• বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৫১ অপরাহ্ন
শিরোনাম
মহালছড়ি বাজার একাদশ দলের জার্সি উন্মেচন অনুষ্ঠিত রোয়াংছড়ি সফরে নবাগত জেলা প্রশাসক বৈষম্যমূলক বদলি, লামার ৮৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ লামায় পর্যটন বিকাশে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে- জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দীঘিনালায় ভারতীয় চিনি জব্দ, আটক ২ দীঘিনালায় স্ত্রী’র পেটে লাথি মেরে গর্ভপাত, পাষান্ড স্বামী আটক সারে ছয় ঘন্টা পর দৌলতদিয়া পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু খাগড়াছড়িতে এন্টিমাইক্রোরিয়াল রেজিস্ট্যান্স সমস্যা প্রতিকার ও করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত নওগাঁয় তারুণ্যের উৎসব-২৫ উপলক্ষে বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত সিন্দুকছড়ি জোনে মাসিক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত লংগদুতে জামায়তের ত্রান ও শীতবস্ত্র বিতরণ চম্পাকুঁড়ি খেলাঘর আসর এর শীতবস্ত্র বিতরণ

মাটিরাঙ্গাতে লাল পিঁপড়ার ডিম বিক্রি করে চলে প্রায় শতাধিক মানুষের সংসার

মো: আরিফুল ইসলাম, খাগড়াছড়ি : / ২৭০ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : শুক্রবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৩

মো: আরিফুল ইসলাম, খাগড়াছড়ি :

বেঁচে থাকার জন্য কত বিচিত্র কাজই না করতে হয় মানুষকে। এরকমই ব্যতিক্রম এক পেশা লাল পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করা। আর এ পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহের পেশা থেকেই দুবেলা দুমুঠো খাবারের জোগাড় করছেন প্রায় শতাধিক মানুষ।

খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ে ঘুরে ঘুরে গোমতী ইউনিয় এর ৩নং ওয়ার্ড রঙমিয়া পাড়া সহ স্থানীয় শতাধিক মানুষ প্রায় একযুগ ধরে লাল পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করে তা মাছ শিকারিদের নিকট বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

বন জঙ্গলে কিংবা লোকালয়ে বিভিন্ন গাছ থেকে তারা সংগ্রহ করেন এ-সব পিঁপড়ার ডিম। তাও আবার লাল পিঁপড়ার ডিম। মাছ শিকারিদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উপাদান হচ্ছে লাল পিঁপড়ার ডিম। এসব ডিম সংগ্রহের পর তা বিক্রি করে যা উপার্জন হয়, তা দিয়েই চলে তাদের সংসার।

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) উপজেলার আঁকাবাকা পাহাড়ি মেঠোপথ ধরে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায় লাল পিঁপড়ের ডিম সংগ্রহ ও সংরক্ষণের কঠোর কর্মযজ্ঞ।

লাল পিঁপড়ের ডিম সংগ্রহকারীরা হাতে-হাতে লম্বা বাঁশ ও বাঁশের তৈরি ঝুড়ি নিয়ে প্রতিদিন সকাল হলেই বেরিয়ে পড়ে উপজেলার দূর দূরান্তের বিভিন্ন পাহাড়,পর্বত, বন- জঙ্গলে। সারাদিন লাল পিঁপড়ের ডিম সংগ্রহ করে তারা। এই ডিম বিক্রি করেই চলে তাদের জীবন জীবিকা ।

ডিম সংগ্রহকারী মো: জসীম উদ্দিন বলেন, পিঁপড়ের ডিম সংগ্রহ ও সংরক্ষণের কাজটি খুব সতর্কতার সাথে করতে হয়। কৃষিকাজের পাশাপাশি জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম হিসেবে একাজ বেছে নিয়েছি। সারাদিনে তিনি এক থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করতে পারেন। তিনি আরও বলেন, লাল পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করে পাইকারি দামে প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেন তারা। আর পিঁপড়ের ডিম বিক্রি করে যা টাকা পায় তাতেই চলে তাঁদের সংসার। সাধারণত মেহগনি, আম, লিচু, কনক ও কড়াইসহ দেশীয় গাছগুলোতে লাল পিঁপড়ার বাসা পাওয়া যায় বলেও জানান তিনি।

লাল পিঁপড়ের ডিম সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে পাইকারি দামে এসব ডিম ক্রয় করেন স্থানীয় তিন ব্যবসায়ী। তারা হলেন একই এলাকার মো: জাহাঙ্গীর হোসেন, মো: জাকির মিয়া ও মো: মনির হোসেন। তারা জানান, প্রায় ১যুগ ধরে লাল পিঁপড়ের ডিম সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে ডিম কিনে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করেন তারা। তাদের তিনজনের অধীনে প্রায় শতাধিক মানুষ বিচিত্র এ কর্মসংস্থান তৈরি করে নিয়েছে।মূলত মাছের খামারি ও সৌখিন মাছ শিকারীরা এই ডিম কিনে থাকেন। চট্টগ্রামে লাল পিঁপড়ের ডিমের প্রচুর চাহিদা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তারা।

মো. জাকির হোসেন নামে অপর ব্যবসায়ী বলেন, প্রতিদিন ১৮/২০জন তাকে পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করে দেন। ২/৩ দিন পরপর চট্টগ্রাম, ফেনী ও কুমিল্লা থেকে ব্যবসায়ীরা এসে তাঁর কাছ থেকে ডিম কিনে নিয়ে যান।

একসময় এ পেশায় লোকজন কম ছিল বলে তখন প্রচুর ডিম পাওয়া যেত। এ পেশায় লোকজন বাড়লেও নির্বিচারে দেশীয় গাছ কাটার কারণে পিঁপড়ার বাসা কমে গেছে। নির্বিচারে দেশী গাছ কাটা বন্ধের দাবী জানিয়েছে বিচিত্র পেশার মানুষগুলো।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ