ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরের পৌর এলাকার কোনাঘাট মোড়ে ১নং সরকারি খাস খতিয়ানের জায়গা বালু ব্যবসায়ীদের নিকট ভাড়া দিয়ে অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই সহোদর ভাইয়ের বিরুদ্ধে।
তথ্য সূত্রে জানা যায়,উপজেলার পৌর এলাকার ৭ নং ওয়াড নারায়নপুরের মৃত মঙ্গল মিয়ার দুই ছেলে আবুল কাশেম ও শাহ আলম দীর্ঘদিন ধরে তাদের বাড়ির পাশের বি এস ৪৫৭১ ও ৪৫৭৩ দাগের বুড়ি নদীর মোহনা ও তৎসংলগ্ন খাল সুকৌশলে ভরাটের উদ্দেশ্যে নিজেরা বালু ব্যবসা শুরু করে। পরে ঐ ভরাটকৃত জায়গা দুই সহোদর ভাইয়ের একজন আবুল কাসেম পাশের উপজেলা মুরাদনগরের দৌলতপুর গ্রামের বালু ব্যবসায়ি আবদুল হোসেন কাছ থেকে ১৬ লক্ষ টাকা অগ্রীম ও মাসিক ভাড়া ১০ হাজার টাকা, নারায়নপুর গ্রামের মলিন্দ্র দেবনাথ থেকে ১২ লক্ষ টাকা অগ্রীম ও মাসিক ভাড়া ৮ হাজার টাকা এবং অপর সহোদর ভাই শাহ আলম শ্রীরামপুর গ্রামের আবুল হোসেন থেকে ১০ লক্ষ টাকা অগ্রীম ও মাসিক ভাড়া ৮ হাজার টাকা,দৌলতপুরের আবদুল হোসেন থেকে ১২ লক্ষ টাকা অগ্রীম ও মাসিক ভাড়া ১৫ হাজার টাকা আদায়ের মাধ্যমে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।এছাড়াও আবুল কাশেম সড়ক ও জনপথের জায়গায় দখল করে চালিয়ে যাচ্ছে সেনেটারির রমরমা ব্যবসা,তাদের মূল উদ্দেশ্য সড়ক ও জনপথ তাদের রাস্তা প্রসার করার সময় রাস্তার পাশে থাকা দোকানপাট উচ্ছেদ করলে তারা তাদের দখল করা নদীর ও খালের জায়গায় বহুতল ভবন করে সুপার মার্কেট করবে। ইতিপূর্বে তারা সরকারি জায়গা অবৈধভাবে দখল করে স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করায় নবীনগর সহকারী কমিশনার ভূমি কতৃক জেলা জরিমানা করা হয় তাদের । কিন্তু কোন কিছু কে তোয়াক্কা না করে প্রশাসনের নাকের ডগায় পূনরায় ঐ দুই সহোদর ভাই সরকারি খাস খতিয়ানের জায়গায় স্থায়ী স্থাপনা ইমারত নির্মাণ কাজ করে চলেছে।গনমাধ্যম কর্মীরা বিষয়টির তথ্য সংগ্রহে সরজমিনে গেলে তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে নদীর মোহনা ও খাল ভাড়া নেয়া আবদুল হোসেন, মলিন্দ্র দেবনাথ, আবুল হোসেন তাদের নিজ নিজ গদি তালাবদ্ধ করে অন্যত্রে চলে যায়, আবুল হোসেনের মুঠোফোনে পরপর ৩ দিন ফোন করে পাওয়া যায়নি এমনকি তাকে তার গদিতেও পাওয়া যায়নি। পরে আবুল কাশেম ও শাহ আলম কাছ থেকে নদীর মোহনা ভাড়া নেয়া বালু ব্যবসায়ি আবদুল হোসেনের মুঠোফোনে ফোন করলে তিনি প্রথম বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে জনৈক এক ব্যক্তির নিকট থেকে ভাড়া নেয়ার কথা স্বীকার করে, পরোক্ষণে তিনি কাশেমের কর্মচারি পরিচয় দিয়ে জানান এসব বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না সব আবুল কাশেম জানেন বলে মুঠোফোন বন্ধ করে দেয় ।
এবিষয়ে অপর ভাড়াটিয়া ইট- বালু ব্যবসায়ি মলিন্দ্র দেবনাথ জানান, তিনি এই জায়গায় ব্যবসা করার জন্য আবুল কাশেম কে ১২ লক্ষ টাকা চুক্তিনামা করে দিয়েছে,এর ভিত্তিতে সে ২০১৯ সাল থেকে ব্যবসা করে আসছে।
১নং সরকারি খাস খতিয়ানের নদীর মোহনা ও খাল ভাড়া দেয়া আবুল কাশেম তার কাছে সকল কাগজ পত্র রয়েছে জানিয়ে কাগজপত্র দেখাতে না পেরে জানান, এগুলো তাদের ৩০/৪০ পূর্বের খরিদা সূত্রের মালিকানা জায়গা, ২০০২ সাল থেকে সরকার খাজনা নেয়া বন্ধ করে দেয়ায় উচ্চ আদালত তিনি রীট করেছে এবং এই রীটের রোল তাদের পক্ষে এসেছে। আর অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে আরো জানান,১২ লাখ টাকার বিনিময়ে মলিন্দ্র কে ৫/৬ শতক জায়গা ভাড়া দিয়েছে পরোক্ষণে আবার ১০/২০ শতক জায়গা ভাড়া দেয়ার কথা বলেন। আর তার ভাই শাহ আলম পাশের ২০/৩০ শতক জায়গা ৩ লাখ টাকা ভাড়া দিয়েছে বলে জানান।
এবিষয়ে নবীনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মাহমুদা জাহান জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পার্বত্যকন্ঠ নিউজ/এমএস