আব্দুল মান্নান, স্টাফ রিপোর্টার খাগড়াছড়ি:
করোনার ধকলে বন্ধ হওয়া খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার অনগ্রসর জনপদ চইক্কাবিল কারিতাস প্রাথমিক বিদ্যালয়টি এলাকার সচেতন অভিভাবক ও পাড়া প্রধানের সহযোগিতা নতুন স্বপ্নে বাঁশের বেড়া,ঘেরায় চালু হলেও আসবাবপত্র ও অর্থ সংকটে ফের পাঠদান ব্যাহতের আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা!
উপজেলার সদর মানিকছড়ি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চইক্কাবিল হতদরিদ্র ও ক্ষুদ্র নৃ গোষ্টি অধ্যুষিত অনগ্রসর জনপদ। উন্নয়ন বা শিক্ষা কোন আলোই এখানে সেভাবে পড়েনি! ৭০-৭৫ পরিবার বিশিষ্ট এলাকায় ২০০৩ সালে কারিতাসের অর্থায়নে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু হলেও করোনার ধকলে ২০২০ সালে সেটি বন্ধ হয়ে যায়! এর পর সেখানে আর জ্ঞানের আলো জ্বলে উঠেনি।
সম্প্রতি ওয়ার্ড মেম্বার অংগ্য মারমা ও পাড়া প্রধান উহ্লাঅং মারমার উদ্যোগে অভিভাবকদের সহযোগিতায় বাঁশের ঘেরা, বেড়া ও টিনের ছাউনিতে ২ কক্ষ বিশিষ্ট একটি ঘর দাঁড় করিয়ে পাঠদান শুরু করা হয়। ২০২৪ সালে প্রাক-প্রাথমিক থেকে -৪র্থ শ্রেণীতে ভর্তি হয় ৪৫ জন শিক্ষার্থী। কিন্তু আসবাবপত্র সংকটে শিক্ষার্থীরা পাঠদান করতে কষ্ট হচ্ছে ! খন্ডকালীণ শিক্ষক রয়েছেন ২ জন।
সম্প্রতি স্কুলে গিয়ে দেখা গেছে, প্রাক প্রাথমিক, ১ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ছুটি শেষে তৃতীয়, চর্তুথ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা কেউ ক্লাসে আবার কেউ মাঠে ঘুরঘুর করছে! এ সময় শিক্ষক মংথৈ মারমা বলেন, টেবিলের অভাবে এক শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলাকালে অন্য শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরা মাঠে বসে থাকতে হয়! এভাবে পালা- বদল করে আমরা পাঠদান করাচ্ছি! অভিভাবদের আগ্রহ দেখে মেম্বার ও কার্বারীর সহযোগিতায় বন্ধ হওয়া স্কুলটি নতুন স্বপ্ন নিয়ে ফের চালু হলেও সংকট দূর হচ্ছে না। ফার্নিচার ও শিক্ষা উপকরণের অভাবে পাঠদান ব্যাহত! এসময় ৪র্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী সাচিংমং মারমা বলেন, টেবিল বেশি না থাকায় অনেক সময় ৪র্থ শ্রেণীর পড়া অবস্থায় তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্ররা মাঠে খেলাধূলা বা বসে থাকে। আবার ওরা ক্লাসে গেলে আমাদের (৪র্থ শ্রেণী) বাইরে বসে থাকতে হয়!
ইউপি সদস্য অংগ্য মারমা বলেন, করোনায় বন্ধ হয়ে যাওয়া কারিতাস স্কুলটি নতুন নামে( চইক্কাবিল বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়) নতুন স্বপ্নে আবার চালু করতে চাই। উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়ন সংস্থাগুলো এগিয়ে এলে অনগ্রসর এই জনপদে শিক্ষাবঞ্চিত শিশুরা জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হবে।