এম মহাসিন মিয়া, স্টাফ রিপোর্টার (খাগড়াছড়ি)।
মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন। পেশায় একজন সফল গাছ ব্যবসায়ী। “এক ইঞ্চি মাটিও অনাবাদি থাকবেনা” বাংলাদেশ সরকারের এমন ঘোষণা এবং মানব, প্রকৃতি ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এমন চাষকে নিরুৎসাহিত করতে নিজ উদ্যোগে ৮ একর জমিতে চাষ করেন ভুট্টা। পাশাপাশি আরও ২ একর জমিতে চাষ করে রবিশস্য। অবশেষে হলেন, এ বছরের উপজেলার শ্রেষ্ঠ চাষী। পেয়েছেন পুরস্কার, সম্মাননা ক্রেস্টও।
গত ২৫ মার্চ সোমবার দীঘিনালা উপজেলার কৃষিতে বিশেষ অবদানের জন্য উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ কৃষক হিসেবে পুরস্কার ও সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয় তাকে।
৮ একর জমিতে ভুট্টা ও ২ একর জমিতে রবিশস্য চাষের পাশাপাশি বোরহান উদ্দিন করেছেন একটি গরু ও ছাগলের খামারও। খামারে পালিত গরুর খাদ্য ঘাস হিসেবে খাওয়ানো হচ্ছে ভুট্টা গাছের কাচা ও কচি পাতা। খামারে ২৫টি বিভিন্ন জাতের গরু এবং ২০টি ছাগল রয়েছে। খামারে দুগ্ধজাত গরু থেকে প্রতিদিন গড়ে ১৮ থেকে ২০ কেজি দুধ হয়। যার খুচরা মূল্য প্রায় ২ হাজার টাকা, আর প্রতি মাসে দুধ বিক্রি হয় প্রায় ৬০হাজার টাকা।
উপজেলার মেরুং ইউপির হাজাছড়া এলাকায় তার চাষকৃত বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে ও গরু-ছাগলের খামারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৮ এর জমিতে ভুট্টা চাষ ও ২ একর জমিতে রবিশস্য চাষের পাশাপাশি গরু-ছাগলের খামারে মাসিক বেতনে ৩জন কর্মচারী কাজের পাশাপাশি দেখাশুনা করছেন। তাছাড়া ভুট্টা ও রবিশস্যের কাজ করছে আরও একাধিক দিনমজুর।
সংশ্লিষ্টদের মতে, বোরহান উদ্দিন শুধু সফল চাষীই নয়, তার চাষের কারণে স্থানীয় প্রায় ১০জন বেকারের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। যেকারণে পুরো মেরুং এলাকায় প্রশংসা কুড়াচ্ছে বোরহান উদ্দিন।
স্থানীয় প্রাথমিক শিক্ষক আবদুর রাজ্জাক বলেন, বোরহান উদ্দিন ভাই একজন সফল গাছ ব্যবসায়ী বলে জানি। সম্প্রতি সে উপজেলার শ্রেষ্ঠ কৃষকের পুরস্কার পেয়েছেন। আমি মনে করি তিনি শুধু পুরস্কারেই সীমাবদ্ধ নন, বোরহান উদ্দিন ভাই পুরো উপজেলায় কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়েছেন।
চাষী বোরহান উদ্দিন বলেন, “এক ইঞ্চি মাটিও অনাবাদি থাকবেনা” বাংলাদেশ সরকারের এমন ঘোষণা শুনে গাছ ব্যবসার পাশাপাশি মানব, প্রকৃতি ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এমন চাষকে নিরুৎসাহিত করতেই নিজ উদ্যোগেই ৮ একর জমিতে ভুট্টা ও ২ একর জমিতে রবিশস্য চাষ করি। পাশাপাশি একটি গরু-ছাগলের খামার করেছি। ভুট্টা, রবিশস্য ও খামার করে ব্যাপক লাভের সম্ভাবনা দেখছি আমি। চাষের শুরু থেকেই উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে সকল প্রকার সহযোগিতাও পেয়েছি। সম্প্রতি আমাকে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর ও প্রশাসন থেকে শ্রেষ্ঠ চাষীর পুরস্কার ও সম্মাননা ক্রেস্ট দেয়া হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, বোরহান উদ্দিন ভুট্টা ও রবিশস্য চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। আমরা তাকে শ্রেষ্ঠ চাষি হিসেবে নির্বাচিত করে পুরস্কৃত করেছি। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর বোরহান উদ্দিন সহ এমন সকল চাষীদের পাশে থাকবে সবসময়।