রাঙামাটির নানিয়ারচরে রাজগিরি বন বিহারে উৎসবমূখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে ১২তম শুভ দানোত্তম কঠিন চীবর দান সম্পন্ন হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে দু’দিন ব্যাপি এই শুভ দানোত্তম কঠিন চীবর দান, বুদ্ধ মূর্তি দান, সঙ্ঘ দান, অষ্ট পরিষ্কার দান, কল্পতরু দানসহ নানাবিধ দান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা।
অনুষ্ঠান মঞ্চে প্রধান ভিক্ষু হিসেবে উপবিষ্ট ছিলেন, রত্নাংকুর বন বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ বিশুদ্ধানন্দ মহাস্থবির, শ্রীমৎ বিমলানন্দ মহাস্থবির, শ্রীমৎ জ্ঞানপ্রিয় মহাস্থবির, শ্রীমৎ দেবানন্দ মহাস্থবির,শ্রীমৎ ধর্মবোধী মহাস্থবির, রাজগিরি বন বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ সুমনালঙ্কার মহাস্থবিরসহ বিভিন্ন বিহারে থেকে আমন্ত্রিত ভিক্ষুসঙ্ঘ ও শিষ্যবৃন্দ।
ভিক্ষু সঙ্ঘের উপস্থিতিতে ত্রিশরণ সহ পঞ্চশীল প্রার্থনা করেন রিপা চাকমা এবং দেশনা প্রদান করেন রত্নাংকুর বন বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ বিশুদ্ধানন্দ মহাস্থবির।এসময় দেব মনুষ্য হিত সুখ মঙ্গলার্থে ভিক্ষু সঙ্ঘরা করণীয় মৈত্রী সুত্র পাঠ করেন।
অনুষ্ঠানে ভিক্ষু সঙ্ঘের প্রধান শ্রীমৎ বিশুদ্ধানন্দ মহাস্থবির ও শ্রীমৎ জ্ঞানপ্রিয় মহাস্থবির ভান্তেকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা। এসময় প্রধান অতিথি নিখিল কুমার চাকমাকে সম্মাননা ক্রেস্ট দিয়ে বরণ করে নেন রাজগিরি বন বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি সুবোধ জ্যোতি চাকমা।
এসময় নানিয়ারচর জোনের উপ-অধিনায়ক পারভেজ রহমান, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নিখিল কুমার ও বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি সুবোধ জ্যোতি চাকমাসহ অনেকেই বক্তব্য রাখেন।
বক্তব্যে নিখিল কুমার বলেন, পূজনীয় ভিক্ষু সঙ্ঘের কারণে আজ আমরা দানোত্তম কঠিন চীবর দানে অংশগ্রহণ করতে পারছি। দেখতে দেখতে ১২টি বছর পার হয়ে যাচ্ছে আমরা এই বিহারে দানোত্তম চীবর দান উদযাপন করছি।
তিনি আরো বলেন, এত উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আজ আমরা এই চীবর দান উৎসব পালন করতে পারছি কারণ সরকার ক্ষুদ্র জাতি গোষ্ঠির প্রতি আন্তরিক। বৌদ্ধ বিহার, বৌদ্ধমূর্তি ও বৌদ্ধ ধর্মের কল্যাণে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে সরকার। শুধু বৌদ্ধ মন্দির নয় মসজিদ ও নির্মাণ করা হচ্ছে এসব এলাকায়।
রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট ও ধর্মীয় নানা প্রতিষ্ঠান তৈরী করছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন পার্বত্যাঞ্চলের উন্নয়নে। এর আগেও প্রধানমন্ত্রী রাঙামাটি জেলা পরিষদের দায়িত্ব দিয়েছেন। তার আন্তরিকতায় আজ আমি এই সম্মানজনক চেয়ারে।
তিনি এসময় বৌদ্ধ সঙ্ঘের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য আশির্বাদ কামনা ও তার দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
বুদ্ধের অমৃতবানী দেশনা প্রদানকালে বিশুদ্ধানন্দ মহাস্থবির ভান্তে বলেন, ভক্তরা পঞ্চশীল পালন, অষ্ট পরিষ্কার দান, সঙ্ঘ দানসহ দানোত্তম চীবর দানের ফলে নির্মাণ লাভ করবে। তবে প্রত্যেক দান শ্রদ্ধা ও অন্তর থেকে করতে হবে। পৃথিবীর সকল দান থেকে উত্তম দান হচ্ছে কঠিন চীবর দান। সঠিক নিয়মে এই দান করবে সে অবশ্যই নির্মাণ লাভ করবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তুষিত চাকমা, থানার ওসি সুজন হালদার, রাজগিরি বন বিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তপন দেওয়ান সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।