হাবিবুর রহমান, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে এক ছাত্রকে নির্যাতনের পর ছাড়পত্র (টিসি) দেওয়ার ঘটনায় প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক দোলন ও সহকারী শিক্ষক রেজাউল করিমকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। সোমবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী অঞ্চল কমলনগর আদালতের বিচারক তারেক আজিজ এ নির্দেশ দেন।
চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের নাজির ইয়াসিন আরাফাত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ছাত্রকে নির্যাতনের পর টিসি দেওয়ার ঘটনায় ওই দুই শিক্ষক উচ্চ আদালত (হাইকোর্ট) থেকে ৬ সপ্তাহের জামিনে ছিলেন। মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী অঞ্চল কমলনগর আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করেন। আদালতের বিচারক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার ফারুক কমলনগরের চরলরেন্স উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও রেজাউল একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
মামলার সূত্র জানায়, মামলার বাদী আহসান উল্যাহ উপজেলার চরলরেন্স ইউনিয়নের চরলরেন্স গ্রামের বাসিন্দা। তার ছেলে ইয়াছিন আরাফাত সজল চরলরেন্স উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। প্রতিদিনের মতো ১ জুন সকালে সজল বিদ্যালয়ে যায়। পরে সহকারী শিক্ষক রেজাউল তাকে প্রধান শিক্ষক দোলনের কক্ষে নিয়ে যান। এসময় বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতির কথা জানতে চাওয়া হয় তার কাছে। এতে সে চুপ করে থাকে। একপর্যায়ে শিক্ষক দোলন ও রেজাউল তাকে বেত দিয়ে বেধড়ক পেটায়। পরে তাকে বিদ্যালয় ত্যাগের ছাড়পত্র দিয়ে বের করে দেওয়া হয়। তার গালে, মাথায় ও পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন ছিল। সজলের বোনকে শিক্ষক দোলনের ভাতিজার সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এতে ১০ জুলাই আহসান উল্যাহ বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলি অঞ্চল কমলনগর আদালতে মামলা দায়ের করেন।
বাদীর আইনজীবী একে হুমায়ুন কবীর বলেন, মামলাটি আমলে নিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তারী পরোয়ানার নির্দেশ দেন আদালত। এরপরই আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন নেন। মেয়াদ শেষে তারা আত্মসমর্পন করে আদালতে জামিন আবেদন করেন। জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আদালত তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।