স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শব্দ সৈনিক ও প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী বুলবুল মহলানবীশ আর নেই।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) ভোরে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী লীনু বিল্লাহ। বুলবুল মহলানবীশ দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন অসুখে ভুগছিলেন।
অন্যদিকে, শিল্পী বুলবুল মহলানবীশের মৃত্যুর খবরের পর স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের আরও একজন শব্দ সৈনিক মারা গেলেন। তিনি হলেন স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপক, উপস্থাপক ও অন্যতম সংগঠক আশফাকুর রহমান খান।
একই দিনে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। এখন তার মরদেহ রাজধানীর মনিপুরীপাড়ার বাসায় রাখা হয়েছে। তার মৃত্যুর খবরটি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শিল্পী মনোয়ার হোসেন খান।
বুলবুল মহলানবীশ একাধারে কবি ও লেখক সংগীত, নাট্য ও আবৃত্তিশিল্পী হিসেবেও খ্যাতি লাভ করেছিলেন। পাশাপাশি তিনি টেলিভিশন-বেতার-মঞ্চে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিবিষয়ক বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতেন।
মহান এই শিল্পীর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শিল্পী তিমির নন্দী গণমাধ্যমে বলেন, সকালে ঘুম ভাঙল বুলবুল মহলানবীশ আপার মৃত্যুর খবর শুনে। এমন খবর শুনে আমি মানসিকভাবে আঘাত পেয়েছি। তাকে হারিয়ে আমরা আরও একজন সহযোদ্ধাকে হারালাম। আমি তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।
নজরুল সংগীতশিল্পী বুলবুল মহলানবীশ নজরুল সংগীত শিল্পী পরিষদের সহসভাপতি, সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্র একাডেমি। জাতীয় কবিতা পরিষদ, কচিকাঁচার মেল, উদীচী, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র শিল্পী পরিষদসহ বহু সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। বুলবুল মহলানবীশ সংগীতচর্চা ও লেখালেখির জন্য বিভিন্ন সম্মাননা ও পদকে ভূষিত হয়েছেন।
এদিকে, আশফাকুর রহমান খানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শিল্পী তিমির নন্দী বলেন, আজ সকালে ঘুম থেকে জেগে আমার প্রিয় দুইজন মানুষের মৃত্যুর সংবাদের খবর জেনে মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে আছে। তাদের হারিয়ে জাতি তার দুই শ্রেষ্ঠ সন্তান হারালো। দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য এই মহান ব্যক্তির অসামানন্য অবদানের কথা জাতি চিরদিন মনে রাখবে। আমি তাদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি।
জানা গেছে, রাজধানীর ফার্মগেট এলাকার বায়তুশ শরফ মসজিদে জুমার পর প্রয়াত আশফাকুর রহমান খানের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মরদেহ দাফনের জন্য মুন্সীগঞ্জের ষোলশহরের নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা- গার্ড অব অনার প্রদানের পরে দাফন করা হবে।
আশফাকুর রহমান খান দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে বাংলাদেশ বেতারে যোগদান করেন। বেতারের থেকে উপ-পরিচালক পদে উন্নিত হয়ে অবসরে যান।
পার্বত্যকন্ঠ নিউজ/এমএস