আল আমিন রনি:
ছিন্নমূল পরিবারের হাজেরা বেগম। সঙ্গে তার ছোট ছেলে আব্দুল্লাহ, পুত্রবধূ ও নাত-নাতনি জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করলেও তাদের ভাগ্যে জোটেনি সরকারি বরাদ্দের ঘর।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সকালে গিয়ে দেখা যায়, হাজেরা বেগম ও তার পরিবারের জরাজীর্ণ বসবাসের চিত্র।
জানা যায়, উপজেলার হাফছড়ি ইউনিয়নের বড় পিলাক গ্রামের বাসিন্দা হাজেরা বেগম (৬৫) দাম্পত্য জীবনে ৪ সন্তানের জননী তিনি। এসব সন্তান রেখে ৫ বছর আগে মারা যান তার স্বামী নাসির উদ্দিন। স্ত্রী-সন্তান রেখে তিনি পরপারে গেলেও, রেখে যায়নি কোন সহায় সম্বল। অন্যর ভিটাতে জরাজীর্ণ একটি ঘরে দুর্যোগ আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটে হাজেরা বেগমের। তবে জীবিকার তাগিদে মানুষের বাড়িতে কাজ করেই কোনমতে সংসার চালাতে হচ্ছে তাকে। ছোট ছেলে আব্দুল্লাহকে ও ছেলের বউ, নাতিদের নিয়ে জীবনযুদ্ধ তার।দরিদ্রতার সঙ্গে যুদ্ধ করে খেয়ে না খেয়ে কোনমতে বেঁচে আছেন হাজেরা বেগম।
সুবিধা বঞ্চিত হাজেরা বেগম বলেন, অভাব অনটনের কারণে ঠিকমতো অন্ন-বস্ত্র নেই। এমনকি ঘরের মধ্যে ভালোভাবে ঘুমাব, সেটাও পারি না। কখন জানি উপরে পড়ে ঘরটি। এ ভয়ে ঘুম আসে না চোখে। সরকার যদি একটা ঘর দিতো, তাহলে শেষ বয়সে একটু শান্তিতে ঘুমানো যেতো।
অপরদিকে হাজেরা বেগমের ছোট ছেলে মোঃ আব্দুল্লাহ জানায়, জীবন-জীবিকার তাগিদে সারাদিন হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করতে হয়। কিন্ত ভাঙা ঘরে ঢুকে বেড়ে যায় দুশ্চিন্তা।
তিনি আরও বলেন, অনেকে সরকারি পাকা ঘর পাচ্ছেন। এ ঘর পাবার আশায় জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন কাজ হয়নি।
হাজেরা বেগমের বড় ছেলে মোঃ হাবিব উল্লাহ বলেন, ‘আমার বাবার সম্পত্তি বলতে কিছুই নেই। আমারও তেমন কোনো জায়গা জমি ও সম্পদ নেই। যা আছে তা দিয়ে নিজের সংসারই চলে না। তারপরও যতটুকু পারি ততটুকু দিয়ে মা ও ভাইকে সহযোগিতা করি। যদি আমার বৃদ্ধ মা একটি ঘর পেত তাহলে অন্তত মরার আগে শান্তি মত একটু ঘুমাতে পারতো।’
প্রতিবেশী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘হাজেরা বেগমের সম্পদ বলতে তার কিছুই নেই। মানুষের বাসায় কাজ করে বা গ্রামের মানুষজন তাকে যা সাহায্য সহযোগিতা করে, তা দিয়ে খেয়ে পড়ে দিন কাটান তিনি।