএফ প্রসিত গ্রুপের সন্ত্রাসীদের দমন করার জন্য সরকারের নিকট আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ