মোঃ সালাউদ্দিন:- গত ১১/১১/২০২৩ খ্রি. দুপুর অনুমান ১৩:০৫ ঘটিকায় খাগড়াছড়ি পৌরসভার স্বপ্ন মোহন কারবারী এলাকার তিন রাস্তার মোড়ে ভিকটিম সুজন্ত ত্রিপুরা প্রকাশ সুজন (২৪) কে অজ্ঞাতনামা আসামীরা হত্যা করে পালিয়ে যায়।
উক্ত চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনার বিষয়ে ভিকটিমের স্ত্রী সুজিতা ত্রিপুরা (২২) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে খাগড়াছড়ি সদর থানায় এজাহার দায়ের করেন।
এজাহার প্রাপ্তির সাথে সাথে খাগড়াছড়ি জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মুক্তা ধর, পিপিএম (বার) উক্ত চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উম্মোচন ও ঘাতকদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে খাগড়াছড়ি সদর থানার অফিসারদের সমন্বয়ে একটি চৌকস টিম গঠন করে এবং হত্যা মামলাটি গভীর ও নিবিড় ভাবে তদন্ত করে রহস্য উম্মোচনের জন্য সার্বিক দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।
পুলিশ সুপার মুক্তা ধর, পিপিএম (বার)এর সার্বিক দিকনির্দেশনা ও তত্ত্ববধানে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণে উক্ত ক্লুলেস মামলার রহস্য উন্মোচিত হয়।
তদন্তেপ্রাপ্ত ঘাতক আসামী রাপ্রু মারমা (৩২), পিতা- রেদাব্দ মারমা, সাং- সৌয়ারাপাড়া, থানা-সদর, জেলা-খাগড়াছড়িকে গ্রেফতার করা হয়।
মূলতঃ ভিকটিম সুজন্ত ত্রিপুরা প্রকাশ সুজন (২৪) ও ধৃত আসামী রাপ্রু মারমা (৩২) উভয়ে পেশায় অটোচালক এবং মাদকসেবী হিসেবে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল।
ভিকটিম সুজন্ত ত্রিপুরা প্রকাশ সুজন (২৪) নারী আসক্তি ছিলো বলে জানা যায়। হত্যাকান্ডের বেশ কিছুদিন পূর্বে তাদের মধ্যে বাজারে অটো ইজিবাইকের সিরিয়াল/লাইন নিয়ে বাকবিতন্ডা মারামারির ঘটনা ঘটে।
এরই ধারাবাহিকতায় উক্ত বিবাদের কারণে ধৃত আসামী রাপ্রু মারমা (৩২) সঙ্গীয় একজন সঙ্গে নিয়ে ভিকটিম সুজন্ত ত্রিপুরা প্রকাশ সুজন (২৪) হত্যাকান্ডের কয়েকদিন আগে যাদুরামপাড়ায় তাকে একা পেয়ে আক্রমণ করে।
উক্ত ঘটনায় উভয়ে আহত হয়।
একপর্যায়ে ধৃত আসামী রাপ্রু মারমা (৩২) ভিকটিম সুজন্ত ত্রিপুরা প্রকাশ সুজন (২৪) কে হত্যার হুমকি দেয়।
ধৃত আসামী রাপ্রু মারমাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ভিকটিম সুজন্ত ত্রিপুরা প্রকাশ সুজন (২৪) তার স্ত্রী গর্ভবতী হওয়ার পর থেকে ধৃত আসামীর স্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে।
খুনী রাপ্রু মারমা (৩২) ভিকটিমের পরিবারের সাথে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে আপোষ মিমাংশার চেষ্টা চালায়।
খুনে ঘটনার আপোষের বিষয়ে উক্ত আসামী ভিকটিম সুজনের স্ত্রী তথা মামলার অন্তসত্তা বাদীনিকে ১৫,০০০/-(পনেরো হাজার) টাকা ও পরবর্তীতে ভরণপোষন ও পারিবারিক খরচের জন্য মাসিক হিসেবে টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার দায় স্বীকার করেছে।
উল্লেখ্য, তার বিরুদ্ধে ১। খাগড়াছড়ি সদর থানার, এফআইআর নং-৪, তারিখ- ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮; জি আর নং-৫৯/১৮, তারিখ- ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮; ধারা- ৩০২/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০; ২। খাগড়াছড়ি সদর থানার, এফআইআর নং-১১, তারিখ- ২৭ জানুয়ারি, ২০১৮; জি আর নং-২৮/১৮, তারিখ- ২৮ জানুয়ারি, ২০১৮; ধারা- ১৪৩/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/৫০৬ পেনাল কোড-১৮৬০ চলমান রয়েছে।
৪ (ফেব্রুয়ারি)২০২৪ তারিখে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসমস্ত তথ্য সাংবাদিক দের জানান খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মুক্তা ধর পিপিএম (বার) ।
আসামীকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হবে।