রাঙামাটি শহরের রাণী দয়াময়ী স্কুলের প্রধান শিক্ষক রণতোষ মল্লিকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আজ ৮ সেপ্টেম্বর রবিবার সকাল থেকে স্কুলের গেইটের সামনে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে ব্যানার, ফ্যাষ্টুন নিয়ে। এসময় সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করে প্রধান শিক্ষকে বহাল রাখার দাবিতে স্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীর বলেন,নিজেদের পছন্দের শিক্ষককে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসাতে সাবেক গেরিলা নেতা সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পাহাড়ের আঞ্চলিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি-জেএসএস কর্তৃক রাঙামাটি পার্বত্য জেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাণী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক রণতোষ মল্লিককে অপসারণের পাঁয়াতারা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে রাঙামাটি জেলা সদরের স্কুল পড়ুয়া পাহাড়ি- বাঙ্গালী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
সম্প্রতি বিদ্যালয়ের জেএসএস পন্থি এক উপজাতি শিক্ষক কর্তৃক বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ানো ও বাঙ্গালী শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার খাতায় ইচ্ছে করে কম নম্বর দেয়ার অভিযোগ উঠলে ওই শিক্ষককে ডেকে নিয়ে তিরষ্কার করে ভবিষ্যতে এমন কর্মকান্ড না করার বিষয়ে সাবধান করেন প্রধান শিক্ষক রণতোষ মল্লিক। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেএসএস এর সাথে মিলে রণতোষ মল্লিককে অপসারণ করে সেখানে জেএসএস সমর্থিত উপজাতি আরেক শিক্ষক আশুতোষ চাকমাকে বসাতে ষড়যন্ত্রের ছক আঁকেন অভিযুক্ত ওই শিক্ষক।
তার পরামর্শে আজ পাহাড়ি কিছু শিক্ষার্থীরা জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গন থেকে জেলা প্রশাসকের
কার্যালয় পর্যন্ত মিছিল করে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, একমাত্র বাঙ্গালি সম্প্রদায়ের হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই রণতোষ মল্লিককে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র ও কুৎসা রটাচ্ছে জেএসএস পন্থি শিক্ষকরা। সরকার পতনের সুযোগ নিয়ে এবার নতুন করে আবারো পুরনো সেই খেলায় মেতে উঠেছে চক্রটি।
শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, শিক্ষক রণতোষ মল্লিক রাণী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই তার প্রত্যক্ষ সহায়তায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান বেড়ে যায়। এই বিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড়ও তৈরী হয় তার সময়েই। রেড ক্রিসেন্ট, স্কাউটসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডেও তার অবদান রয়েছে।
জেএসএস এর রোষাণলে পড়ার ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যোলয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, ‘শুধুমাত্র বাঙ্গালি সম্প্রদায়ের হওয়ায় রণতোষ স্যারকে নিয়ে আশুতোষ চাকমাসহ নিরুপা দেওয়ানের মতো জেএসএস সন্ত্রাসীরা ষড়যন্ত্র করছে। উনাকে সরিয়ে দেয়া হলে বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হবে এবং বিদ্যালয়ে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হবে। প্রধান শিক্ষক রণতোষ মল্লিক যদি দুর্নীতি করতো, অনিয়ম করতো তাহলে সকলে মিলে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতো, কিন্তু প্রধান শিক্ষককে সরাতে আন্দোলন করছে পাহাড়ি কিছু শিক্ষার্থী। আসলে রণতোষ মল্লিককে বাঙালি বিবেচনায় ষড়যন্ত্র করছে তার কারণে এখানে শিক্ষার্থীরা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে। সত্যিকার অর্থে যদি অনিয়মের বিবেচনায় আন্দোলন করতো তাহলে পাহাড়ি-বাঙালি সবাই মিলে আন্দোলন করতো। কিন্তু এখানে বিষয়টি ভিন্ন। মূলত ষড়যন্ত্র করছে উগ্র পাহাড়ি কিছু ষড়যন্ত্রকারী।
চাকমা রাজা ব্যরিস্টার দেবাশীষ রায় সভাপতি হয়ে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য সামপ্রদায়িক কার্যকলাপের উদ্দেশ্য তাদের উসকানিতেই এসব ষড়যন্ত্রমুলক বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা চালাচ্ছে। রণতোষ মল্লিক একজন দক্ষ নীতিবান এবং শিক্ষা বান্ধব ভালো শিক্ষক। তিনি রাষ্ট্রীয় ভাবে নির্বাচিত জেলার সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক।
আরো চাঞ্চল্যকর বিষয় হলো যে
স্কুল পরিচালনা পরিষদ কার্যনিবাহী সংসদ রা মিলে জেলা প্রশাসক কে সভাপতি নির্বাচিত করায় চাকমা সার্কেল চীফ এই প্রধান শিক্ষক এর অপসারণের উদ্যোগ গ্রহন করে কারন প্রধান শিক্ষক ওনার অনৈতিক কাজে বাঁধা প্রদান করায় এই অপসারণ উদ্যোগ গ্রহন করেন।
আরো উল্লখ্য যে এসমস্ত কার্যকলাপে কোন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ছাত্র-ছাত্রী জড়িত নাই। যেহেতু কেন্দ্রীয় ভাবে নিষেধ আছে তাই আমরা রাঙামাটির বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে শিক্ষক অপসারণের নামে সাম্প্রদায়িক বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।