স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বাজেট উত্থাপিত হয় ১৯৭২ সালের ৩০ জুন। ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে জাতীয় সংসদে প্রথমবারের মতো বাজেট পেশ করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের প্রথম বাজেটের পরিমাণ ছিল ৭৮৬ কোটি টাকা।
স্বাধীনতার পর প্রথম বাজেট তৈরি করেন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ। একে দেশের ‘ঐতিহাসিক বাজেট’ হিসেবে উল্লেখ করেন অর্থনীতিবিদরা। অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দেশ মুক্ত হওয়ার মাত্র ৬ মাস পর বাজেট উপস্থাপিত হয়। সে সময় সরকারের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত (রিজার্ভ) ছিল না। রাজস্ব আদায়ও সেভাবে হতো না। বিদেশি সাহায্যের বিষয়টিও অনিশ্চিত ছিল।
তিনি বলেন, সম্পদের অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের বিষয় ছিল। পাশাপাশি ভগ্ন অবকাঠামো যেমন- হাজার হাজার সেতু, কৃষি, শিল্প ইত্যাদি পুনর্গঠনের বিষয় ছিল। দেশের প্রথম বাজেট আকারে ছোট ছিল। তবে খুবই ‘গুণমানসম্পন্ন’ ছিল।
১৯৭২-১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে বাজেটকে ‘সমাজতন্ত্রের দিকে অগ্রসর হওয়ার বাজেট’ হিসেবে বর্ণনা করেন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অর্থনীতির অধ্যাপক এম এম আকাশ। তিনি বলেন, সেসময় পুনর্বাসনের বিষয় ছিল। মিশ্র অর্থনীতির মধ্যে রাষ্ট্রীয় খাতের প্রাধান্য রেখে বঙ্গবন্ধুর শাসনামলের বাজেট হয়েছে। তাতে বৈষম্য কমানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৈদেশিক প্রভুত্ব কমানো, স্বনির্ভর হওয়ার তাগিদ ছিল। তাজউদ্দীন আহমদ অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন মোট তিনটি বাজেট পেশ করেন। সেসব বাজেটে বরাদ্দ ছিল যথাক্রমে ৭৮৬ কোটি টাকা, ৯৯৫ কোটি টাকা এবং প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা।
স্বাধীনতার ৫৩ বছরের ব্যবধানে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজেট ঘোষণা করা হবে। আজ বিকেলে জাতীয় সংসদে এ বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত বাজেটের আকার হতে পারে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা, যা হবে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বাজেট প্রস্তাব।
প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য করছাড় সুবিধা পেতে পারে বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্র।