• শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
নদীর পাড়ে তামাক চাষ বন্ধে বিএটিবি’র কৃষক সমাবেশ আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের দাবিতে মানিকছড়িতে ইউপিডিএফের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ বান্দরবানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বই ও শিক্ষা উপকরণ উপহার প্রদান চাঁদার টাকা না দিলে হামলা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে -সন্ত্রাসী রকি গ্রুপ ১ যুগ পর মহালছড়ি গণতান্তিক উপায়ে বাজার ব্যবসায়ী কমিটি গঠন ওলামা বাজার মাদ্রাসার বিরুদ্ধে ফেসবুকে অপপ্রচারের প্রতিবাদে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সংবাদ সম্মেলন সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে কাপ্তাই সেনা জোনের প্রীতি ভোজ  পরিষদ ভবণ নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে মানিকছড়িতে সচেতন নাগরিক ফোরামের মানববন্ধন মাটিরাঙ্গায় প্রা‌ন্তিক কৃষক‌দে‌র মাঝে বিনামূ‌ল্যে সার ও বীজ বিতরণ চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতালে ২ দিনব্যাপী  দক্ষতা উন্নয়নের উপর কর্মশালা শুরু রাঙ্গামাটিতে ঘুষ-তদবির ছাড়া মেধার ভিত্তিতে ১৭ জন পেলেন পুলিশের চাকরি দাগনভূঞা সরকারি হাসপাতালে আস্থা ফিরেছে রোগীদের – ক্রমান্বয়ে বাড়ছে রোগী, কনসালটেন্ট ও জনবল সংকটে চরমে

যে বিদ্যালয়ে যেতে নৌকা-ভেলাই ভরসা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: / ১৮৭ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই, ২০২৩

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে রমনা মডেল ইউনিয়নে পূর্ব চর পাত্রখাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াতের সড়ক পথ না থাকায় বর্ষা বা বন্যায় কলাগাছের ভেলা ও ডিঙি নৌকাই একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিদ্যালয়টিতে যাওয়া আসায় এই ভোগান্তি চলে সারা বছর। ভোগান্তি দূর করতে চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় সড়ক তৈরির আশ্বাস দিয়েছেন শিক্ষা কর্মকর্তা আবু ছালেহ্ সরকার।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দুই তলা বিদ্যালয় ভবনটি মনোরম পরিবেশে হলেও কোনো যাতায়াতের রাস্তা নেই। শুষ্ক মৌসুমে অন্যের জমির আইল কিংবা ঝোঁপঝাড় দিয়ে চলাচল করা গেলেও ভোগান্তি বাড়ে বর্ষা মৌসুমে। বিদ্যালয়ের সামনের ছোট নদীর মতো নালা পাড়ি দিয়ে পৌঁছতে হয়। তখন চলাচলের একমাত্র ভরসা হয় কলাগাছের ভেলা কিংবা ডিঙি নৌকা। কখনো কখনো ভিজে যায় পরনের কাপড়সহ শিক্ষার্থীদের বই খাতা। অনেকে ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে এলেও বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই থাকেন অনুপস্থিত।

জানা গেছে, ১৯৮৮ সালে ৩৫ শতক জমির ওপর বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয়। এরপর ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। প্রায় ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে নির্মিত হয় দুই তলাবিশিষ্ট একটি ভবন। ওই বিদ্যালয়ে ছয়জন শিক্ষক কর্মরত আছেন। শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ১২৪ জন। পূর্ব চর পাত্রখাতা গ্রামটিতে প্রবেশের জন্য সেতু ও পাকা সড়ক থাকলেও ওই বিদ্যালয়ে যাওয়ার কোনো পথ নেই। বিদ্যালয়-সংলগ্ন নালাটি শুষ্ক মৌসুমে পানি শুকিয়ে গেলে তা দিয়ে হেঁটে চলাচল করতে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল হওয়ায় অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানকে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে লেখাপড়া ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি ঝরে পড়ছে শিক্ষার্থীরা।

তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু ছালেহ্ সরকারের খামখেয়ালিপনা ও সঠিক তদারকি না থাকায় দীর্ঘদিনেও বিদ্যালয়টিতে যাতায়াতের রাস্তা নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে ভরসা পান না অভিভাবকরা। বিদ্যালয়ে আসার জন্য একটি রাস্তা ছিল। কিন্তু ২০২০ সালে করোনার সময় বিদ্যালয় বন্ধ থাকার সুযোগে এলাকার এক প্রভাবশালী তার বাড়ির সীমানা প্রাচীর দিয়েছেন। এতে করে বিদ্যালয়টিতে যাওয়ার পথটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এই স্থানীয় প্রশাসন অবগত থাকলেও কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।

কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, বন্যার সময় বিদ্যালয়ে আসতে খুবই কষ্ট হয়। নৌকা বা ভেলায় চড়ে তাদের বিদ্যালয়ে আসতে হয়। কখনো কখনো বইখাতা ভিজে যায়। তাছাড়া, নদীতে পড়ে যাওয়ার ভয়ও থাকে। মানুষের বাড়ির ভেতর দিয়ে গেলে গালাগালি করে, যেতে দেয় না।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিয়াজ বিন রানু বলেন, ‘শুষ্ক মৌসুমে বিভিন্নভাবে বিদ্যালয়ে আসা যায়। কিন্তু ভোগান্তি বাড়ে বর্ষা মৌসুমে। বিদ্যালয়ের চারপাশে তখন পানি জমে থাকে। ফলে বিদ্যালয়ের সামনে নালাটি পার হয়ে আসতে হয়। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অবগত করা হলেও কোনো প্রতিকার পাইনি। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকরা বিপাকে পড়েছেন। এ অবস্থায় ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যাও দিন দিন কমে যাচ্ছে।’

বিদ্যালয়ের সভাপতি মর্জিনা বেগম বলেন, ‘বিদ্যালয়ে যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় শিক্ষার্থীরা অন্য বিদ্যালয়ে চলে যাচ্ছে। দ্রুত রাস্তা নির্মাণ করা না হলে বাকি শিক্ষার্থীদের ধরে রাখা সম্ভব হবে না। কারণ ঝুঁঁকি নিয়ে অভিভাবকরা সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে চায় না।’

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু ছালেহ্ সরকার জানান, শুকনো মৌসুমে রমনা মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাস্তাটি তৈরি করে দেবার আশ্বাস দেন।

পার্বত্যকন্ঠ নিউজ/এমএস 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ