হাবিব আল মাহমুদ বান্দরবন :
‘সিসা দূষণ বন্ধ হলে, বাড়বে শিশু বুদ্ধি-বলে’ স্লোগানকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক সিসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ (২০-২৬ অক্টোবর) উপলক্ষে বান্দরবানে র্যালি, মানববন্ধন ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে জেলা শহরের বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে ইউনিসেফের সহায়তায় ইয়ুথনেট গ্লোবাল ও পিওর আর্থ বাংলাদেশ আয়োজিত ঘণ্টাব্যাপী এ র্যালী ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়।
ইয়ুথনেট বান্দরবান টিমের সদস্য রুমানা প্রিয়ার সঞ্চালনায় আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন- বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ রেজাউল, বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সিরাজুল ইসলাম, ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের বিভাগীয় সমন্বয়ক সাজ্জাদ হোসাইন এবং বান্দরবান জেলা সমন্বয়ক হাবিব আল মাহমুদসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
এসময় ইয়ুথনেটের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোঃ আলীম উদ্দিন, ইমদাদুল হক মিলন, নাহিদা আক্তার, সিদরাতুল মুনতাহা, আখি আক্তার, মহিউদ্দিন হোসেন, আশরাফুল ইসলামসহ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বিশ্বে সর্বোচ্চ সিসা দূষিত দেশের তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে থাকা বাংলাদেশের মানুষদের রক্তে মাত্রাতিরিক্ত সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। গবেষণায় দেখা যায়, প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ শিশু অর্থাৎ দেশের প্রায় ৬০ শতাংশ শিশুর রক্তে উচ্চ মাত্রায় সিসা আছে। সিসা বিষক্রিয়ার শিকার হলে শিশুদের বুদ্ধি কমে যায়, পড়ালেখায় পিছিয়ে পরে, মনোযোগে সমস্যা হয়, আচরণগত সমস্যা যেমন মেজাজ খিটখিটে, উচ্ছৃঙ্খলতা দেখা যায়।
সিসা দূষণের কারণে হৃদরোগে বছরে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ মারা যাচ্ছে। গর্ভবতী নারীদের রক্তে সিসার উপস্থিতি গর্ভপাত, মৃত সন্তান প্রসবসহ নানা ঝুঁকির সৃষ্টি করছে। বুদ্ধিমত্তা হ্রাস ও হৃদরোগে মৃত্যুর ফলে দেশের আর্থিক ক্ষতি হয় প্রায় ২৮ হাজার ৬৩৩ মিলিয়ন আমেরিকান ডলার। এই আর্থিক ক্ষতির কারণে দেশে বছরে ৬ থেকে ৯ শতাংশ পর্যন্ত জিডিপি ঘাটতি হয়। তাই সিসার বিষক্রিয়া প্রতিরোধে সরকার-নীতিনির্ধারণী মহলকে আইন ও নীতিমালার যথাযথ প্রয়োগ করে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়াও সর্বস্তরে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
এ সময় অংশগ্রহণকারীরা সিসা দূষণ প্রতিরোধে ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড বহন করেন এবং ‘সিসা দূষণ প্রতিরোধে, আমরা আছি একসাথে’ স্লোগানে মুখরিত ছিলেন। পরে বিভিন্ন দোকান ও পথচারীদের মাঝে সিসা দূষণ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য লিফলেট ও স্টিকার বিতরণ করা হয়।