সাধন সাহা জয়, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগর উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় মহর্ষি মনোমোহন দত্তের ম্যুরাল উদ্বোধন করা হয়েছে।
সাধক কবি মনোমোহন দত্তের জন্মস্থান সাতমোড়া আনন্দ আশ্রমে এই ম্যুরাল নির্মিত হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার একরামুল ছিদ্দিক আজ সোমবার (২৬ জুন) ম্যুরালটির উদ্বোধন করেন। পরে আনন্দ আশ্রম কমিটির আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন সাতমোড়া আনন্দ আশ্রমের সভাপতি শঙ্করী দত্ত।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত উপজেলা নির্বাহী অফিসার একরামুল ছিদ্দিক।
সাপ্তাহিক নবীনগর পত্রিকার সম্পাদক আব্বাস উদ্দিন হেলালের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতমোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন আহমেদ। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন নবীনগর প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা আবু কামাল খন্দকার, স্বরুপ রতন দত্ত, নবীনগর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মাহাবুব আলম লিটন, সাপ্তাহিক মলয়ার সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন শান্তি, পীযুষ কান্তি আচার্য।
উপস্থিত বক্তারা এবং স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, মনমোহন দত্ত ছিলেন মলয়া সংগীতের জনক, মরমী সাধক,মাইজভাণ্ডারী গানের গীতিকার, কবি, বাউল, সমাজ সংস্কারক ও অসংখ্য অসাধারণ গানের গীতিকার, সুরকার ও গায়ক। তিনি মনোমোহন সাধু নামেই অধিক পরিচিত ছিলেন। মনমোহন দত্তের লেখা গানগুলো সুর দিয়েছেন ওস্তাদ আলাউদ্দীন খাঁ এর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা আফতাবউদ্দিন খাঁ।
মলয়া সঙ্গীতের প্রবক্তা মহর্ষি মনোমোহন দত্ত। সঙ্গীতজ্ঞ এই মহান সাধক-কবি জন্মগ্রহণ করেন (১২৮৪ বাংলার ১০ মাঘ) ১৮৭৭ সালে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার ছায়া- সুনিবিড় সাতমোড়া গ্রামে।
মনোমোহন দত্তের পূর্বপুরুষ ঢাকা সোনারগাঁয়ের জমিদার রাজবল্লভ দত্ত। জমিদারীর মোহকে পাশ কাটিয়ে, চলে আসেন তিনি সাতমোড়া গ্রামে। রাজবল্লভের পুত্র বৈদ্যনাথ দত্ত। তিনি ছিলেন সঙ্গীতের সমঝদার ও শ্যামা সঙ্গীতের রচয়িতা। বৈদ্যনাথের পুত্র পদ্মনাথ দত্ত। তিনি পেশায় ছিলেন কবিরাজ, কিন্তু অধ্যাত্মবাদে সমৰ্পিত প্ৰাণ।
লোকশ্রুতি রয়েছে যে, তিনি মৃত্যুর এক সপ্তাহ পূর্বেই নিজের মৃত্যুর দিন-ক্ষণ বলে গিয়েছিলেন। এই পদ্মনাথ দত্তের জেষ্ট্য পুত্রই হলেন মহর্ষি মনোমোহন দত্ত। তাঁর জন্ম (১২৮৪ বাংলা সালের ১০ মাঘ) ১৮৭৭ সালে এবং মৃত্যু (১৩১৬ বাংলা সালের ২০ আশ্বিন) ১৯০৯ সালে। বেঁচে ছিলেন যাত্র ৩১ বছর ৮ মাস ১০ দিন।
ক্ষণজন্মা এই ঋত্বিক কবি তাঁর অল্পায়ু-জীবনে যে সৃষ্টিকর্ম ও সাধনার চিহ্ন রেখে গেছেন- তা চিরকালের সম্পদ ও পাথেয় হয়ে থাকবে।