বাধ্যতামূলক ডিজিটাল নম্বর প্লেটের জন্য বিআরটিএ গত ১১ বছরে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা বাড়তি নিলেও কোনো সেবা বা সুবিধা দিতে পারেনি গাড়ি মালিকদের। ফলে চুরি-ছিনতাই বা গাড়ির অবৈধ ব্যবহারের মতো অপরাধ তাৎক্ষণিকভাবে ঠেকানোর যে প্রতিশ্রুতি বিআরটিএ দিয়েছিল তার বাস্তবায়ন নেই। বাড়তি টাকা দিয়েও সেবাবঞ্চিত হওয়ার কারণ হিসাবে পুলিশ আর বিআরটিএ’র সমন্বয়হীনতাকেই দুষছেন বিশ্লেষকেরা।
ইলেক্ট্রনিক্স চিপসযুক্ত ডিজিটাল নম্বর প্লেট এবং রাস্তায় আরএফআইডি প্রযুক্তির মেশিন বসিয়ে গাড়ি চুরি সনাক্তের প্রকল্প বিআরটিএ চালু করে ২০১২ সালের অক্টোবরে। এজন্য মোটর সাইকেলে ২ হাজার ২৬০ টাকা এবং ব্যক্তিগত গাড়িসহ অন্য যানবাহনের জন্য ৪ হাজার ৬২৮ টাকা করে বাড়তি ফিস নেওয়া হয়।
৫০ লাখেরও বেশি গাড়ি আর মোটর সাইকেল থেকে বিআরটিএ’র আয় হয় অন্তত দেড় হাজার কোটি টাকা। এই টাকায় ১০ জায়গায় বসে আরএফআইডি মেশিন। কিন্তু এই মেশিনের সঙ্গে ডিজিটাল নম্বর প্লেটের বেতার সংযোগ হলো না ১১ বছরেও। সরেজিমনে ঘুরে ১০ স্টেশনের কোনটিকে কার্যকর পাওয়া যায়নি।
তবে আরএফআইডি প্রযুক্তি কার্যকর নয় বলে মানতে নারাজ বিআরটিএ চেয়ারম্যান।
বিআরটিএর চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মাদ মজুমদার বলেন, আমাদের মতো দেশে এ ধরনের প্রযুক্তি কার্যকর হতে আরও সময় লাগবে।
ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মুনিবুর রহমান বলেন, ব্যবহার তো পরের কথা, এই ধরনের প্রযুক্তি হস্তান্তরই হয়নি এখনো।
১১ বছর ধরে টাকা নেয়ার পরও প্রকল্প বাস্তবায়ন না করার জন্য বিআরটিএকেই দূষছেন পরিবহন বিশ্লেষকরা।
বুয়েটের এআরআই ডিরেক্টর ড. মো. শামসুল হক বলেন, প্রযুক্তিটি বাস্তবায়ন করা গেলে গাড়ি চুরি কিংবা অবৈধ গাড়ি ব্যবহারের মতো অপরাধ কিছুটা কমানো যেত। এ ব্যাপারে বিআরটিএকে আরও তৎপর হওয়া উচিত।
মজার ব্যাপার, আগের ১০টি আরএফআইডি স্টেশন কোনো কাজে না লাগলেও নতুন করে আরও ১২টি বসানোর পরিকল্পনা করছে বিআরটিএ।