আব্দুল মান্নান স্টাফ রিপোর্টার (খাগড়াছড়ি)
৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচনে খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি, রামগড় ও মাটিরাংগা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ১৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ ১৫জন ও মহিলা ৯ জনসহ ৩৭জন প্রার্থী প্রতীক নিয়ে জোরেশোরে প্রচারণায় নেমেছেন। তিন উপজেলায় সদ্য দায়িত্ব ছেড়ে আবারও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩জন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ! এরা আ.লীগের পদ-পদবী ও জনপদে নানা উন্নয়ন কর্মকান্ড থাকার সুযোগে এবারও লড়াইয়ে নিজেদের নির্ভার মনে করছেন! নতুন করে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসা হেভিওয়েট প্রার্থীরাও তৃণমূলের শীর্ষ জনপ্রতিনিধি পদ দখলে মরিয়া।
সরজমিনে ভোটার ও প্রার্থী সূত্রে জানা গেছে, জেলার চার উপজেলায় ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের ভোটে মানিকছড়ি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগের দুই মেয়াদের সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন( আনারস)এবারও জোরেশোরে প্রচারণা শুরু করেছেন। তিনি গণমানুষের ভালোবাসায় এবার নির্ভার! তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বি দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম (দোয়াত কলম)। তিনি নিরপেক্ষ ভোটে জয়ের আশায় ভোটারের দ্বারে দ্বারে সুকৌশলে এগুচ্ছেন। অন্যদিকে নতুনমুখ মো. আবদুল হামিদ( মোটরসাইকেল) নিজের পরিচিত ও নতুন প্রজন্মদের নিয়ে সমাজ গঠনে মাঠে নেমেছেন। (ভাইস চেয়ারম্যান ( পুরুষ) পদে মো. জাহেদুল আলম মাসুদ( তালা)মো. সামায়উন ফরাজী সামু(টিউবওয়েল) মো. মোকতাদের হোসেন( বই) ও চলাপ্রু মারমা নিলয়( মাইক) মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রাহেলা আক্তার( ফুটবল)ও নূরজাহান আফরিন লাকি(হাঁস))
লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় সবাই নতুনমুখ। চেয়ারম্যান পদে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউপিডিএফ(মূল) নেতা সুপার জ্যোতি চাকমা( কৈ মাছ)ও একই সংগঠনের নেতা রতন বিকাশ চাকমা( হেলিকপ্টার) এবং উপজেলা আ.লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সাথোয়াইঅং মারমা(আনারস) প্রার্থী হয়েছেন। এখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস! ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ পদে রতন বিকাশ চাকমা (টিউবওয়েল)ও রাজেন্দ্র চাকমা( চশমা) এবং মহিলা পদে মিনুচিং মারমা (পদ্মফুল) ও অয়ক্রইপ্রু মারমা( ফুটবল)।
রামগড় উপজেলায় সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্ব প্রদীপ কুমার কার্বারী (আনারস) আবারও প্রার্থী হয়েছেন। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও খাগড়াছড়ি সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার জামাতা! তিনি নিজেকে মাঠে নির্ভার মনে করলেও ভোটারদের মাঝে তাঁর অবস্থান নড়বড়! এখানে নতুনমুখ আসার সম্ভাবনা বেশি । অন্য প্রার্থী হলেন, পৌর আ.লীগ নেতা মো. আব্দুল কাদের( দোয়াত কলম) ও সাবেক জেলা ছাত্রদল সভাপতি কংজঅং মারমা (ঘোড়া)।
পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে মো. আনোয়ার ফারুক (টিয়া পাখি), মো. মোবারক হোসেন ( চশমা),মো. নুরুল আমীন(টিউবওয়েল), শামসুদ্দিন মিলন( তালা), মো.ওমর ফারক(মাইক)এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাছিনা আক্তার(কলস)ও নাছিমা আহসান নীলা( প্রজাপতি)।
মাটিরাংগা উপজেলায় সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম( আনারস) আবারও প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর অতীত কর্মকান্ডে তেমন খুঁত না থাকায় তিনি অনেকটা নির্ভার! এ পদে আ.লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবুল কাশেম ভুইঁয়া (কৈ মাছ), মো. তাজুল ইসলাম (মোটরসাইকেল) ও সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. রহিছ উদ্দিন(দোয়াত কলম)প্রার্থী হয়েছেন। তবে ভোটারদের ধারণা এখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।
ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ মো. জালাল মিয়া( তালা), মো. দেলোয়ার হোসেন(মাইক), আলী হোসেন(চশমা) ও অনি রঞ্জন ত্রিপুরা(বই)। ভাইস চেয়ারম্যান মহিলা আমেনা বেগম( ফুটবল), হাছিনা বেগম( কলস) ও মনোয়ারা বেগম (হাঁস)। গতকাল বুধবার প্রচারণার দ্বিতীয় দিনেও তৃণমূলে মাইকিং, পোস্টার নিয়ে কর্মীরা প্রচারণায় মেতে উঠেছে এবং প্রার্থীরা গণসংযোগ করেছে।
মানিকছড়ি উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও ৫ম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পর এবং দলের দুই মেয়াদে সভাপতি হয়ে তৃণমূলে দল সংগঠিতের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু’র সোনার বাংলার স্বপ্ন এবং শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উন্নয়নে কাজ করায় আবারও বিপুল ভোটে জনগণ আমাকে নির্বাচিত করবে বলে আশাবাদী।