আব্দুল মান্নান, স্টাফ রিপোর্টার (খাগড়াছড়ি)
২০২২ সালের ১০ মার্চ খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) হিসেবে যোগদান করেন রক্তিম চৌধুরী। মাত্র ১ বছর ৯ মাসে তিনি উপজেলাকে মনের মাধুরি মিশিয়ে উন্নয়ন কর্মকান্ডসহ অবহেলিত, নিপীড়িত, নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে দাঁড়ায়ে গণমানুষের মন জয় করে নিয়েছেন! বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের দৌড়গোড়ায় পোঁছে তাদের মাথাগোঁজা ঠাঁই করে দিয়েছেন! যা এ যাবতকালে জনপ্রতিনিধিরাও এত নিঁখুত যাচাই বাছাই করে অবহেলিত এসব মানুষের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহার তুলে দিতে পারেনি। শুধু তাই নয় অর্থের অভাবে শিক্ষা, চিকিৎসায় বঞ্চিতরা সময়ে-অসময়ে ইউএনও’র দ্বারপ্রান্তে এসেও ওনার হাতের ছোঁয়ায় সমস্যার সমাধান পেয়েছেন। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বই, স্কুল -কলেজে ভর্তি, ফরমপিলাপ, স্কুল ড্রেস, অসহায় ও চিকিৎসাবঞ্চিত রোগীদের চিকিৎসা ও চিকিৎসাকালীণ পরিবারে খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করাসহ নানাবিধ সামাজিক ও মানবিক কাজ করে এই অল্প সময়ে একজন মানবিক ব্যক্তিত্বের পরিচয় দিতে সক্ষম হয়েছেন রক্তিম চৌধুরী! সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে তিনি রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালি উপজেলায় বদলী হয়েছেন।
এর ফলে ১০ ডিসেম্বর রোববার সন্ধ্যায় উপজেলা অফিসার্স ক্লাবে মানবিক, সামাজিক, ক্রীড়া সংগঠন, জনপ্রতিনিধি ও অফিসারদের উদ্যোগে আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে বিদায় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
এতে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন, জেলা পরিষদ সদস্য মো. মাঈন উদ্দীন, ইউপি চেয়ারম্যান মো. শফিকুর রহমান ফারুক, মো. আবদুর রহিম, মো. আবুল কালাম আজাদ, মো. আবদুল মতিনসহ অফিসারবৃন্দ, উপজেলার অন্তত ২০ টি মানবিক, সামাজিক ও ক্রীড়া সংগঠনের দায়িত্বশীল মানবিক কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সকলে এই বিদায়ী কর্মকর্তার মানবিক কাজের ভূয়সী প্রশংসায় উপস্থিত সকলে কেঁদে উঠেন!
এ সময় বিদায়ী ইউএনও রক্তিম চৌধুরীও কেঁদতে থাকেন। অশ্রুসিক্ত নয়নে রক্তিম চৌধুরী বলেন, এত অল্প সময়ে মানিকছড়িকে এত আপন করে নিতে পেরে আমি সত্যিই গর্বিত। এখানকার সকল মানুষ সৎ মানুষকে শ্রদ্ধা করে, মূল্যায়ণ করে! আমি জীবনে কখনও মানিকছড়িকে ভূলতে পারব না। এখানকার শত শত যুবকেরা মানবিক ও স্বেচ্ছাসেবীমূলক কাজে নিজেদের যেভাবে জড়িয়ে নেয় তা আজকাল বিরল! ওরাও মানিকছড়িকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে। এখন দরকার এসব নিঃস্বার্থ সেবকদের উৎসাহ দিয়ে অবহেলিত জনপদকে আলোকিত ও নিরক্ষরমুক্ত করার। পরে অশ্রুসিক্ত পরিবেশে বিদায় কর্মকর্তার হাতে
ক্রেস্ট ও উপহার সামগ্রী তুলে দেন অতিথি ও আয়োজকেরা।