খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা ঊপজেলায় ধর্ম মন্ত্রনালয়ের আওতাধীন ইসলামিক ফাউণ্ডেশন কর্তৃক নির্মিত মাটিরাঙ্গ মডেল মসজিদের ইমাম নিয়োগে নিয়োগ বোর্ডের বিরুদ্ধে নিয়োগ নীতিমালা উপেক্ষা সহ সেচছাচারিতার অভিযোগ ঊঠেছে।
বৃহস্পতিবার গত ১৫ জুন ২০২৩ তারিখে মাটিরাঙ্গা উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ডূমি) এর কার্যালয়ে তার সার্বিক সমন্বয় ও উপস্থিতিতে এই নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
জানা গেছে, ইমাম, মোয়াজ্জেম ও খাদেম নিয়োগ সংক্রান্ত কার্যক্রমে সরকারি নির্দেশনা যথাযথ বাস্তবায়ন করা জরুরী থাকলেও বাস্তবচিত্র ছিল ভিন্ন।
রহস্যজনক কারনে শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাই-বাছাইয়ে নেয়া হয়নি কাগজ-কলমের কোন লিখিত পরীক্ষা।
পরীক্ষায় অংশগ্রহনকারীদের সূত্রে জানা গেছে, শুধুমাত্র মৌখিক পরীক্ষা নিয়েই নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল চুড়ান্ত করা হয়েছে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা, সার্টিফিকেট যাচাই, কোরআন তিলাওয়াত এর শুদ্ধতা যাচাইয়ের পর্ব ও হাফেজদের পরীক্ষায় রাখা হয়নি কোরআনের এক্সপার্ট ( বিজ্ঞ হাফেজ)।
এ ছাড়াও স্বচ্ছতা,, জবাবদিহিতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রেখে পরিছন্ন পদ্ধতি অবলম্বনের মাধ্যমে পরীক্ষা না নেয়ার অভিযোগ রয়েছে পরীক্ষার্থী, মুসল্লী সহ স্থানীয় এলাকাবাসীর।
একজন ইমাম হিসেবে যিনি কোরআন এর তাফসীরের মাধ্যমে ধর্মপ্রাণ মুসল্লীদের ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান দান করবেন তার ধর্মীয় জ্ঞানের গভীরতা যাচাই-বাছাই করার জন্য ছিলো না কোন বুজুর্গ আলেম।
নিয়োগ প্রাপ্ত ব্যক্তি শিক্ষাগত যোগ্যতায় হাফেজ, মুফতী মুহাদ্দিস এবং আরবিতে কথা ও ঊপস্থিত আরবিতে খূতবা পাঠ করতে পরেন কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। এ ছাড়াও অভিজ্ঞতা সনদে যে প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা ঊল্লেখ করা হয়েছে সেখানে তিনি ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেননি বলেও অভিযোগ রয়েছে।
নিয়োগ বোর্ডের কার্যক্রম চলাকালে সদস্য মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মোঃ শামছুল হক অনুপস্থিত ছিলেন।
নীতিমালার তোয়াক্কা না করে তার পক্ষে স্বপ্রনোদিত হয়ে প্রধান উপদেষ্টা নিজেই অনুপস্থিত ব্যক্তির জায়গায় নম্বর দেয়ার অভিযোগ রয়েছে । যা সরাসরি নিয়োগ বিধিমালা লঙ্ঘন।
এ বিষয়ে নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব ও মাটিরাঙ্গা ঊপজেলা ইসলামি ফাউন্ডেশনের ফিল্ড সুপারভাইজার মো: আল আমিন এর সাথে মুঠোফোনে ইমাম নিয়োগের চলমান বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি সভাপতির সাথে কথা বলার জন্য অনুরোধ জানিয়ে, ফোনের লাইন কেটে দেন কথা শেষ করার শিষ্ঠাচার না দেখিয়ে।
এ বিষয়ে নিয়োগ বোর্ডের সদস্য ও মাটিরাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: জাকারিয়া মুঠোফোনে লিখিত পরীক্ষা হয়নি জানিয়ে মৌখিক পরীক্ষায় যিনি সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন তাকেই নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেন । অারো কিছু জানতে চাইলে তিনি নিয়োগ বোর্ডের সভাপতির সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে নিয়োগ বোর্ডের সদস্য মুসল্লী প্রতিনিধি মোঃ অাবুল বাশার মিয়াজী জানান, লিখিত পরীক্ষা হয়নি। মৌখিক পরীক্ষা হয়েছে তবে পরীক্ষা শেষে তার নিকট কোন মন্তব্য নেয়া হয়নি। এ সময় নিয়োগ বোর্ডে কোন বিষয় ভিত্তিক এক্সপার্ট ছিল না বলেও তিনি জানান।
এ বিষয়ে নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি) এর সাথে মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ফোনের অপর প্রান্ত থেকে কোন সাড়া পওয়া যায়নি।
অন্যদিকে এলাকাবাসীরা বিষয় ভিত্তিক এক্সপার্ট দিয়ে যাচাই বাছাই করে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা গ্রহন শেষে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে পুনঃ নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহনের জোর দাবি জানান।
ঊল্লেখ্য যে, খাগড়াছড়ি ও বাঘাইছড়ি মডেল মসজিদের ইমাম নিয়োগ পদ্ধতি ছিল এলাকার বিভিন্ন অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ইমাম ও ওলামা এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তার উপস্থিতিতে লিখিত ও মৌখিক।
পার্বত্যকন্ঠ নিউজ/এমএস