আল আমিন রনি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট:
সোমবার (৫ আগস্ট) শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলনের মুখে বাংলাদেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের গঠিত সরকারের পতন হয়। তখন রাজপথে বিজয় মিছিলে নিয়ে নেমে আসে দেশের সাধারণ মানুষ। কিন্তু এতে বিশৃঙ্খলা-অরাজকতা নেমে আসে রাজধানীসহ সারা দেশে। এসব অনিয়ম রোধে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আসেন শৃঙ্খলা ফেরাতে। বর্তমানে রাজধানীর সড়কসহ নানান জায়গায় শৃঙ্খলা আনতে কাজ করছেন তারা।
এর অংশ হিসেবে সারাদেশের বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখন কাজ করছেন বাজার নিয়ন্ত্রণে। দোকানে পণ্যের মূল্যতালিকা লাগানো, ট্রেড লাইসেন্স চেক করা, যৌক্তিক দামে পণ্য বিক্রি করা, নিজ দোকানের সামনে পরিচ্ছন্ন রাখা ও নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রি হচ্ছে কিনা, সব বিষয়ে নজরদারির কাজ করছেন তারা।
বাজারে শিক্ষার্থীদের এমন উপস্থিতিতে প্রশংসা জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতা উভয় পক্ষ। তবে কোনও কোনও বিক্রেতা জানিয়েছেন, কাঁচাবাজারে মূল্য নির্ধারণ করা কঠিন।
এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (৯ আগস্ট) সরেজমিনে গিয়ে রাজধানী নগরীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ও দ্রব্যমূল্যের তালিকা পর্যবেক্ষণ করেন ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। এতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটির মেয়ে শিক্ষার্থীরাও । ছেলেদের সাথে তাল মিলিয়ে তাদের যেন কোন ক্লান্তি নেই। উৎসাহের সাথে তারা কাজ করে যাচ্ছেন।
এদিন নগরীর মিরপুরসহ এর আশপাশের কাঁচা বাজার ঘুরে শিক্ষার্থীরা দোকানে টাঙানো মূল্য তালিকা ও সেই অনুযায়ী পণ্য বিক্রি হচ্ছে কিনা সেটি মনিটরিং করেন। এ সময় তারা বিক্রেতাদের বেশি দামে পণ্য বিক্রি না করার অনুরোধ জানান।
পাশপাশি শিক্ষার্থীরা দোকানীদের কাউকে চাঁদা না দিতেও পরামর্শ দেন। এই বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য বিক্রেতারা সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন। তারা সেটি পর্যবেক্ষণ করছেন।
বাজার নিয়ন্ত্রণের সময় ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের একজন মো: নূরণবী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা চাই দেশের সঙ্গে বাজারেও পরিবর্তন আসুক। আমরা চেষ্টা করছি দোকানিরা যাতে ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রি করে এবং পাইকারি বাজার থেকে যেনো কম টাকায় খুচরা বিক্রেতারা কম দামে পন্য ক্রয় করতে পারে সেটিও নিশ্চিত করেছি। তিনি আরো বলেন, খুচরা বিক্রেতাদের আমরা অনুরোধ করেছি, যাতে নিজেদের লস না করে পন্যের মূল্য একটা সমজতায় রেখে মানুষের কথা চিন্তা করে পন্য বিক্রি করে।
অপরদিকে বাজারে শিক্ষার্থীদের এই উপস্থিতি ইতিবাচক বলে তাদের প্রশংসা করেছেন বাজার করতে আসা সাধারণ মানুষ। তারা শিক্ষার্থীদের পাশে আছেন বলেও জানান।