মো: আরিফুল ইসলাম, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:
বরই একটি সুস্বাদু ফল। দেখতেও আকর্ষণীয় এ ফলের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় বরই চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। এরই মধ্যে এ ফল চাষে সফলতাও পেয়েছেন অনেকেই। অল্প পুঁজি ও ঝুঁকি কম থাকায় মাটিরাঙ্গার বিভিন্ন জায়গায় বরই চাষ করে অনেকেই সফালতা পেয়েছেন।
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গাতে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে আপেলকুল, বাউকুল, বলসুন্দরী, ভারতসুন্দরীসহ নানা জাতের কুল চাষ। বাগান করে অনেকেই পেয়েছেন সফলতার সন্ধান। ফলন ভালো হওয়ায় আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় কৃষকদের মাঝেও। সরকারিভাবে প্রণোদনা ও সুযোগ সুবিধা পেলে পাহাড়ের উৎপাদিত কুল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাজারজাত করা সম্ভব।
পাহাড়ের মাটি বিভিন্ন রকমের ফল উৎপাদনের জন্য উপযোগী। এমন সম্ভাবনার হাত ধরে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার গোমতী এলাকায় মাহাবুব মেম্বার পাড়ায় দাদা নাতি মিলে গড়ে তুলেছেন শখের বরই বাগান। অনার্স পড়ুয়া ছাত্র মো: কেফায়েতুল ইসলাম খাগড়াছড়ির এক নার্সারি থেকে চার প্রজাতির ৮৫০টি কুলের চারা এনে বাগানে রোপণ করেন। চারা রোপণের বছর না পেরোতেই বাগানের বরই গাছে বাম্পার ফলন ধরেছে।
অনার্স পড়ুয়া ছাত্র কৃষি উদ্যেগক্তা মো: কেফায়েতুল ইসলাম জানান, তার বাবা খাগড়াছড়ির পানছড়িতে বড়ই বাগান দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ফলনের অগ্রগতি দেখে তামাক চাষিদের জমি লিজ না দিয়ে তার দাদুর সার্বিক সহযোগিতায় দাদুর কৃষি জমিতেই গড়ে তুলছেন নানা জাতের কুলের বাগান।
প্রায় ২ একর জমিতে বল সুন্দরী, ভারত সুন্দরী, বাউকুল, আপেল কুলসহ চার জাতের কুল চাষ করছেন তিনি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে কুলের ভালো ফলন হয়েছে। কুলের ভারে নুয়ে পড়ছে গাছগুলো। ওপরে ছাউনি আর চারপাশে বাঁশ ও তারকাঁটা দিয়ে ঘেরা হয়েছে। পাখি, কাঠবিড়ালি এবং বাঁদুর থেকে রক্ষা পেতে বিশেষ মাচা তৈরি করেন তিনি।
তিনি জানান, এই বাগানে চারপাশের বেড়া, ওপরের বিশেষ নেট ও জমি তৈরিসহ আনুষঙ্গিক কাজে ৮৫০টি বরই গাছ লাগাতে ৪লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু স্থায়ী খরচ রয়েছে যা পরের বছরগুলোতে আর লাগবে না। এই বছরে বিনিয়োগের টাকা তুলে আগামী ৭ থেকে ৮ বছরে এ লাভ অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছেন তিনি। লাভের পরিমাণ পরের বছরগুলোতে আরও বাড়বে বলেও আশাবাদী তিনি ।
কুল চাষে প্রণোদনা ও সরকারিভাবে সুযোগ সুবিধা না থাকলেও বাগানীদের মাঝে ফলের পরিচর্যা ও সংরক্ষণে মাঠ পর্যায়ে পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি বিভাগ। তামাক চাষ না করে বাণিজ্যিকভাবে বরই সহ মৌসুমি ফল ও শাকসবজি চাষাবাদ করা গেলে কৃষকরা লাভবান হবেন বলছেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসার মো: সবুজ আলী।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি বছর মাটিরাঙ্গা উপজেলায় ৩০ হেক্টর জমিতে কুলের আবাদ করা হয়েছে। যা গত বছর ২৫ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছিলো।